শনিবার ভোররাতে চালানো ওই হামলায় ১৯ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে ১২ জন এমএসএফ’র কর্মী এবং বাকি ৭ জন হাসপাতালের রোগী।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, উত্তরের শহর কুন্দুজে তালেবানকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানোর সময় খুব সম্ভবত ‘অনিচ্ছাকৃত ক্ষয়ক্ষতি’ হয়েছে।
আর আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তালেবান যোদ্ধারা হাসপাতালটিতে হামলা করে এবং ‘মানব ঢাল’ হিসেবে হাসপাতাল ভবনটি ব্যবহার করে।
রোববার এমএসএফ’র পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ বক্তব্য সঠিক নয় বলে জানানো হয়। তাছাড়া হাসপাতাল থেকে তালেবান যোদ্ধারা আফগান ও নেটো সেনাদের দিকে গুলি ছুড়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর এমন দাবিও অস্বীকার করেছে এমএসএফ।
বিবৃতিতে বলা হয়, “হাসপাতাল প্রাঙ্গনের সবগুলো ফটক রাতভর বন্ধ ছিল। তাই কেউই (তাদের কর্মী, রোগী বা তত্ত্বাবধায়কদের কেউ) ওই সময় হাসপাতালের ভেতর প্রবেশ করেনি। আর যদি কেউ ঢুকেও থাকত তবুও হাসপাতালের ওপর বোমা ফেলা কোনো ভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।”
এ ঘটনায় ‘গভীর সমবেদনা’ প্রকাশ করে ওবামা বলেন, তিনি এ বিষয়ে ‘বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন’ এবং তদন্তের ভিত্তিতে সুস্পষ্ট রায় দেয়া হবে।
জাতিসংঘ এ ঘটনাকে ‘অমার্জনীয় এবং সম্ভাব্য বিচারযোগ্য অপরাধ’ বলে বর্ণনা করেছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন এ ঘটনার 'পুঙ্খানুপুঙ্খ ও নিরপেক্ষ তদন্তের' আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার রাদ আল হুসাইন বলেন, “আন্তর্জাতিক ও আফগান সেনাবাহিনীর পরিকল্পনাকারীরা সব সময় বেসামরিক নাগরিকদের সম্মান ও সুরক্ষা দিতে বাধ্য। আর চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং চিকিৎসকদের তো বিশেষ সুরক্ষা প্রাপ্য।”
স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসা সংস্থা এমএসএফ’র হাসপাতালে শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত দুইটার দিকে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বিমান থেকে বোমা হামলা চালানো হয়। এমএসএফ’র প্রেসিডেন্ট মেইনি নিকোলাই এ ঘটনাকে ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের ঘৃণ্য এবং মারাত্মক লঙ্ঘন’ বলে বর্ণনা করেন।
এমএসএফ’র পক্ষ থেকে বলা হয়, “সব লক্ষণে প্রকাশ পাচ্ছে আন্তর্জাতিক জোট বাহিনী এ হামলা চালিয়েছে।”
এ বিষয়ে ‘পরিপূর্ণ ও পরিষ্কার ব্যাখ্যা’ দাবি করেছে সংস্থাটি।