তাজিকিস্তানে বন্দুক লড়াইয়ে পুলিশসহ নিহত ১০

তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবে ও কাছাকাছি একটি শহরে পুলিশের উপর ‘সন্ত্রাসীদের’ গুলিবর্ষণ ও পুলিশের পাল্টা গুলিতে অন্ততপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Sept 2015, 08:28 AM
Updated : 5 Sept 2015, 08:29 AM

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে দুশানবের কাছে ভাহদাত শহরের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে বন্দুকধারীদের হামলায় আট পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।

পুলিশের পাল্টা গুলিতে দুই হামলাকারীও নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে তারা।

ঘটনার জন্য দেশটির পদচ্যুত ডেপুটি প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল আদুহালিম নাজারজোদাকে দায়ী করেছেন সরকারি কর্মকর্তারা। নাজারজোদা একটি ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর’ নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন তারা।

দুশানবের যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানিয়েছে, আরো সহিংসতা হতে পারে বিবেচনায় দূতাবাস বন্ধ রাখা হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার দেওয়া ওই বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘সংগঠিত অপরাধী গোষ্ঠী’ ভাহদাতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভাগ এবং দুশানবের কেন্দ্রীয় সরকারি ভবনে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “হামলার পর বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি।”

জেনারেল নাজারজোদার নেতৃত্বাধীন ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি’ রোমিত জর্জ এলাকার দিকে পালিয়ে গেছে বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে। নাজারজোদা ও তার সহযোগীদের ধরতে ওই এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

এ ধরনের অস্থিরতার ঘটনা তাজিকিস্তানের ক্ষেত্রে বিরল হলেও সম্প্রতি দেশটির জনজীবনে ইসলামের ভূমিকা নিয়ে বিতর্কে কিছুটা অস্থিরতা বিরাজ করছে। দেশটির বেশিরভাগ মানুষ মুসলিম হলেও স্বাধীনতার পর থেকে দেশটিতে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক ধারাই চলে আসছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনৈতিক দুরাবস্থার কারণে দেশটির তরুণদের মধ্যে ইসলামের কট্টরপন্থী ধারা জনপ্রিয় হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

গেল সপ্তাহে আইন মন্ত্রণালয়, ইসলামিক রিভাইভাল পার্টির তৎপরতা নিষিদ্ধ করে একটি ফরমান জারি করে। দলটি দেশটির ধর্মভিত্তিক একমাত্র বৈধ রাজনৈতিক দল ছিল।

অপরদিকে জেনারেল নাজারজোদা ইউনাইটেড তাজিক অপজিশন (ইউটিও) দলের সাবেক সদস্য। ১৯৯০-র দশকের গৃহযুদ্ধে সরকারি বাহিনীগুলোর সঙ্গে লড়াইয়ে ছিল ইউটিও। ১৯৯৭ সালে শান্তিচুক্তির পর মন্ত্রিসভায় যোগ দেয় ইউটিও।

সাম্প্রতিক হামলাটিকে প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাখমন সরকার ও ইউটিও-র যুদ্ধবাজ নেতাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিরোধের ফলাফল মনে করা হচ্ছে।

দুইদশক ধরে রাখমন দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতাসীন রয়েছেন। ২০১৩ সালের নির্বাচনে ৮৩ দশমিক ছয় শতাংশ ভোট পেয়ে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।