প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও অপারেটিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে স্মার্টফোন দুটি সম্পূর্ণই ভিন্ন জগতের। এ ছাড়াও, আইওএস ব্যবহৃত আইফোন X-এর চেয়ে অ্যান্ড্রয়েডচালিত নোট ৮ আকারে বড়। এই দুই স্মার্টফোনের মধ্যে তুলনা করে প্রতিবেদন প্রকাশ মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি।
বায়োমেট্রিকস
ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার, আইরিশ স্ক্যানার আর ফেইস ডিটেকশন- বায়োমট্রিকস-এর ক্ষেত্রে এ সবকিছুই ব্যবহার করে গ্যালাক্সি নোট ৮ আনলকের সুবিধা রয়েছে। ফেইস ডিটেকশন ফিচারটিতে ছবি দিয়ে ফোনটি আনলক করা সম্ভব হয়েছে বলে একে ‘অনিরাপদ’ বলা হচ্ছে।
আইফোন X-এর ফেইস আইডি নামে আনা হয়েছে ৩-ডি ফেইস স্ক্যানার, সরিয়ে ফেলা হয়েছে টাচ আইডি নামের ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার। এতে কোনো আইরিশ স্ক্যানার নেই। কিন্তু ফেইস আইডি টাচ আইডি’র চেয়ে অনেক বেশি সুরক্ষিত বলেই দাবি অ্যাপলের।
ধূলা ও পানিরোধী ব্যবস্থা
এক্ষেত্রে গ্রাহকদের ভাবনার কোনো কারণ নেই। এই দুই স্মার্টফোনই ধূলা ও পানিরোধী করে বানানো হয়েছে।
হেডফোন জ্যাক
২০১৬ সালে আইফোন ৭-এর মাধ্যমে হেডফোন জ্যাককে বিদায় জানিয়েছিল মার্কিন টেক জায়ান্টটি। এবারও একই অবন্থানে রয়েছে তারা, আইফোন X-এও রাখা হয়নি কোনো হেডফোন জ্যাক। কিন্তু গ্যালাক্সি নোট ৮-এ এখনও হেডফোন জ্যাক ব্যবহার করা হচ্ছে।
লেনদেন ব্যবস্থা
গ্যালাক্সি নোট ৮ ব্যবহার করে প্রায় সবখানেই লেনদেন করা যাবে। লুপপে কেনার পর স্যামসাং এই প্রযুক্তি নিয়ে আসে। এর মানে হচ্ছে এই স্মার্টফোন ব্যবহার করে প্রায় সব ধরনের ক্রেডিট কার্ড রিডারে অর্থ পরিশোধের সুযোগ রয়েছে। অ্যাপল পে’র পরিসর এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি বিস্তৃত হলেও তা এখনও স্যামসাং পে’র মতো নয়।
ক্যামেরা
বছরের পর বছর ধরে অ্যাপল আর স্যামসাং, দুই প্রতিষ্ঠানই তাদের স্মার্টফোনে বাজারের সবচেয়ে সেরা ক্যামেরা দিয়ে আসছে। আইফোন X-এর ক্যামেরায় আনা হয়েছে ‘বোকেহ’ ফিচার, এর মাধ্যমে ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড ঝাপসা করে দেওয়া যাবে। স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি নোট ৮-এও এই ফিচার রয়েছে, তবে তা আইফোন X-এর মতো উন্নত নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। আইফোন X-এ একটি নতুন সামনের ক্যামেরা রাখা হয়েছে যা উন্নত পোট্রেইট ছবি তুলতে সক্ষম। গ্যালাক্সি নোট ৮-এ এই সুবিধা নেই।
তারবিহীন চার্জিং
কিউআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে অ্যাপল আইফোন X-এ নিয়ে এসেছে তারবিহীন চার্জিং প্রযুক্তি। তবে, এই চার্জিং ব্যবস্থা প্রচলিত উপায়ের চেয়ে ধীরগতির বলেই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। স্যামসাং কয়েক বছর ধরে এ প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ করছে। অ্যাপলের নতুন আইফোনগুলোতে একই রকম প্রযুক্তি থাকবে কিনা তা নিয়ে এখনও কোনো আভাস পাওয়া যায়নি।
স্ক্রিন
আইফোন X-এর স্ক্রিনের আকার ৫.৮ ইঞ্চি আর গ্যালাক্সি নোট ৮-এর হচ্ছে ৬.৩ ইঞ্চি। দুই স্মার্টফোনেই ব্যবহার করা হয়েছে ওএলইডি প্রযুক্তি। তবে, স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি নোট ৮-এ বাঁকানো ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয় আর এই ডিসপ্লে উন্নততর। ওএলইডি ডিসপ্লে এলসিডি’র তুলনায় বেশি শক্তি সাশ্রয়ী ও উজ্জ্বল।
স্টাইলাস
আইফোন X-এ কোনো স্টাইলাস নেই, আর অ্যাপল ভক্তদের এমন কোনো চাহিদাও নেই বলে ধারণা করা হয়। স্যামসাংয়ের নোট সিরিজে এস পেন নামের একটি স্টাইলাস রয়েছে।
সবশেষে
আইফোন X এখনও বাজারে আসেনি। উন্মোচন অনুষ্ঠানে মঞ্চে দেখানো ফিচার দেখেই এই তুলনা করা হয়েছে। ব্যবহারের পর এই দুই স্মার্টফোনের মধ্যে তুলনা করতে হলে নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হচ্ছে।