এ থেকে পুলিশের ধারণা, ক্যাম্বোডিয়া সীমান্তের কাছে গ্রেপ্তার হওয়া ওই বিদেশিই এরাওয়ান মন্দিরে বোমা হামলার ঘটনায় কোনো একটি চক্রের হয়ে মূল ভূমিকা পালন করেছে।
পুলিশের মুখপাত্র প্রাউত থাওর্নসিরি বলেন, ওই ব্যক্তি বোমাটি ব্যাংককের ফ্ল্যাটে কিংবা মন্দিরে বহন করে নিয়ে গিয়ে থাকতে পারে।
১৭ অগাস্টে চালানো ওই হামলার দায় এখন পর্যন্ত কেউ স্বীকার করেনি। হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত দুইজন বিদেশিকে আটক করেছে থাই পুলিশ।
পুলিশ তাদের জাতীয়তা প্রকাশ করেনি। তবে বলেছে, মঙ্গলবার আটক হওয়া দ্বিতীয় বিদেশিটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাওয়া হলুদ টি শার্ট পরা ব্যক্তিটির মত। মন্দিরে বিস্ফারণের আগে ওই ব্যক্তিকে একটি ব্যাগ সেখানে ফেলে আসতে দেখা যায় ফুটেজে।
দ্বিতীয় বিদেশি আটক হওয়ার আগে গত শনিবার পুলিশ ব্যাংককের একটি এপার্টমেন্টে তল্লাশি চালিয়ে প্রথম বিদেশিকে আটক করে। উদ্ধার করা হয় বোমা তৈরির সাজ সরঞ্জাম এবং ভুয়া কয়েকটি পাসপোর্টও।
বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে অষ্টম আরেকজনের বিরদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে পুলিশ।
ব্যাংককের পূর্বাঞ্চলে সা কায়েও প্রদেশ থেকে মঙ্গলবার দ্বিতীয় বিদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে তুর্কি ভাষায় কথা বলছে বলে জানিয়েছেন থাই উপ পুলিশ প্রধান চাকথিপ চাইজিন্দা।
ব্যাংককের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার পাওয়া সন্দেহজনক সরঞ্জামের একটি বোতলের গায়ে আঙুলের ছাপের সঙ্গে ওই বিদেশির আঙুলের ছাপ মিলে যাওয়ায় এ ব্যক্তিই বোমা তৈরির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত- এটি একরকম নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন পুলিশের মুখপাত্র প্রাউত।
উদ্ধার করা একটি চীনা পাসপোর্টের নামের সঙ্গেও ওই ব্যক্তির নামের মিল পাওয়া গেছে এবং কয়েকটি খবরে বলা হয়েছে, পাসপোর্টটি সীমান্তে আটক হওয়া ওই ব্যক্তিরই। চীনের মুসলিম উইঘুর অধুষ্যিত সিনসিয়াং থেকেই সে এসেছে।
তবে ব্যাংকক থেকে বিবিসি’র এক সংবাদাতা বলছেন, পার্সপোর্টটি যে ওই ব্যক্তিরই তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করেনি থাইল্যান্ড কিংবা চীন কর্তৃপক্ষের কেউই। এটি নিশ্চিত হলে বোমা হামলার ঘটনায় উইঘুরদের যোগ থাকার বিষয়টি স্পষ্টতই সামনে চলে আসবে।
উইঘুর সমর্থকদেরকে ঘিরে সন্দেহ ঘণীভূত হচ্ছে আগে থেকেই। থাই পুলিশ ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা হামলার ঘটনায় উইঘুরদের যোগসাজশ থাকার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেক আগেই।
এই উইঘুররা চীনের পশ্চিমাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকার তুর্কিভাষী মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। বেইজিংয়ের শাসনে নিপীড়িত হওয়ার অভিযোগ করে আসছে তারা। তুর্কিদের অনেকেই উইঘুরদের প্রতি চীনের এ বৈরি আচরণেঅসন্তুষ্ট।
গত মাসে ১শ’রও বেশি উইঘুরকে থাইল্যান্ড থেকে চীনে তাড়িয়ে দেয়া হয়। মানবাধিকার গ্রুপগুলো থাইল্যান্ডের এ পদক্ষেপের সমালোচনা করে এবং তুরস্কেও ইস্তাম্বুলের থাই কনস্যুলেটের সামনে বিক্ষোভ করে তুর্কিরা।