যুক্তরাজ্যে ঘরোয়া সহিংসতার শিকারদের ৪০% পুরুষ

যুক্তরাজ্যে পারিবারিক সহিংসতার শিকার প্রতি পাঁচ জনের দুইজনই পুরুষ বলে নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Feb 2016, 02:17 PM
Updated : 12 Feb 2016, 03:56 PM

যদিও সমাজে প্রচলিত ধারণা, ‘পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয় মূলত নারীরা’।

গার্ডিয়ান জানায়, যুক্তরাজ্যে পুরুষের অধিকার নিয়ে কাজ করা গ্রুপ ‘প্যারিটি’র গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরুষরা তাদের সঙ্গীদের কাছে নির্যাতিত হয় এবং অধিকাংশ সময়ই পুলিশ বিষয়টি উপেক্ষা করে। ফলে বেশিভাগ সময় আক্রমণকারী মুক্ত অবস্থায় ঘুরে বেড়ায়।

পারিবারিক সহিংসতার পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে প্যারিটি জানায়, স্ত্রী বা মেয়েবন্ধুর কাছে পুরুষদের নির্যাতিত হওয়ার সংখ্যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে অনেক বেশি।

সংগঠনটি তাদের প্রতিবেদনে দাবি করে, “পারিবারিক সহিংসতার ঘটনাগুলোয় বেশিরভাগ সময় দেখা যায় পুরুষ নির্যাতনকারী এবং নারী নির্যাতনের শিকার। কিন্তু আমরা যে প্রমাণ পেয়েছি তাতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে এটা বাস্তব চিত্র নয়।”

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মণ্ত্রনালয়ের পরিসংখ্যানগত বুলেটিন এবং ব্রিটিশ ক্রাইম সার্ভের তথ্য-উপাত্তে দেখা যায়, ২০০৪-০৫ সাল, ২০০৮-০৯ সাল এবং গত বছর পারিবারিক সহিংসতার ঘটনাগুলোর মধ্যে ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে পুরুষরা নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

এছাড়া, ২০০৬-০৭ সালে ৪৩ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ২০০৭-০৮ সালে তা আরও বেড়ে ৪৫ দশমিক ৫ শতাংশ হয়। কিন্তু ২০০৮ -০৯ সালে পুরুষ নির্যাতনের হার কমে ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ হয়।

২০০৮-০৯ সালে স্বরাষ্ট্র মণ্ত্রণালয়ের বুলেটিনে বলা হয়, “চারজন নারীর মধ্যে একজনের বেশি (২৮ শতাংশ) এবং ছয়জন পুরুষের মধ্যে প্রায় একজন (১৬ শতাংশ) বয়স ১৬ বছর হওয়ার আগেই পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়। অর্থাৎ যুক্তরাজ্যে ৪৫ লাখ নারী এবং ২৬ লাখ পুরুষ পারিবারিক সহিংসতার শিকার। ”

প্যারিটির দাবি, এই পরিসংখ্যানের পরও পারিবারিক সহিংসতার শিকার পুরুষদের সঙ্গে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ‘সেকেন্ড ক্লাস ভিকটিম’র মতো আচরণ করা হয়। পুলিশ ও কাউন্সিলের পক্ষ থেকে তাদের অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয় না।

প্যারিটির সদস্য জন মেস বলেন, “কর্তৃপক্ষের চোখে নির্যাতনের শিকার পুরুষরা প্রায় অদৃশ্য। কালেভদ্রে তারা নির্যাতনের শিকার পুরুষদের পক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। গণমাধ্যমেও পুরুষদের বিষয়টি অবজ্ঞার চোখে দেখা হয়।”

এছাড়া, পুরুষরাও নির্যাতনের শিকার হওয়ার বিষয়টি সচরাচর কর্তৃপক্ষকে জানাতে চায় না বলেও মনে করেন মেস।

তিনি বলেন, “সামাজিকভাবে পুরুষদের পক্ষে নির্যাতনের শিকার হওয়ার বিষয়টি কর্তৃপক্ষের গোচরে আনা বেশ কঠিন। নারীদের কাছে নির্যাতনের শিকার হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করতে চায় না পুরুষরা। কারণ এটি তাদের জন্য অসম্মানজনক ও দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ।”