ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে ঘরোয়া ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাফুফের ‘পরিকল্পনাহীন’ কর্মকাণ্ডের সমালোচনাও করেন টিপু-মঞ্জু-বাবুল-কায়সাররা।
গত অক্টোবরে ভুটানের কাছে ৩-১ ব্যবধানে হেরে এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে ওঠার স্বপ্ন গুঁড়িয়ে যায় বাংলাদেশের। ওই ম্যাচ টেনে জাতীয় দলের সাবেক কোচ গোলাম সারোয়ার টিপু বাফুফে সভাপতি সালাউদ্দিনের বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন দেখানোর সমালোচনা করেন।
“এমিলি (জাদিহ হোসেন), মামুনুলকে (মামুনুল ইসলাম মামুন) বারবার খেলাতে আমরা বাধ্য হয়েছি। কারণ তাদের কোন বিকল্প তৈরি হয়নি। অথচ বাফুফে সভাপতি স্বপ্ন দেখান ২০২২ সালে বিশ্বকাপ খেলার। আগে তো নিশ্চিত করতে হবে সাফ শিরোপা জেতা। সেটাই হয় না...তিনি দেখান বিশ্বকাপের স্বপ্ন।”
কোচ ঘন ঘন বদলের সমালোচনাও করেন টিপু। বাফুফেতে ‘ওয়ান ম্যান শো’ চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গত কয়েক বছরে দেখলাম ৮ থেকে ১০ জন কোচ এসেছে জাতীয় দলে। তাদের অনেকেই হাই প্রোফাইল কিন্তু তাদের সময় এবং কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত সুবিধা কখনই দেয়া হয়নি।”
সাবেক ফুটবলার হাসানুজ্জামান খান বাবলু বর্তমান ফুটবল নিয়ে গর্ব করার কিছু দেখছেন না। সালাউদ্দিনকে সমালোচনার কাঠগড়ায় তুলে তিনি বলেন, “এখন ফুটবল নিয়ে গর্ব করার মতো কিছু নেই। ফুটবল কফিনে ঢুকে যায়নি, রীতিমত দাফন হয়ে গেছে।”
উত্তরসূরিদের খেলা দেখে ‘লজ্জিত’ সাবেক ফুটবলার সামসুল আলম মঞ্জু। তার কথায় উঠে আসে ধার-দেনার দায়ে বাফুফের জর্জরিত থাকার বিষয়টি। সহযোগিতার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
“একজন সাবেক ফুটবলার হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে লজ্জিত। গত নির্বাচন ছিল টাকার নির্বাচন। নির্বাচনের সময় আমরা যা যা বলেছিলাম, এখন তাই ঘটছে। ফুটবল উন্নয়নে এই বাফুফের কী অবদান? ২০ কোটি টাকা লোন। যারা আছেন তারা না পারলে সহায়তা চান, আমরা প্রস্তুত।”
জাতীয় দলের সাবেক ডিফেন্ডার হাসান আল মামুন সংবাদ সম্মেলনে বাফুফের পরিকল্পনা না থাকার বিষয়টি তুলে ধরেন।
“বিকেএসপিগুলোর দিকে নজর দিলেও হতো। ভাল মানের কোচ যদি থাকতো, তাহলে বিকেএসপি থেকেই তো অনেক ফুটবলার উঠে আসতো। পরিবর্তন আনার জন্য এটাই সঠিক সময়।”
সাবেক গোলরক্ষক ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক বলেন, “আমার দাবি ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে হয় সরে দাঁড়ান, নয়তো এমন কিছু করুন, যাতে ফুটবলের সত্যিকারের উন্নতি হয়। এভাবে চলতে পারে না।”
কেবল সমালোচনা নয়, সালাউদ্দিনকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনজুর হোসেন মালু।
“এই বাফুফেতে জবাবদিহিতা নেই। ফুটবলের এই অধঃপতনের দায় নিতে হবে সবাইকে। আমি নিজেও অস্বীকার করছি না। আমার মনে হয় সবাইকে নিয়ে উদ্যোগ নিয়ে ভবিষ্যতের পাথেয় খুঁজে বের করতে হবে।”