কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্রহণে চিনি উৎপাদন!

গ্রিনহাউস গ্যাস কার্বন ডাইঅক্সাইড থেকে কোষ সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় চিনি উৎপাদন করতে পারবে, এমন একটি ব্যাকটেরিয়া উদ্ভাবন করার কথা জানিয়েছেন ইসরাইল-এর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা।

জাকিয়া শবনম বৃষ্টিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2016, 12:58 PM
Updated : 29 June 2016, 12:58 PM

ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স-এর বিজ্ঞানীরা একটি সরল প্রাণিকে ‘রিপ্রোগ্রাম’ করেছেন, যা প্রচলিত অবস্থায় চিনি গ্রহণ করে আর কার্বন ডাইঅক্সাইড ছাড়ে কিন্তু রিপ্রোগ্রাম করার ফলে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্রহণ করে আর চিনি ছাড়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রধান গবেষক নিভ অ্যান্তোনভস্কি জানান, কম জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে কমতে থাকা ভূমিতে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য সরবরাহ করার মতো ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে কার্বন স্থায়ীকরণ উন্নত করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা খুবই প্রয়োজনীয়।

প্রতিষ্ঠানটির উদ্ভিদ ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের রন মাইলোর ল্যাবে পরীক্ষা চালানো অ্যান্তোনভস্কি ব্যাকটেরিয়াগুলোর জেনোমে কার্বন ফিক্সএশনের জন্য মেটাবলিক পথ তৈরি করার তথ্য সম্বলিত জিন প্রবেশ করিয়েছেন।

যদিও ব্যাকটেরিয়াটি ফাংশনাল কার্বন ফিক্সএশন এনজাইম উৎপাদন করতে পেরেছিল, তারপরও চিনি সংশ্লেষণের জন্য কার্বন ডাইঅক্সাইড ব্যবহার করতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রক্রিয়াটি ‘আসল ফলাফল প্রদান’ করতে পারেনি। যার কারণে বাইরে থেকে চিনি সরবরাহের উপর তাকে নির্ভর করতে হয়।

“অবশ্যই আমরা এমন একটি জীবের সঙ্গে কাজ করছিলাম, যা লাখ লাখ বছর ধরে কার্বন ডাই অক্সাইডের জায়গায় চিনি খেয়ে বিবর্ধিত হয়েছে। তো আমরা যে সিস্টেম চেয়েছি তা সৃষ্টির জন্য বিবর্তনের কাছে সাহায্য নিয়েছি", ওয়েইজম্যান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স থেকে প্রকাশ করা একটি বিবৃতিতে অ্যান্তোনভস্কি এমনটা বলেন।

এই সমস্যার সমাধান খোঁজার জন্য দলটি ‘ক্যামোস্ট্যাটস’ নামের ট্যাংকের নকশা করেছিল, যেখানে আস্তে আস্তে তাদের মধ্যে কার্বন ডাই অক্সাইডের জন্য ক্ষুধা সৃষ্টি করে তারা ব্যাকটেরিয়াগুলোকে বড় করেছিলেন।

পরিবর্তিত অবস্থা, কীভাবে তাদের পরিবেশের প্রচুর উপাদানগুলোকে আরও বেশি ব্যবহার করা যায় তা শিখতে বাধ্য করা হয় ব্যাকটেরিয়াগুলোকে।

তিন মাসের মধ্যে, ব্যাকটেরিয়া কার্বন ডাইঅক্সাইড ব্যবহার করে কোষ তৈরিতে চিনিসহ তাদের শরীরের ভরের উল্লেখযোগ্য অংশ তৈরি করতে শিখেছিল।

দলটির স্বপ্ন ভবিষ্যতে তাদের এই গবেষণায় পাওয়া ফলাফল এমনভাবে কাজে লাগানো হবে, যা দিয়ে ক্ষুদ্র অণুজীব বানানো যাবে, যা বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্রহণ করবে আর তাকে শক্তি উৎপাদন করবে। এর মাধ্যমে কার্বন ফিক্সিং উপায়ে শস্য ফলানো যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছে দলটি, যার ফলে মানুষের খাদ্য চাহিদা মেটাতে আরও ভালো উপায় পাওয়া যাবে।