‘ভুটান ম্যাচে সবাই যেন সেরাটা দেয়’

গত ডিসেম্বরে গায়ে উঠল জাতীয় দলের জার্সি। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আশরাফুল ইসলাম রানার বাহুতে অধিনায়কের বন্ধনী। তাও আবার এমন সময়ে, যখন মালদ্বীপের কাছে প্রীতি ম্যাচে ৫-০ গোলের ভরাডুবি, নিয়মিত অধিনায়ক মামুনুল ইসলামের জাতীয় দলকে বিদায় বলে দেওয়া, সামনে ভুটানের বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সাহস হারাচ্ছেন না রানা। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে আলাপচারিতায় নতুন অধিনায়ক জানালেন, ভুটানকে হারানোই তার প্রথম লক্ষ্য।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Sept 2016, 02:54 PM
Updated : 5 Sept 2016, 02:54 PM

হঠাৎ অধিনায়ক হওয়াটা কেমন লাগছে? এত বড় দায়িত্ব এত দ্রুত কাঁধে পড়বে, ভেবেছিলেন কি?

আশরাফুল ইসলাম রানা: সত্যিই এতটা আশা করিনি। কল্পনা করিনি। মানসিকভাবে প্রস্তুতও ছিলাম না। যখন জাতীয় দলের অধিনায়ক হওয়ার খবরটা পেলাম, তখন খুবই ভালো লেগেছে। এটা অবশ্যই অনেক বড় ব্যাপার। তবে দায়িত্ব যখন পেয়েছি, তখন শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করব ঠিকঠাক পালন করার।

অধিনায়ক হওয়ার খবর পাওয়ার পর কিছু করার সময়ই পাইনি। কাউকে ফোনও করতে পারিনি। খবরও পেলাম, সংবাদ সম্মেলনে চলে এলাম।

বাংলাদেশের মতো দলের গোলপোস্ট আগলে রাখাটা তুলানামূলকভাবে চাপের। এর সঙ্গে অধিনায়কের দায়িত্ব। চাপটা কি বেশি অনুভব করছেন?

রানা:
আসলে আমি চাপ কখনই নেইনা। চাপ বলতে আমার কাছে কিছু নেই। যখন যে ম্যাচটা সামনে আসে, তখন সেটা নিয়ে ভাবি। সেটার দিকে পুরো মনোযোগ দেই। এখন আমার দৃষ্টি ভুটান ম্যাচের দিকে।

মালদ্বীপে ৫-০ গোলে হেরে আসা প্রীতি ম্যাচে ডিফেন্ডারদের ভুল ছিল দৃষ্টিকটু। কোচও এ কথা বলেছেন। দলের রক্ষণভাগ নিয়ে অধিনায়ক হিসেবে আপনার ভাবনাটা কি?

রানা: আসলে আমাদের দেশে যারা আছে, তাদের পেছনে আমাদের খেলতে হয়। আসলে তাদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। এটার ব্যাপারে কোচই সব জানেন। মালদ্বীপ ম্যাচে আমাদের ভুলত্রুটি ছিল। সেগুলো নিয়ে কাজ করছেন। আশা রাখি আমরা কাল নির্ভুল একটা ম্যাচ খেলব।

স্ট্রাইকিং নিয়েও তো দুর্ভাবনা অনেক দিনের। কদিন আগে এএফসি কাপে ভুটানে খেলতে গিয়ে দলের নির্ভরযোগ্য স্ট্রাইকার শাখাওয়াত হোসেন রনি পেনাল্টি মিস করেছেন।

রানা:
আসলে পেনাল্টি পেনাল্টিই। এটা গোলরক্ষকের ফেভারে থাকতে পারে, স্ট্রাইকারের পক্ষেও থাকতে পারে। স্ট্রাইকার ভালো কিক নিলে কোনো গোলরক্ষকই আটকাতে পারবে না। তবে পেনাল্টির ক্ষেত্রে স্ট্রাইকারের ওপর চাপটা বেশি থাকে।

ভুটান ম্যাচের জন্য যে দলটি পেলেন, সেখানে মামুনুল ইসলাম, নাসিরউদ্দিনের মতো নির্ভরযোগ্য অনেকে নেই।

রানা: এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাচ্ছি না। যারা দলে আছে, যারা খেলবে, আমার বিশ্বাস, তাদের একটাই লক্ষ্য থাকবে, নিজেদের শতভাগ দেওয়ার এবং জেতার।

দলের কেউ মানসিকভাবে চাপে নেই। আমার মনে হয়, যারা নতুন, তাদের জন্য এটা বাড়তি পাওয়া। আমার মনে হয় তারা দারুণ শিহরণ অনুভব করছে এবং যদি তারা আগামীকাল খেলার সুযোগ পায়, তাহলে শতভাগ দেবে। চেষ্টা করবে সুযোগটা কাজে লাগাতে।

অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা দল এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপের মূল পর্বে উঠেছে দাপটের সঙ্গে। অধিনায়ক কৃষ্ণা রানী সরকার আপনাদের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন। মেয়েদের সাফল্য অনুপ্রেরণা নাকি চাপের?

রানা:
মেয়েরা ভালো করছে, এটা আমাদের জন্য ভালো। ক্রীড়াঙ্গণের জন্য ভালো। তো এটা আমাদের জন্য আলাদা অনুপ্রেরণা হতে পারে। কেননা, ঘরের মাঠে ওরা পাঁচ পাঁচটা ম্যাচ জিতল। আমরা চাইব মেয়েদের এই উদ্দীপনা নিয়ে ভুটান ম্যাচে ভালো করার।

জাতীয় দল নিয়ে চারদিকে সমালোচনা চলছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীও হতাশার কথা জানিয়েছেন…

রানা: গত দুই বছর আমাদের পারফরম্যান্স ‍খুব খারাপ। মিডিয়া কিংবা আমজনতা, আমাদের ওপর সবার আত্মবিশ্বাস কমে গেছে। যদি এর মধ্যে আমরা তিন-চারটা ম্যাচ জিততে পারতাম, তাহলে আত্মবিশ্বাস উঁচুতে থাকত। ফুটবলকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আমাদের এ মুহূর্তে যে কোনো মূল্যে জয় দরকার।

ভুটানের বিপক্ষে মঙ্গলবারের ম্যাচ সামনে রেখে দলের প্রতি আপনার বার্তা কি থাকবে?

রানা: যে এগারো জন খেলবে, তারা যেন যেকোনো ভাবে শতভাগ দেয় এবং যেকোনো মূল্যে ম্যাচটা বের করে আনে।