মহাকাশে ফোঁটা প্রথম ফুল ‘জিনিয়া’

বৈরী পরিবেশের মধ্যে মহাকাশ শীর্ষে। আর মহাকাশের ওই বৈরী পরিবেশেই প্রথমবারের মতো ফুল ফোঁটাতে সক্ষম হয়েছেন নভচারীরা। কিন্তু এত উদ্ভিদ থাকতে হঠাৎ ফুল কেন? এ প্রশ্নের উত্তরটি হচ্ছে, মহাকাশে কোন কোন উদ্ভিদ বেড়ে উঠতে সক্ষম, সে বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখছে মার্কিন গবেষণা সংস্থা নাসা। ফুলের বিষয়টিও ওই পরীক্ষারই একটি অংশ।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2016, 03:42 PM
Updated : 20 Jan 2016, 05:32 AM

বিষয়টিকে যত সহজ মনে হচ্ছে, তত সহজে কাজটি করতে পারেননি নভচারীরা। নাসার ওই পরীক্ষায় ফুলজাতীয় উদ্ভিদ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল, জিনিয়া ফুলের বীজ। কারণ যথেষ্ট বৈরী পরিবেশ সহ্য করেও বেঁচে থাকতে পারে এ উদ্ভিদটি। যথাসময়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনেও বীজ পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল এবং নভচারীরাও নাসার নির্দেশ মেনে বীজ বপন এবং সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ শুরু করেছিলেন।

কিন্তু নভচারীদের হতাশ করতে দুই সপ্তাহের বেশি সময় নেয়নি জিনিয়া। উদ্ভিদ ঠিকমতো বেড়ে উঠতে শুরু করলেও, সেগুলো যে শেষ পর্যন্ত টিকবে না, তা দুই সপ্তাহের মধ্যেই বুঝে ফেলেছিলেন নভচারীরা। ঠিক এ সময়টিতে মহাকাশে ফুল ফোঁটানোর দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন নভচারী স্কট কেলি।

কেলি দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমেই ফুল গাছগুলোতে পানি দেওয়ার জন্য নাসা যে সময় নির্ধারণ করে রেখেছিল তা পরিবর্তন করেন। এ বিষয়ে কেলি ২০১৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর নাসাকে বলেন, “যদি আমরা মঙ্গলে যাই এবং আমাদেরই দায়িত্ব থাকে এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করার, তাহলে এ ব্যাপারে যা সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন তা আমাদেরই নিতে হবে, আমরাই ঠিক করব কখন এগুলোতে পানি দেওয়া প্রয়োজন।” উদ্ভিদগুলোর এমনিতেও বাঁচার তেমন কোনো সম্ভাবনা ছিল না। আর তাই হয়তো কেলির বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেনি নাসা।

ফলাফল, সব জিনিয়ার চারা না বাঁচলেও, একটি সুস্থ্য চারার মাধ্যমে মহাকাশে ফুল ফোঁটাতে সক্ষম হয়েছেন কেলি। এ ছাড়া আরও বেশ কিছু জিনিয়া চারা রয়ে গেছে, যেগুলো বেঁচে আছে কিন্তু সেগুলোতে ফুল ফুটবে এমন আশা না করাটাই ভাল। এখন যে চারাগুলো বাঁচেনি এবং যেগুলো বেঁচে আছে সবগুলোকেই আবার পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হবে এবং নাসা সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবে ঠিক কী কারণে ওই উদ্ভিদগুলো মহাকাশের পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারেনি। পরবর্তীতে আবার ২০১৮ সাল নাগাদ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ‘বীজ’ পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে নাসার এমনটাই জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট।