ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে লিবিয়া থেকে ইতালি পৌঁছাতে গিয়ে হাজার হাজার শরণার্থী শিশু নিপীড়নের শিকার হচ্ছে এবং তাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।
Published : 28 Feb 2017, 06:52 PM
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর প্রায় ২৬ হাজার শিশু পরিবারের কোনো সদস্য ছাড়াই ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে লিবিয়ার আশ্রয়শিবিরে মানবেতর জীবন যাপন করেছে।
অনেক শিশুই সেখানে গিয়ে চোরকারবারী এবং মানব পাচারকারীদের হাতে পড়ে সহিংসতা ও যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে বল ইউনিসেফের নতুন একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
কিন্তু গ্রেপ্তার ও বিতাড়িত হওয়ার ভয়ে নিপীড়নের ওইসব ঘটনা নিয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছে না।
লিবিয়ার শরণার্থী আটক শিবিরগুলোতে শিশুরা খাবার, পানি ও চিকিৎসার মারাত্মক অভাবে রয়েছে বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
বিবিসি জানায়, ‘শিশুদের মৃত্যু যাত্রা’ শিরোনামে ইউনিসেফের সর্বশেষ ওই প্রতিবেদনে লিবিয়া থেকে ইতালি যাত্রার পথে শিশুদের দাসত্ব, নৃশংসতা ও যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার গা ছমছমে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ উঠে এসেছে।
ইউনিসেফের উপ নির্বাহী পরিচালক জাস্টিন ফরসিথ বলেন, “ইউনিসেফের কর্মী ও আমার জন্য সবচেয়ে মর্মান্তিক বিষয় হচ্ছে….পথে শিশুদের সঙ্গে কি ঘটছে। ওই সব শিশুদের অনেকেই বর্বরতা ও ধর্ষণের শিকার হয়েছে, এমনকি তাদের হত্যাও করা হয়েছে।”
কামিস নামের ৯ বছর বয়সী মেয়েদের মত শরণার্থী শিশুরা যারা নাইজেরিয়া থেকে সাগর পাড়ি দেওয়ার সময় উদ্ধার পেয়ে লিবিয়ার সাবরাথা শহরের আটককেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে, তারা অভিজ্ঞাতার বর্ণনায় বলেছে, সেখানে প্রতিদিন তাদেরকে মারধোর করা হত। না ছিল কোনও পানি, না ছিল খাবার। অযথাই সহিংস আচরণ চলত। আর বেশিরভাগ আচরণই ছিল যৌন নিপীড়নমূলক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিবাসনের সময় প্রায় অর্ধেক নারী ও শিশুই যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে। অনেক অনেক জায়গায় অনেকবার তাদেরকে এ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।
বিশেষ করে সীমান্ত অঞ্চলগুলোতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। সীমান্ত পারাপার এলাকা এবং তল্লাশিকেন্দ্রগুলোতে যৌন সহিংসতা আরও ব্যাপক আকারে সংঘটিত হচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, “সাক্ষাৎকার নেওয়া শিশুদের প্রায় এক তৃতীয়াংশই লিবিয়ার আশ্রয়শিবিরে নিপীড়নের শিকার হওয়ার কথা বলেছে। তবে কারা তাদেরকে নিপীড়ন করেছে সে ব্যাপারে বেশিরভাগ শিশুই কিছু বলেনি।”