কিশোর গেইমারের হ্যাকার হওয়ার গল্প

অনলাইনে হ্যাকিং টুল এখন সহজলভ্য হয়ে ওঠায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হ্যাক করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়ে গেছে, এমনটাই জানিয়েছে টকটক হ্যাকিং মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর সদ্য জামিন পাওয়া ১৭ বছর বয়সী এক ব্রিটিশ কিশোর।

আজমল বশির শিহাববিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2015, 06:04 PM
Updated : 22 Nov 2015, 06:04 PM

সম্প্রতি স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের নাম গোপন রেখে গেইমার থেকে হ্যাকার হয়ে উঠার গল্প খুলে বলেন ওই কিশোর।

“আমি ১৫ বছর বয়সে যখন অনলাইন কম্পিউটার গেইম খেলতাম তখন এসব শুরু করি। এক্সবক্সে খেলার সময় এমন একজনকে পাই যে সবসময় জিততে চাইত।” আর ওই গেইমারের প্রতিদ্বন্দ্বীদের উপর সাইবার আক্রমণ চালিয়ে তাদের অফলাইন করে গেইম জেতার প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই হ্যাকিংয়ের সঙ্গে তার পরিচয় বলে জানিয়েছে ওই কিশোর।

সাধারণত হ্যাকার দলে ঢুকতে হ্যাকারদের নিজেদের কিছু দক্ষতা প্রমাণ করতে হলেও, কোনো প্রাথমিক প্রমাণ ছাড়াই ছোট এক দলে নেওয়া হয়েছিল এই কিশোরকে। ‘বাগ বাউন্টি’তে বৈধ হ্যাকারদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অর্থের বিনিময়ে তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটি ধরিয়ে দিতে নিয়োগ দিয়ে থাকে। এভাবে প্রথমে বৈধ হ্যাকার হয়েই কাজ শুরু করে সে। কিন্তু একবার এক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চুক্তি অনুযায়ী অর্থ না পেয়ে প্রতারিত হওয়ার পর সাইবার অপরাধের দিকে ঝুঁকে পরে ওই কিশোর।

“বাগ বাউন্টির মাধ্যমে আপনি অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারবেন, কিন্তু একবার যখন কোনো প্রতিষ্ঠান আপনার পাওনা পরিশোধ না করে তথ্য নেওয়ার পর আপনাকে এড়িয়ে যায়; এমন প্রতারণার শিকার হলে আপনি ভাববেন এটা উচিত নয়, আমি যে কাজ করেছি তার জন্য কিছু অর্থের প্রয়োজন। তাই আপনি কিছু ফিরে পাওয়ার জন্য ডেটা অ্যাকসেস করবেন।”

শুধু এই কাহিনিই নয়, কিশোর হ্যাকিংয়ের এমন নানা উদাহরণ এখন পশ্চিমা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীগুলোর জন্য মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চলতি বছর অক্টোবরে টকটক হ্যাকের ঘটনায় ওই কিশোরসহ গত এক বছরে  এক্সবক্স, প্লেস্টেশন, নাসা, কমকাস্ট, এনসিএ আর এওএল হ্যাকের মতো বড় বড় কিছু হ্যাকিংয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত সবাই বয়সে কিশোর।

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) —এর সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ দলের কর্মকর্তা রিচার্ড জোনস মনে করেন, অনলাইনে বিখ্যাত হওয়া আর সহজেই অর্থ উপার্জনের এই ফাঁদ থেকে কিশোরদের দূরে রাখা একটি ‘চ্যালেঞ্জ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। হ্যাকিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার টুলের সহজলভ্যতা আর ব্যবহারের সুযোগ বাড়তে থাকায় সাইবার অপরাধে কিশোরদের জড়িয়ে পরা বাড়ছে বলে মনে করেন তিনি।

তিনি বলেন, “শেষ কয়েক বছরে আমরা দেখেছি, দক্ষতা যাই থাকুক যে কেউ কিনতে পারে এমন সফটওয়্যার টুলের সংখ্যা বেড়ে গেছে।” এ বিষয়ে সব দেশের শীর্ষ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে নতুন ন্যাশনাল সাইবার সেন্টার বানানোর দিকে জোর দেন তিনি।