অ্যাডোবি ফ্ল্যাশ-এর বিদায় ঘণ্টা

২০২০ সালের মধ্যে ফ্ল্যাশ প্লেয়ার প্লাগ-ইন সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করেছে অ্যাডবি সিস্টেমস।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 July 2017, 12:07 PM
Updated : 26 July 2017, 12:07 PM

অনলাইনে ভিডিও গেইম খেলা আর ভিডিও ক্লিপ দেখতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত প্রযুক্তিগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম, বলা হয়েছে বিবিসি’র প্রতিবেদনে। কিন্তু এই সফটওয়্যার অনেক বেশি সমালোচনার মুখোমুখিও হয়েছে, বিশেষত এর কোডে থাকা ত্রুটির কারণে এটি হ্যাকারদের কাছে কোনো কম্পিউটারে আঘাত হানাত ‘জনপ্রিয়’ উপায় হয়ে দাড়িয়েছিল।

সাম্প্রতিক সময়ে এই সফটওয়্যারের বেশিরভাগ সুবিধাই এইচটিএমএল৫ দেওয়া শুরু করে।  এইচটিএমএল৫-এর একটি সুবিধা হচ্ছে এটি মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। এই কনটেন্ট ওয়েবপেইজগুলোতে পাওয়া যায়, আর এগুলোর জন্য ব্যবহারকারীডের একটি প্লাগ-ইন ইনস্টল ও আপডেট করতে হয়।

ফ্ল্যাশের সমালোচনায় মুখর থাকাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্বদেশীয় টেক জায়ান্ট অ্যাপল। অ্যাপলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত স্টিভ জবস এর সীমাবদ্ধতাগুলো নিয়ে একবার এক খোলা চিঠি লিখেছিলেন। ওই চিঠিতে তিনি এর নির্ভরযোগ্যতা, নিরাপত্তা ও পারফরম্যান্স-এর বিষয়গুলো তুলে ধরেন। অ্যাপলের মোবাইল ডিভাইসগুলোতে এই প্লাগ-ইন যোগ করার ব্যবস্থা কখনও রাখা হয়নি।

অ্যাডবি’র পণ্যবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট গোভিন্দ বালাকরিশনান বলেন, এইচটিএমএল৫ আর অন্যান্য প্রযুক্তিগুলো “ফ্ল্যাশ প্লেয়ারের বিকল্প সেবা দিতে এখন যথেষ্ট সক্ষম ও পরিণত।” আর এ কারণে প্রতিষ্ঠানটি ফ্ল্যাশ-এর ইতি শেষ টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, “ইন্টারনেট জগতে কিছু প্রযুক্তির অনেক গভীর ও ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে।”

শুরুর দিকে ফ্ল্যাশ নিয়ে কাজ করা অ্যাপ নির্মাতা ম্যালকম বারক্লে বিবিসি’কে বলেন, “এটি একটা সময়ের জন্য এর সব প্রতিশ্রুতি রেখেছে কিন্তু মোবাইল ডিভাইসের বিপ্লব যে আসছে তা এটি কখনও দেখতে পায়নি আর শেষ অব্দি এটিই একে মেরেছে।”

২০০৫ সালে ম্যাক্রোমিডিয়া-কে কেনার মাধ্যমে ফ্ল্যাশের সত্ত্ব লাভ করে অ্যাডবি। সে সময় থেকে ৯৮ শতাংশেরও বেশি পিসিতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হত।

কিন্তু সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ওয়েব ব্রাউজার ক্রোমে ফ্ল্যাশের ব্যবহারে ধস নেমেছে, বলা হয় প্রতিবেদনটিতে। ক্রোমের মালিক প্রতিষ্ঠান গুগলের সূত্রমতে, ২০১৪ সালে প্রতিদিন ৮০ শতাংশ ডেস্কটপ ব্যবহারকারী এটি ব্যবহার করতেন, কিন্তু এখন এ হার মাত্র ১৭ শতাংশ। ২০১৬ সালের শেষের দিকে গুগল ফ্ল্যাশ সফটওয়্যারের জন্য থাকা সব সমর্থন তুলে নেয়।

বালাকরিশনান বলেন, ফ্ল্যাশের ইতি টানা হলে তা অ্যাডবির লাভ ক্ষতিগ্রস্থ করবে না বলেই তাদের ধারণা। তিনি বলেন, “আমরা মনে করি ফ্ল্যাশ পরবর্তী বিশ্বের অ্যাডবির সুযোগ আরও বেশি।”

“গ্রাহক আর অংশীদারদের অন্য প্লাটফর্মে যাওয়ার পরিকল্পনা করতে সময় দিতে” ২০২০ সাল পর্যন্ত ফ্ল্যাশ রাখা হবে বলে জানিয়েছে অ্যাডবি।