কেমন হতে পারে অ্যাপলের গাড়ি

সোমবার থেকেই প্রযুক্তিবাজারে শোনা যাচ্ছে টেক জায়ান্ট অ্যাপলের বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির গুজব। নিয়োগ করা হচ্ছে বড়মাপের গাড়িনির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাবেক কর্মীদের। গাড়িটিতে স্ব-চালিত ফিচার থাকতে পারে বলেও ধারণা করছে সংবাদ মাধ্যমগুলো।

মামুনুর রশীদ শিশিরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Feb 2015, 12:49 PM
Updated : 18 Feb 2015, 12:49 PM

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতে, প্রায় এক বছর আগেই অ্যাপলের সিইও টিম কুকের অনুমোদন পায় ওই গাড়ি প্রকল্প। প্রকল্পের নেতৃত্বে আছেন গাড়িনির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফোর্ডের সাবেক প্রকৌশলী এবং অ্যাপলের পণ্য ডিজাইন বিভাগের স্টিভ জাদেস্কি। শুক্রবার ফিনান্সিয়াল টাইমস জানায়, অ্যাপলের ওই গোপন বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রকল্পে কাজ করছে শতাধিক কর্মী। এদের মধ্যে আছেন মার্সিডিজ বেনজ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সিইও ইয়োহান জাংওয়ার্থ।

শনিবার রয়টার্স জানায়, স্ব-চালিত বৈদ্যুতিক গাড়ি বানানো শিখছে অ্যাপল। কথা হচ্ছে গাড়িনির্মাতা বিশেষজ্ঞ এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ সরবরাহকারীদের সঙ্গে।

তবে এখন পর্যন্ত সবই সন্দেহ, সবই ‘অনিশ্চিত’।

গাড়িবাণিজ্যে কেন?

অ্যাপল— যে প্রতিষ্ঠানটি কম্পিউটার, ট্যাবলেট, স্মার্টফোন এবং হালে ঘড়ি ছাড়া আর কিছুই বানায়নি, হঠাৎ গাড়ি শিল্পে কেন? গাড়ি বানানো একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের তুলনায় গাড়ির রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট খরচ অনেক বেশি, প্রস্তুত প্রণালী আরও জটিল এবং নিয়ন্ত্রনের চাপ বেশি। এছাড়া গাড়ি বানাতে প্রয়োজনীয় কলাকৌশলও ভিন্ন।

একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে সিলিকন ভ্যালির প্রায় সবাই এবিষয়ে আগ্রহী।

অ্যাপল ছাড়াও স্ব-চালিত ড্রাইভিং বৈদ্যুতিক গাড়িতে কয়েক বছর ধরেই বিনিয়োগ করছে ওয়েব জায়ান্ট গুগল। আছে টেসলা-ও, লাস ভেগাসে অনুষ্ঠিত কনজিউমার ইলেক্ট্রনিক্স শো (সিইএস) ২০১৫-তে একটি প্রটোটাইপও দেখিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। তবে বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা বাড়ার আরেকটি কারণ আছে। তা হল জ্বালানী তেলের উচ্চমূল্য এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বিশ্বব্যাপি সচেতনতা, মন্তব্য ম্যাশএবলের।

স্ব-চালিত

গাড়ি চালাতে পছন্দ করেন না এমন গাড়ি ব্যবহারকারীদের জন্য স্ব-চালিত গাড়ি একটি আকর্ষণীয় পণ্য। গাড়ির পেছন সিটে বসে মেইল চেক কিংবা গেম খেলতে খেলতে কাজে যেতে কে না চায়। গুগল ও গাড়িনির্মাতাদের কাছেও পরিবর্তী প্রযুক্তিগত বিপ্লবও স্ব-চালিত গাড়ি।

তবে অ্যাপলের ‘বৈদ্যুতিক গাড়িটি’ নিয়ে শোনা যাচ্ছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। যদিও কারো কাছেই নিশ্চিত কোনো খবর নেই, তবে গাড়ি তৈরিতে আগ্রহ থাকলে স্ব-চালিত গাড়ির নির্মাণশৈলী নিয়ে কাজ করা উচিৎ অ্যাপলের, এমনটাই মন্তব্য ম্যাশএবল।

কবে আসবে অ্যাপলের গাড়ি:

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের খবর অনুযায়ী প্রায় এক বছর ধরে প্রায় ১ হাজার কর্মী নিয়ে গাড়ি প্রকল্পে কাজ করছে অ্যাপল। সকল গাড়িতে ব্যবহারযোগ্য কোনো সিস্টেম নয়, লক্ষ্য একটি পূর্ণাঙ্গ গাড়ি। সেই হিসেবে প্রকল্পটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়েই আছে। ফলে অ্যাপল কোনো গাড়ি বানালেও তা বাস্তবে রূপ নিতে এখনও অনেক সময় লাগবে। হয়ত ২০১৭ সালেরও বেশি।

অটোমটিভভিত্তিক একটি প্রকল্পে কাজ করছে অ্যাপল, সংবাদমাধ্যমগুলো এখন পর্যন্ত এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে এরকম অনেক পণ্য নিয়েই কাজ করেছে প্রতিষ্ঠানটি, কিন্ত তা কখনই বাজারে আসেনি। নতুন প্রকল্পটির ক্ষেত্রেও এমনটা হতে পারে, এমনটি প্রকল্পটি পূর্ণাঙ্গ গাড়ি না হয়ে গাড়ি নিয়ন্ত্রক একটি সফটওয়্যারও হতে পারে, ধারণা ম্যাশএবলের।

প্রকল্পটি যাই হোক না কেন আগামি কয়েক মাস ধরেই এবিষয়ে শোনা যাবে বিভিন্ন গুজব ও নেতিবাচক মন্তব্য। অ্যাপলের আসন্ন পণ্য নিয়ে বরাবরই গুজব ছড়িয়েছে, এবার ছড়াবে চার চাকার গুজব।