উত্তেজনা ছড়িয়ে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ ড্র

ঘরোয়া হকি ‍দুই ঐতিহ্যবাহী দল আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ম্যাচটি ২-২ ড্র হয়েছে। দুই বিদেশি আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত গ্যালারিতে ছড়িয়েছে উত্তাপ; ওই সিদ্ধান্তের কারণে খেলা ২০ মিনিট বন্ধও থাকে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 May 2016, 02:12 PM
Updated : 29 May 2016, 02:12 PM

মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে রোববার নবম মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে এগিয়ে যায় মোহামেডান। মোহাম্মদ ইমরানের বাড়ানো বল নিখুঁত শটে লক্ষ্যে পৌঁছে দেন তাসওয়ার আব্বাস। প্রথম পিসি (পেনাল্টি কর্নার) কাজে লাগাতে না পারলেও চতুর্দশ মিনিটে পিসি কাজে লাগিয়ে সমতায় ফেরে আবাহনী। তৌসিক আরশাদ দারুণ ফ্লিকে মোহামেডান গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন।

৩০তম মিনিটে এগিয়ে যায় প্রিমিয়ার ডিভিশন লিগের সব শেষ মৌসুমে ঊষা ক্রীড়া চক্রের সঙ্গে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হওয়া আবাহনী। মোহাম্মদ ইরফানের লম্বা পাস ধরে রিভার্স হিটে লক্ষ্যভেদ করেন সাফকাত রসুল। চার মিনিট পর তৌসিক আরশাদের পিসি গোললাইন থেকে রিজওয়ান ফেরালে ব্যবধান বাড়িয়ে নিতে পারেনি দলটি।

দুই বিদেশি আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিরতির সময় গ্যালারিতে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। এক পর্যায়ে মাঠেও ঢুকে পড়েন মোহামেডানের সমর্থকরা। দেরিতে শুরু হওয়া দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিটে মিনিটে সাফকাতের শট রুখে দিয়ে মোহামেডানকে ম্যাচে রাখেন গোলরক্ষক জাহিদ হোসেন।

৪৮তম মিনিটে সমতায় ফেরা গোল পেয়ে যায় মোহামেডান। সালমান হোসেনের বাড়ানো বল ফ্লিকে ঠিকানায় পৌঁছে দেন তাসওয়ার আব্বাস। চার মিনিট পর ওমর ভুট্টোর তৈরি করে দেওয়া ভালো একটি সুযোগ নষ্ট করেন কামরুজ্জামান; বলে স্টিক ছোঁয়াতে পারলেই হত গোলটি।

ফাইল ছবি

ম্যাচে সমতা ফেরার পর সালমানের হিট পোস্টের ওপর দিয়ে উড়ে গেছে। আরশাদ ও শাকিল আব্বাসিও পারেননি আবাহনীকে এগিয়ে নিতে। ৬৯ মিনিটে আবাহনীর বিপক্ষে সিঙ্গাপুরের রেফারি হরি শরনের পেনাল্টি কর্নারের সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠের মধ্যে নতুন করে শুরু হয় হট্টোগোল। সিদ্ধান্ত নিয়ে আবাহনী আপত্তি জানালে অপর আম্পায়ার খালেদ হোসেন শরণের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত বাতিল করেন। হংকংয়ের রেফারির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যায় মোহামেডানের খেলোয়াড়রা।

প্রায় ২০ মিনিট পর হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাদেকের প্রচেষ্টায় মাঠে ফেরে মোহামেডান। তবে শেষ দিকে কেউ আর গোল না পাওয়া সমতায় শেষ হয় দুই দলের দ্বৈরথ।

লিগে পাঁচ ম্যাচে এটি আবাহনীর দ্বিতীয় ড্র। ১১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে মাহবুব হারুনের দল। সমান ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় মোহামেডান। টানা পাঁচ জয়ে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে ঊষা।

ম্যাচের ফলের চেয়ে আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত নিয়েই আলোচনা-সমালোচনা বেশি হয়েছে। পেনাল্টি কর্নার বাতিল হওয়ার ব্যাখ্যায় আবাহনী কোচ হারুণ জানান, পিসি নিয়ে আপত্তির কথা রেফারিকে বলার পর দ্বিতীয় আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলে তিনি সিদ্ধান্ত বদলেছেন।

মোহামেডান কোচ হায়দার জামাল একমত হতে পারেননি প্রতিপক্ষ কোচের সঙ্গে। তার প্রশ্ন, “কাছে থেকে যদি তিনি (শরন) বুঝতে না পারেন, তাহলে এত দূর থেকে দ্বিতীয় আম্পায়ার সেটা কি করে বুঝলেন?”

দেশি আম্পায়ারদের নিয়ে ক্লাবগুলোর অভিযোগের কারণে বিদেশ থেকে আম্পায়ার নিয়ে এসেছে হকি ফেডারেশন। কিন্তু বিতর্ক ঠিকই পিছু নিল। এই বিতর্ক থেকে মুক্তি পেতে মোহামেডানের ফরোয়ার্ড রাসেল মাহমুদ জিমি দাবি জানালেন, “এসব বিষয় এড়াতে রেফারেল পদ্ধতি থাকা দরকার। ম্যাচের ভিডিও থাকা দরকার।”