বুধবার বিবিসি জানায়, উত্তর সিরিয়ার বিমান বিধ্বস্তের স্থানে অভিযানরত রুশ হেলিকপ্টার লক্ষ্য করে বিদ্রোহীরা গুলির্বষণ করলে ওই সেনা নিহত হন।
এর আগে বিধ্বস্ত রুশ বোমারু বিমানটির দুই পাইলট প্যারাসুট দিয়ে নেমে আসার সময় এদের একজনকে গুলি করে হত্যা করে বিদ্রোহীরা।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল সের্গেই রুদস্কোয় জানান, দুটি এমআই-৮ হেলিকপ্টার ব্যবহার করে উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছিল।
তিনি বলেন, “অভিযান চলাকালে একটি হেলিকপ্টার ছোট আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিবর্ষণের মুখে পড়ে, এতে নৌবাহিনীর একজন পদাতিক সেনা নিহত হন, হেলিকপ্টারটি ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং নিরপেক্ষ এলাকায় জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়।”
জরুরি অবতরণের পর হেলিকপ্টারটি ‘মর্টারের গোলাবর্ষণে’ ধ্বংস হয় বলে জানান তিনি।
সিরীয় বিদ্রোহীরা বলেছে, জরুরি অবতরণ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্যাঙ্কবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হেলিকপ্টারটি উড়িয়ে দিয়েছেন তারা। এই হামলার ভিডিও ফুটেজও প্রকাশ করেছে তারা।
এক মেরিন সেনা নিহত হওয়ার পর বাকী উদ্ধারকারী দলটি ওই এলাকা থেকে নিরাপদে লাতাকিয়ার কাছে রুশ বিমান ঘাঁটি হুমাইমিমে ফিরে আসে বলে জানিয়েছেন রুদস্কোয়।
তবে প্যারাসুটে করে নেমে আসা বিধ্বস্ত রুশ বোমারু বিমানের অপর পাইলটের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা জানা যায়নি।
এসব ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় তুরস্কের সঙ্গে সামরিক যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পন্ন একটি ক্রুইজার জাহাজ ভূমধ্যসাগরে মোতায়েন করা হবে।
যুদ্ধবিমান ফেলে দেওয়ার ঘটনাকে ‘পিঠে ছুরি মারা’ বলে অভিহিত করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ানকে ফোন করে বলেছেন, তুরস্কের সার্বভৌমত্ব রক্ষার অধিকারকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে।
তবে উভয় প্রেসিডেন্ট ‘পরিস্থিতি নমনীয় করার গুরুত্ব সম্পর্কে একমত হয়েছেন’ বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
তুরস্কের আকশে রুশ বোমারু বিমানকে গুলি করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তুরস্ক। কিন্তু পুতিন বলেছেন, সিরিয়ার আকাশে থাকাকালেই এসইউ-২৪ বোমারু বিমানটিকে আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়।
রুশ বিমানটি মাত্র ১৭ সেকেন্ড সময় তুর্কি আকাশ সীমায় ছিল বলে স্বীকার করেছে তুরস্ক।
অর্ধ-শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে রাশিয়ার বিমানকে গুলি করা নেটোর প্রথম সদস্যরাষ্ট্র তুরস্ক। এ ঘটনায় মস্কোর জবাব কী হবে সে্টিই এখন প্রশ্ন।