তিন দশকে উইন্ডোজ

১৯৮৫ সালের নভেম্বরে উইন্ডোজ ১-এর মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম। এবার ৩০ বছরে পা দিল এটি। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এর দীর্ঘ এই যাত্রায় বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই অপারেটিং সিস্টেমের বিবর্তণ।

আজমল বশির শিহাববিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2015, 12:02 PM
Updated : 24 Nov 2015, 01:01 PM

উইন্ডোজ ১, যা দিয়ে যাত্রা শুরু করে এই অপারেটিং সিস্টেমটি। সে সময় কম্পিউটার ইনপুট ডিভাইস হিসেবে মাউসের খুব একটা প্রচলন হয়নি। এমন সময়ে মাউসের উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল হওয়া উইন্ডোজ ১- এর বিশেষত্ব হয়ে ওঠে। আর মাউসকে ব্যবহারকারীদের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে রিভার্সি নামে একটি গেইম আনে মাইক্রোসফট, আর এটি ছিল সম্পূর্ণই মাউসনির্ভর।

উইন্ডোজ ১- এর দুই বছর পর ১৯৮৭ সালের ডিসেম্বরে আনা হয় উইন্ডোজ ২। এর সবচেয়ে বড় দিকটি ছিল দুটি উইন্ডোজ একটি আরেকটিকে ওভারল্যাপ করতে পারত আর এতে আনা হয়েছিল উইন্ডো মিনিমাইজ আর ম্যাক্সিমাইজের সুবিধা। এখন পর্যন্ত উইন্ডোজের বিভিন্ন কনফিগারেশন ঠিক করতে যে কন্ট্রোল প্যানেল ব্যবহার করা হয়, তার সূচনাও হয় উইন্ডোহ ২- এ।

১৯৯০ সালে আসে উইন্ডোজ ৩, প্রথম উইন্ডোজ যা চালাতে হার্ড ড্রাইভের প্রয়োজন ছিল। এই উইন্ডোজে প্রথম এমএস-ডস প্রোগ্রাম চলার সক্ষমতা দেওয়া হয়। আর এর ইন্টারফেইস হয়ে উঠে আরও রঙিন। জনপ্রিয় কার্ড গেইম সলিটায়ারের যাত্রা শুরু হয় এতে।

উইন্ডোজ ১ আর ২- এর কোনো ‘উপ-সংস্করণ’ আনা না হলেও ১৯৯২ সালে উইন্ডোজ ৩.১ বের করার মাধ্যমে দশমিক সংস্করণ চালুর ধারা শুরু হয়। ট্রুটাইপ ফন্টস আনার মাধ্যমে উইন্ডোজকে প্রকাশনার প্ল্যাটফর্ম বানানো হয় এতে। প্রথমবার আনা হয় মাইনসুইপার।

প্রথমবারের মতো স্টার্ট বাটন আর স্টার্ট মেনুর পরিচয় ঘটিয়ে ১৯৯৫ সালের অগাস্টে আনা হয় উইন্ডোজ ৯৫। এতেই শুরু হয় ৩২-বিট, টাস্ক বারের যাত্রা।

১৯৯৮ সালের জুনে আনা হয় উইন্ডোজ ৯৮। এতে আনা হয় আইই ৪, আউটলুক এক্সপ্রেস, উইন্ডোজ অ্যাড্রেস বুক, মাইক্রোসফট চ্যাট, নেটশো প্লেয়ার। পরের বছর এরই দ্বিতীয় সংস্করণে নেটশো প্লেয়ারের জায়গায় আনা হয় উইন্ডোজ মিডিয়া প্লেয়ার ৬.২।

উইন্ডোজ মিলেনিয়াম এডিশন সংক্ষেপে উইন্ডোজ মি (এমই)। এটিই ছিল এমএস-ডসভিত্তিক সর্বশেষ উইন্ডোজ।

২০০০ সালের ফেব্রুয়ারিতে আনা হয় উইন্ডোজ ২০০০। মাইক্রোসফটের ব্যবসা-বান্ধব সিস্টেম উইন্ডোজ এনটি- এর উপর ভিত্তি করে বানানো হয় এটি।

২০০১ সালের অক্টোবরে বের করা হয় উইন্ডোজের অন্যতম সেরা সংস্করণ উইন্ডোজ এক্সপি। এতে মাইক্রোসফটের এন্টারপ্রাইজ লাইন আর অপারেটিং সিস্টেমের কনজিউমার লাইন একই ছাদের নিচে নিয়ে আসা হয়। স্টার্ট মেনু আর টাস্ক বার নতুন করে ভিজুয়াল ইফেক্ট দিয়ে সাজানো হয়। বহুল পরিচিত সবুজ স্টার্ট বাটন, নীল টাস্ক বার, ভিসতা ওয়ালপেপার আর বিভিন্ন ভিজুয়াল ইফেক্টের পরিচয় ঘটানো হয় এতে। এটি ছিল উইন্ডোজের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি সংস্করণ। তিনটি আপডেট আনা হয়েছিল এতে।

২০০৭ সালে জানুয়ারিতে আনা হয় উইন্ডোজ ভিসতা। অ্যাপ চালানোর অনুমতি চাওয়ার সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় এতে বিরক্ত ছিল অনেক ব্যবহারকারীরা।

২০০৯ সালে অক্টোবরে বের করা হয় উইন্ডোজ ৭। ভিসতাকে নিয়ে পাওয়া সব অভিযোগ আর সমস্যা সমাধান করা হয় এতে। অনেক বেশি দ্রুত, স্থিতিশীল আর সহজে ব্যবহারযোগ্য ছিল এটি।

২০১২ সালের অক্টোবরে আনা উইন্ডোজ ৮- এ বাদ দেওয়া হয় স্টার্ট বাটন আর স্টার্ট মেনু, আনা হয় একটি স্পর্শ-বান্ধব স্টার্ট স্ক্রিন। এই স্ক্রিনে এক পলকে উইন্ডোজের সব প্রোগ্রাম আর উইজেটের আইকন দেখে নেওয়ার সুযোগ আনা হয়। এতে ইউএসবি ৩.০ ডিভাইস ব্যবহারের সুবিধা দেওয়া হয়।

২০১৩ সালের অক্টোবরে আনা হয় উইন্ডোজ ৮.১। এতে আনা হয় মাইক্রোসফটের সফটওয়্যার আপডেট। এতে পেছনের দিকে ফিরে যায় মাইক্রোসফট, আবার আনা হয় স্টার্ট বাটন।

২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আনা হয় উইন্ডোজের সর্বশেষ সংস্করণ উইন্ডোজ ১০। এতে ফিরিয়ে আনা হয় স্টার্ট মেনু, প্রচলিত ডেস্কটপ কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য করা হয় আগের চেয়ে উন্নত। উইন্ডোজ ফোন আর ট্যাবলেটের মতো সব উইন্ডোজ প্ল্যাটফর্মকে একত্রে মাথায় রেখে বানানো হয় এটি।