জাপানে নতুন মন্ত্রিপরিষদ

জাপানে নির্বাচনের ১১ মাস পর মন্ত্রিসভা পুনর্গঠন করা হয়েছে।

এস এম নাদিম মাহমুদ, জাপান থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Oct 2015, 02:36 PM
Updated : 7 Oct 2015, 02:36 PM

প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার ইতিহাসে এই প্রথম কোন নির্বাচনের মেয়াদ শেষের আগে এ পরিবর্তন আনা হল।

যেখানে ১৯ সদস্যের মন্ত্রিপরিষদে তিন নারী সদস্যসহ ৯ জনই নতুন মুখ। যারা এ প্রথম মন্ত্রীত্বের স্বাদ গ্রহণ করলেন।

বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬ টায় রাজকীয় ভবনে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নতুন এই মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন শিনজো আবে।

গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর জাপানের সাধারন নির্বাচনে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) ক্ষমতায় আসার পর নানা কারণে মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য বিতর্ক সৃষ্টি করেন।

গত মাসের শেষদিকে সংসদের উচ্চকক্ষে বির্তকিত সামরিক আইন ‘নিরাপত্তা বিল’ পাশের পরই প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে নতুন মন্ত্রিপরিষদ গঠনের ঘোষণা দেন।

আর সেই আলোকে বুধবার সকাল থেকে টোকিও সচিবালয়ে ছিল উৎসব মুখর পরিবেশ। এ সময় শিনজো আবে প্রত্যেক মন্ত্রীর কাছ থেকে পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন।

দিনের শেষে সন্ধ্যায় রাজকীয় প্রাসাদে নির্ধারিত এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রীদের নাম ঘোষণা করেন তিনি, যেখানে আগের পরিষদ থেকে ৯ জনকে ফের নতুন পরিষদে আনা হয়।

 ১৯ সদস্যের মন্ত্রিপরিষদে নতুনদের মধ্যে যারা স্থান পেয়েছেন তারা হলেন, ডেপুটি মন্ত্রিপরিষদ সচিব কাসুনোবু কাতো (নারী ক্ষমতায়ন মন্ত্রণালয়), শিক্ষা-ক্রীড়া ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে হিরোসি হাসে, বন ও কৃষি মন্ত্রণালয়ে হিরোসি মরিয়ামা, আইন মন্ত্রণালয়ে মিসুহিদে ইয়ূকি, অর্থনীতি ও বাণিজ্যয় মোতো হায়াশি, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে তারো কোনো।

এছাড়া, নারী সদস্যের মধ্যে রয়েছেন, পরিবেশমন্ত্রী তামায়ু মারুকায়া, ওকিনায়া ও উত্তরঞ্চল মন্ত্রী আকিও শিমাজারি, আন্তঃসম্পর্ক মন্ত্রণালয়ে সানে তাকাইচি।

নারী মন্ত্রীদের প্রসঙ্গে শিনজো আবে বলেন, নারীরা সারা বিশ্বে এগিয়ে যাচ্ছে। জাপানের উন্নয়নে নারীদের ভূমিকাও পুরুষের চাইতে কম না। তাই এবার নারীদের মন্ত্রীতে আনার ব্যপারে দেশে নারী ক্ষমতায়নের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

এছাড়া, আগের মন্ত্রিপরিষদ থেকে বহাল রয়েছেন, উপ-প্রধানমন্ত্রী তারো আসো, অর্থমন্ত্রী তাকাইচি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়াসুহিসা শিওযাকি, প্রতিরক্ষায় জেন নাকাতানি ও ইয়াশিদা সুগা, অর্থনৈতিক পুনর্বাসনে আকিরা আমারি, জনসংখ্যা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শিজেরু ইশিবা, অলিম্পিক মন্ত্রী তশিয়াকি ইন্ডো ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ে সুওসি তাকাগিকে দায়িত্ব দেয়া হয়।

দায়িত্ব দেয়ার পর শিনজো আবে বলেন, আমার নতুন মন্ত্রিপরিষদের স্ব্প্ন হবে বিশ্ব অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা। তারা জিডিপি’র লক্ষ্যমাত্রা ৬শ’ ট্রিলিয়ন ইয়েন এবং জন্মহার ১ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়াবে।

জাপানের মোট জনসংখ্যা ১২ দশমিক ৮ কোটির মধ্যে ১ কোটির বেশির বয়স ৮০ বছরের উর্ধ্বে। আর ৩৭ শতাংশের বয়স ৬৫ বছরের উর্ধ্বে বলে সাম্প্রতিক সময়ে সরকার এক জরিপে জানিয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা ধীরে ধীরে ‘আবেনোমিক্স’ এ (নিজের দেয়া উন্নয়ন তত্ত্ব) প্রবেশ করছি। জাপানের অর্থনীতি ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তার সরকার কাজ করে যাবে।