কৃষ্ণ গহ্বর থেকে ফিরে আসা সম্ভব: হকিং

প্রচলিত চিন্তাধারাকে 'ভুল' হিসেবে আখ্যায়িত করে, 'ব্ল্যাক হোল' বা কৃষ্ণ গহ্বরের করাল গ্রাস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হতে পারে বলে নতুন ধারণা দিয়েছেন ব্রিটিশ তাত্ত্বিক পদার্থবিদ ও মহাকাশবিদ স্টিফেন হকিং।

আহমেদ ইফতিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 June 2016, 11:49 AM
Updated : 12 June 2016, 11:49 AM

তিনি বলেন, "এগুলোকে যেমন চিরস্থায়ী কারাগার ভাবা হয়েছিলো তেমন কিছুই নয়। কৃষ্ণ গহ্বরের ভেতর আটকে পড়ার পরও বেরিয়ে আসার একটি রাস্তা আছে।"

চলতি বছর জানুয়ারিতে প্রি-পিয়ার রিভিউ সাইট আরক্সিভ-এ হকিং তার গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। চলতি মাসে 'ফিজিকাল রিভিউ লেটারস' জার্নালে এ গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়।

ব্যবসা-বাণিজ্যবিষয়ক সাইট বিজনেস ইনসাইডার জানায়, ৭০ দশকে স্টিফেন হকিং প্রথম ধারণা করেন, কৃষ্ণ গহ্বরে আটকা পড়া পার্টিকল-অ্যান্টিপার্টিকল জোড়ার যে কোনো অর্ধেক কৃষ্ণ গহ্বরের শক্তির সামান্য অংশ 'হকিং রেডিয়েশন' আকারে নিয়ে বেরিয়ে যেতে পারে। পরবর্তীতে কৃষ্ণ গহ্বর ধীরে ধীরে শক্তি বিকিরণ করে নিঃশেষিত হয়ে গেলে এর অস্তিত্বের চিহ্ন হিসেবে শুধু এই তেজস্ক্রিয়তাই অবশিষ্ট থাকে।

এ পর্যন্ত প্রচলিত ধারণা ছিল যে, কৃষ্ণ গহ্বরের মধ্য দিয়ে পেরিয়ে যাওয়া তথ্য চিরতরে হারিয়ে যায়। তবে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের মতে, এ তথ্য কোথাও না কোথাও সংরক্ষিত থাকার কথা। আর তা যদি না হয়, তবে কৃষ্ণ গহ্বরের ক্ষেত্রে পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র খাটে না, যা অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে। ফলে সৃষ্টি হয় 'ব্ল্যাক হোল ইনফরমেশন প্যারাডক্স'-এর।

এ ধাঁধাঁ সমাধানের পথেই তিনি রয়েছেন বলে ধারণা করছেন হকিং। তিনি জানান, কৃষ্ণ গহ্বরের চারপাশ ঘিরে "নরম চুল" সদৃশ বলয় থাকতে পারে, যাতে কৃষ্ণ গহ্বরে হারিয়ে যাওয়া সবকিছু সম্পর্কে তথ্য জমা থাকে।

মার্কিন দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, "আইফোনের পিক্সেল বা ভিনাইল রেকর্ডের খোদাইয়ের মতোই এই প্যাটার্নের মধ্য দিয়ে হারিয়ে যাওয়া সবকিছু সম্পর্কে তথ্য জমা থাকে।"

তার মানে এই নয় যে কৃষ্ণ গহ্বর থেকে জীবিত অবস্থায়ই বের হয়ে আসা যাবে। কারণ এক্ষেত্রে জমা থাকে তথ্য, শরীর পুরোপুরি অক্ষত থাকা কোনো শর্ত নয়। দৈনিকটি জানায়, এ বিষয়টি অনেকটা পোড়া বইয়ের মতো, যার ছাই থেকে কালি ও লেখার ধরন বের করা গেলেও ঠিক একই বইটিই পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়।