প্রিমিয়ার লিগে প্রথম হারার শঙ্কা পেয়ে বসেছিল আবাহনী লিমিটেডকে। তবে যোগ করা সময়ে নাবীব নেওয়াজ জীবনের জোড়া গোলে শিরোপাধারী শেখ জামালকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়েছে জর্জ কোটানের দল।
Published : 15 Dec 2016, 04:22 PM
নাটকীয় এই জয়ে শিরোপা জয়ের পথেই থাকল আবাহনী। ২০ ম্যাচে ৪৬ পয়েন্ট লিগের সর্বোচ্চ চারবারের চ্যাম্পিয়নদের। বাকি দুই রাউন্ড থেকে ৪ পয়েন্ট পেলে কোনো হিসেব ছাড়াই পঞ্চম লিগ শিরোপা জিতবে আবাহনী। ১৯ ম্যাচে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম আবাহনী।
প্রিমিয়ার লিগে শেখ জামাল ও আবাহনীর প্রথম পর্বের ম্যাচটি ৩-৩ ড্র হয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার দলের সেরা ফরোয়ার্ড সানডে চিজোবা ও নির্ভরযোগ্য মিডফিল্ডার লি টাককে ছাড়া খেলতে নামে আবাহনী। আক্রমণের ধার কমলেও শুরুতে গোলের সুযোগ পেয়েছিল তারাই। দশম মিনিটে আরিফুল ডি-বক্সের মধ্যে বল পেয়েও শট নিতে পারেননি। ৩৩তম মিনিটে জোনাথন ডেইডের ফ্রি-কিক পোষ্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
৪১তম মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার ভালো একটি সুযোগ নষ্ট হয় শেখ জামালের। তপু বর্মনের ভুলে বল পেয়ে যান এমেকা ডারলিংটন। বাঁ দিক থেকে আক্রমণে ঢোকা নাইজেরিয়ার এই ফরোয়ার্ডকে আটকাতে ছুটে আসেন গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেল। তাকে কাটিয়ে ফাঁকা পোস্টে লক্ষ্যভেদে ব্যর্থ হন এমেকা।
দুই মিনিট পর কাঙ্ক্ষিত গোল পায় আবাহনী। জোনাথনের কর্নার প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডার ফেরানোর পর ইমন বাবুর জোরালো ভলি আটকান মাজহারুল ইসলাম হিমেল কিন্তু বল গ্লাভসবন্দী করতে পারেননি। ফিরতি হেডে জুয়েল গোলের আনন্দে ভাসেন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সমতায় ফেরে শেখ জামাল। লিংকনের ফ্রি-কিকে সোহেল ফিস্ট করার পর ডারবো ল্যান্ডিংয়ের জোরালো ভলি ঠিকানা খুঁজে পায়।
৮০তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে দ্রুত আক্রমণে ঢোকা আবাহনীর জুয়েল দুর্বল শটে সুযোগ নষ্ট করার পরের মিনিটে এগিয়ে যায় শেখ জামাল। মালিক মেন্ডিসের লম্বা করে বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিখুঁত চিপে স্কোরলাইন ২-১ করেন এমেকা।
শেষ দিকে আবাহনীর বদলি ফরোয়ার্ড ওয়াহেদ ডি-বক্সের মধ্যে বল পেয়ে তালগোল পাকিয়ে সুযোগ নষ্ট করেন। যোগ করা সময়ে জুয়েলের ক্রসে বল বুক দিয়ে ঠেলে জালে পৌঁছে দিয়ে সমতা ফেরান জাতীয় দলের ফরোয়ার্ড জীবন।
একটু পর জুয়েল-জীবনের নৈপুণ্যে লিগে ত্রয়োদশ জয় তুলে নেয় আবাহনী। বাঁ দিক থেকে জুয়েলের বাড়ানো বল জীবনের নিখুঁত প্লেসিং জালে জড়ানোর পর পরই বেজে ওঠে রেফারির শেষের বাঁশি। আবাহনীর ডাগআউটে শুরু হয় বিজয়-নৃত্য।
২০ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে শেখ জামাল।
যোগ করা সময়ে শেখ জামালের হজম করা দুই গোল নিয়ে সন্দেহ দানা বেঁধেছে। দলটির বিদেশি খেলোয়াড়রা নিজ দলের এক কর্মকর্তার নাম ধরে গালাগাল দিতে থাকেন মাঠ ছাড়ার সময়। শেখ জামালের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড এমেকা চিৎকার করে বলতে থাকেন, “এটাই আমার শেষ ম্যাচ। গুডবাই। কালই দেশে চলে যাব।”
পাতানো ম্যাচের গুঞ্জন তোলা গোলদুটির বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ জামাল কোচ জসিমউদ্দিন জোসী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শেষ ৫ মিনিট আমরা আটকাতে পারিনি। ছেলেরা মনোযোগ হারিয়েছিল।”
“আমি কোনো খেলোয়াড়কে বলিনি, ম্যাচটা ছেড়ে দাও। আপনারা তাদের জিজ্ঞেস করেন, যে কোচ জোসি কাউকে বলেছে গোল ছেড়ে দিতে? এ বিষয়ে আমার আর কিছু বলার নেই।”