মঙ্গলবারের এই ভোটে ডেমোক্রেট পার্টির হিলারি বা রিপাবলিকানদের প্রার্থী ট্রাম্প যে-ই জয়ী হন না কেন এরইমধ্যে নানাভাবে আলোচিত এই নির্বাচন ঐতিহাসিক হবে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। কীভাবে তা ঐতিহাসিক হবে তার বিবরণও দেওয়া হয়েছে।
গোধূলি লগ্নের বছরগুলো
২০০৯ সালের জানুয়ারিতে বারাক ওবামা যখন হোয়াইট হাউজের সামনের দরজা দিয়ে হেঁটে যান, তখন তার বয়স ছিল ৪৭ বছর। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের মধ্যে বয়সের বিচারে তিনি ছিলেন পঞ্চম কনিষ্ঠ। সবচেয়ে কম বয়সে প্রেসিডেন্ট হন থিওডর রুজভেল্ট, ৪২ বছর ৩২২ দিনে।
গত ১৪ জুন ৭০তম জন্মদিন উদযাপন করেছেন ট্রাম্প। নভেম্বরে নির্বাচিত হলে তিনিই হবেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সী প্রেসিডেন্ট। এর আগে সবচেয়ে বেশি বয়স ৬৯ বছরে হোয়াইট হাউজে যান রোনাল্ড রিগান।
ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনও ৬৯ বছর পূর্ণ করেন নির্বাচনের সপ্তাহ দুয়েক আগে এবং নির্বাচিত হলে তিনি হবেন সবচেয়ে বেশি বয়সী প্রেসিডেন্টদের মধ্যে দ্বিতীয়। উইলিয়াম হেনরি হ্যারিসন, যিনি ১৮৪১ সালে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন, তার জায়গা দখল করবেন তিনি।
নিউ ইয়র্ক
১৯৪৪ সালের পর এই প্রথম নিউ ইয়র্কের দুই বাসিন্দার মধ্যে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন নিউ ইয়র্কের তৎকালীন গভর্নর থমাস ই ডিউয়ি।
(শিকাগোতে হিলারির জন্ম হলেও নিউ ইয়র্ক থেকে সিনেটর ছিলেন তিনি এবং এই স্টেটেই তার বাস।)
অর্থ
ট্রাম্প ভোটে জিতলে কিছু দিনের জন্য সবচেয়ে কম টাকা খরচে কোনো জয়ী প্রার্থীকে দেখা যেতে পারে।
২০০০ সালে আল গোরের পরে কোনো প্রার্থী এত কম খরচ করেননি। এই সময়ে হিলারি ক্লিনটন প্রায় সাড়ে ২৭ কোটি ডলার ব্যয় করেছেন।
এখন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্পের চেকবই ভাঙতে হলেও তা বারাক ওবামার গতবারের মোট ব্যয় প্রায় ৫৫ কোটি ৬০ লাখ ডলারের চেয়ে বেশ কম হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
অভিজ্ঞতা
ট্রাম্পের বিজয় আরেক দিক দিয়ে উল্লেখযোগ্য হয়ে উঠবে, গত ৬০ বছরেরও বেশি সময়ে গভর্নর বা কংগ্রেসের অভিজ্ঞতার বাইরে কেউ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হননি।
এমনকি রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাবিহীন সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট আইজেনআওয়ার ১৯৫৩ সালে দায়িত্ব নেওয়ার আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্র বাহিনীর সুপ্রিম কমান্ডার ছিলেন।
এর আগে কোনো প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ক্যাসিনো ও হোটেলের মালিক ছিলেন না। তবে ট্রাম্প বলছেন, তার অভিজ্ঞতা কাজে দিচ্ছে এবং ওয়াশিংটনের ক্ষমতাকেন্দ্রের সঙ্গে তার ততোটা সম্পৃক্ততা না থাকাটাই তার জন্য ভালো হয়েছে।
নারী প্রেসিডেন্ট?
সাবেক ফার্স্ট লেডি হিলারি ক্লিনটনের বেশ কয়েক বছর ওয়াশিংটনে থাকার দৃশ্য একটি বিষয় সহজে ভুলিয়ে দিতে পারে: নির্বাচিত হলে তিনি হবেন প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান কোনো দলের মনোনয়ন পেয়ে ইতিহাস গড়েছেন তিনি।
ডেমোক্রেটদের ইতিহাসের হাতছানি
বিস্ময়করভাবে এখন পর্যন্ত মাত্র দুজন ডেমোক্রেট সরাসরি আরেক ডেমোক্রেটের উত্তরসূরি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। সর্বশেষ ১৮৫৭ সালে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন জেমস বুচানান।
সেক্ষেত্রে হিলারি ক্লিনটনের বিজয় ডেমোক্রেট পার্টির জন্য অনেক বড় অর্জন হয়ে দেখা দেবে।