উপচে পড়া পানির চাপে বাঁধটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, এতে ওই এলাকার নিম্নাঞ্চলগুলোতে হঠাৎ বন্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা কর্তৃপক্ষের।
এ আশঙ্কায় স্থানীয় সময় রোববার ওই এলাকার তিনটি কাউন্টির বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের আদমশুমারির তথ্যানুযায়ী, ওরোভিল হ্রদের নিম্নবর্তী তিনটি কাউন্টিতে এক লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ বসবাস করে। এদের মধ্যে কতোজন সরে যাওয়ার নির্দেশ পেয়েছেন তা পরিষ্কার নয়।
বাঁধ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওরোভিল হ্রদের উপচে পড়া পানির চাপে বাঁধটিতে একটি গর্ত তৈরি হওয়ায় এটি যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে, এতে ফেদার নদী অববাহিকার গ্রামীণ জনপদগুলো বন্যার পানিতে ভেসে যেতে পারে।
কর্তৃপক্ষ এটি জানানোর পর জরুরিভিত্তিতে ওই জনপদগুলো সব বাসিন্দাকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে বিউট কাউন্টির শেরিফ বলেছেন, “ওরোভিলের নিচু এলাকাগুলো এবং নদী বরাবর এলাকাগুলো থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সবাইকে সরে যাওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। এটা কোনো অনুশীলন নয়।”
কিন্তু কয়েক ঘন্টা পরও বাঁধের ওই গর্তটি আর বড় না হওয়ায় ভয়াবহতা কিছুটা হ্রাস পাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়।
এরপর পানি সম্পদ বিভাগ জানায়, বাঁধের গর্তটি ভরাট করার জন্য হেলিকপ্টার থেকে পাথর ফেলা হচ্ছে।
পাশাপাশি বাঁধ কর্তৃপক্ষ হ্রদের পানির উচ্চতা হ্রাস করতে পানি ছাড়াতে শুরু করে।
ক্যালিফোর্নিয়ায় ব্যাপক খরা চলার পর গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়। এতে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
রোববার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিউটের শেরিফ কোরেয়ি হোনেয়া বলেন, সকালে বিশেষজ্ঞরা তাকে জানিয়েছিলেন, বাঁধের যে গর্ত দিয়ে পানি বের হচ্ছে তা বাঁধটিকে ধসিয়ে দিতে পারে। এ কারণে হাজার হাজার মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ছেড়ে না দিয়ে তাদের সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
তিনি জানান, পরে তাকে জানানো হয়, বাঁধের ওই গর্তটি যেমন আশঙ্কা করা হয়েছিল তত দ্রুত বড় হয়ে উঠছে না এবং গর্তটি দিয়ে বের হওয়া পানির পরিমাণও দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে।
তবে হোনেয়ার এ সংবাদ সম্মেলনের পরও স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ বজায় ছিল।
টুইটারে য়ুবা কাউন্টির জরুরি বিভাগ সরে যাওয়া বাসিন্দাদের উত্তর দিকে ওরোভিল নদী বরাবর না গিয়ে পূর্বে, দক্ষিণে বা পশ্চিম দিকে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
এলাকা থেকে সরে যাওয়া লোকজনের জন্য ওরোভিলের ২০ মাইল উত্তর-পশ্চিমে চিকোতে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। কিন্তু এলাকা ছেড়ে যাওয়া এসব লোকজন প্রায় সবাই চিকোর পথে থাকায় ওই সড়কে জট লেগে গেছে।
গত চার বছর ধরে প্রচণ্ড খরায় ভুগছিল ক্যালিফোর্নিয়া। গত সপ্তায়ও বাঁধের শীর্ষস্থান থেকে পানি সাত ফুট নিচে ছিল। কিন্তু কয়েকটি শীতকালীন ঝড়ের দমকে পরিস্থিতি পাল্টে যায়।
বৃহস্পতিবার কর্তৃপক্ষ ও প্রকৌশলীরা দেখতে পান, বাঁধের বড় ধরনের একটি কংক্রিটের চাঙড় পানির চাপে ভেসে গেছে। এরপর থেকে তারা সতর্কতার সঙ্গে হ্রদের পানি ছাড়তে শুরু করেন।
৭৭০ ফুট পর্যন্ত উঁচু এই বাঁধটির নির্মাণ কাজ ১৯৬২ সালে শুরু করে ১৯৬৮ সালে শেষ করা হয়েছিল।