তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে ‘ব্র্যান্ডিং’য়ের জন্য কর্মশালা

দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে আরো আকর্ষণীয় করে তুলে ধরার জন্য বাংলাদেশকে একটি ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও বেসরকারি সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।

কাজী শাহরিন হকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2015, 11:16 AM
Updated : 30 May 2015, 11:16 AM

তিনি বলেন, “সারা বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন কাজে আউটসোর্সিংয়ের জন্য বেশ জনপ্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। বিশ্বের অন্যতম ব্যবস্থাপনা পরামর্শক সংস্থা এ টি কার্নি’র করা আউটসোর্সিয়েং জন্য সর্বোত্তম ৫১টি দেশের তালিকায় ২৬তম অবস্থান দখল করেছে বাংলাদেশ।

“শীর্ষস্থানীয় পরামর্শক সংস্থা কোফেইস বাংলাদেশকে রেখেছে উদীয়মান ১০ দেশের তালিকায়। বিশ্বের প্রযুক্তি খাত নিয়ে গবেষণাকারী সংস্থা গার্টনার তাদের ২০১০ সালের প্রতিবেদনে আউটসোর্সিয়ের জন্য শীর্ষ ৩০টি দেশের মধ্যে রেখেছে বাংলাদেশকে।

“যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকস ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীনের পরের ১১টি দেশের মধ্যেই রেখেছে বাংলাদেশকে। আউটসোর্সিংয়ের বাজারে শীর্ষপর‌্যায়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। জেপি মরগানের তালিকায় প্রথম পাঁচটি দেশের একটি বাংলাদেশ।”

বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অর্জনগুলোকে সমন্বিত করে একটি প্রধান ‘ব্র্যান্ড’ তৈরি করে তা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে শনিবার সোনারগাঁ হোটেলে ‘ব্র্যান্ড বাংলাদেশ অ্যান্ড ব্র্যান্ডিং ওয়ার্কশপ ফর দ্য আইটি/আইটিএস’ শীর্ষক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।

তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের আইটি বিভাগ ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের যৌথ আয়োজনে এ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংগঠন ও সংস্থার কর্মকর্তারা।

কর্মশালায় দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান টলন্স এবং বাংলাদেশে ও ভারতে এর অঙ্গপ্রতিষ্ঠান টিমএশিয়ার প্রশিক্ষকরা ব্র্যান্ডিং বিষয়ে অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণ দেন।

প্রধান অতিথি জুনায়েদ আহমেদ পলক তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে একটি মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনা রাখেন।

বাংলাদেশের তরুণ জনশক্তিকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শক্তি হিসেবে তুলে ধরে তিনি বলেন, “বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সাররা ইতোমধ্যেই খুব ভালো করছে এবং আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ভালো ব্যবসা করছে। বিশেষ করে অ্যাকাউন্টিং বিপিএম, এমার্জিং টেকনোলজিস (এসএমএসি), গ্রাফিক ডিজাইন, কাস্টমাইজড অ্যাপলিকেশন ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রে তারা খুবই ভালো করছে।

এছাড়া আইসিটি ডিভিশনের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলতে আইসিটি ডিভিশন বেশ কিছু প্রকল্প ও কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ল্যাভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড গভর্নেন্স (এলআইসিটি) প্রকল্পটি তথ্যপ্রযুক্তিতে ৩৪ হাজার দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলার জন্য তাদের বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করেছে।

“লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং প্রকল্পের অধীরে ৫৫ হাজার ফ্রিল্যান্সারকে গড়ে তোলা হচ্ছে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস (বেসিস) ২৩ হাজার তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলছে।”

এসব প্রকল্পকে একটি ‘মেজর ব্র্যান্ডে’র মাধ্যমে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে তুলে ধরার উদ্দেশ্যেই কর্মশালাটির আয়োজন করা হয়।

কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক এস এম আশরাফুল ইসলাম।