প্রকৃতির ক্যানভাসে কৃষকের শিল্প

কাগজের ক্যানভাসে শিল্পীর তুলির আঁচড় শিল্পপিপাসু মানুষের মনে ভালোলাগার অনুভূতি ছড়িয়েছে যুগ যুগ ধরে। কিন্তু প্রকৃতিও হতে পারে শিল্পীর বিশাল ক্যানভাস। এক্ষেত্রে অবশ্য শিল্পীর ভূমিকায় কৃষক।

জাপান থেকে, এসএম নাদিম মাহমুদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Sept 2015, 12:45 PM
Updated : 10 Sept 2015, 04:05 AM

অসাধারণ সেই কাজটিই করে দেখিয়েছেন জাপানের সায়তামা প্রদেশের গিয়োদার কৃষকরা। বিশাল একটি ধানক্ষেতকে ক্যানভাস বানিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন মনের মাধুরী।     

শিল্পকর্মের স্বীকৃতিও মিলেছে দ্রুতই। গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ একে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শৈল্পিক ধানক্ষেতের স্বীকৃতি দিয়েছে।

জাপানের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরা একটি মেয়ে এবং মহাকাশযাত্রীদের মতো পোশাক পরা একটি ছেলে শিশু হাত ধরাধরি করে উড়ছে আকাশে- ধানক্ষেতে ফুটিয়ে তোলা শিল্পকর্মটি এমনই।

জাপানি ভাষায় যার শিরোনাম ‘মিরাই ই সুনাগু ইনিশি নো কিসেকি’, বাংলায় যার অর্থ করলে দাঁড়ায় ‘অতীত থেকে ভবিষ্যতের দিকে যাত্রা’।

প্রাচীন শিল্প আর ঐতিহ্যের ধারক জাপানের প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষতার দিকে ধাবমানতাকেই যেন তুলে ধরতে চেয়েছেন শিল্পী কৃষকরা।

ধান গাছ সবুজ হলেও গিয়োদার কৃষকরা সাত জাতের বিভিন্ন রঙের ধান বীজের চারা রোপন করে এই চিত্রকর্ম সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে কালো রংয়ের ধানগাছও রয়েছে।

১৮০ মিটার দীর্ঘ এবং ১৬৫ মিটার প্রশস্ত ধানক্ষেতটি তৈরিতে সহায়তা করেছে স্থানীয় সিটি কর্পোরেশন।

বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির অগ্রগতিতে ধীরে ধীরে কৃষিকাজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া কৃষকদের উৎসাগ জোগাতেই অভিনব এই উদ্যোগ বলে জানান সিটির মেয়র মাসাজি কুদো।

“২০০৮ সালে প্রথম কৃষকদের এ ধরনের শিল্পকর্ম প্রদর্শন শুরু করি। প্রতিবছরই এই মওসুমে একইভাবে কৃষকরা ধান ফলানোর পাশাপাশি সবাইকে আনন্দ দিয়ে আসছে।”

কৃষকদের এই শিল্পকর্ম দেখার জন্য প্রতিদিনই শত শত মানুষ ভিড় করছেন। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, এটি আগামী অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত দেখা যাবে।

কিজু মাগানিকু নামের একজন দর্শনার্থী বলেন, “এটি খুব চমৎকার একটি জায়গা। বলতে পারেন, স্বল্প সময়ে বিনোদন পাওয়ার উত্তম স্থান। এখানে এসে কৃষকদের বিভিন্ন জিনিসের সঙ্গে পরিচিত হতে পারছি। আর এ শিল্পকর্ম তো সত্যিই অসাধারণ।”