সিলেট ফুটবল একাডেমি নিয়ে ‘অন্ধকারে’ সালাউদ্দিন

অনেক স্বপ্ন নিয়ে শুরু হওয়া সিলেট ফুটবল একাডেমি বন্ধ হয়ে গেছে বছর খানেক আগে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনও মুখ থুবড়ে পড়া একাডেমির নতুন করে শুরুর সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী হতে পারছেন না।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2016, 02:53 PM
Updated : 26 May 2016, 09:22 AM

ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে মঙ্গলবার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব কাজী আখতার উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠকের পর সিলেট একাডেমি নিয়ে হতাশার কথা জানান সালাউদ্দিন। অবশ্য প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ও বাংলাদেশ সুপার লিগের (বিএসএল) জন্য ভেন্যু পাওয়ার আশ্বাস পাওয়ার কথাও জানান বাফুফে সভাপতি।

২০১১ সালের ডিসেম্বরে সিলেট বিকেএসপিতে ফুটবল একাডেমি নিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তি হয় বাফুফের। একাডেমির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করতেই লাগে তিন বছর। ২০১৪ সালের নভেম্বরে শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্পন্ন কোচ, পর্যাপ্ত চিকিৎসকের অভাব, মাঠ সংকট, পানিহীন সুইমিং পুল-আনুসাঙ্গিক আরও অনেক অসঙ্গতি নিয়ে শুরু হয় স্বপ্নের একাডেমি। এত ঘাটতি নিয়ে শুরু হওয়া উদ্যোগ মুখ থুবড়ে পড়ে ২০১৫ সালের অগাস্টে; মাত্র নয় মাসের মাথায়!

নয় মাস ঠিকঠাক চালাতে না পারা একাডেমিকে লম্বা সময়ের জন্য চাওয়ার কথা আগেও একাধিকবার বলেছেন সালাউদ্দিন। এদিনের বৈঠকেও বলেছেন। কিন্তু তার চাওয়া পূরণের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে এনএসসির সচিব অশোক কুমার বিশ্বাসের কথায়।

“এ বিষয়ে বিকেএসপির গভর্নিং বডি সিদ্ধান্ত দেবে। কিন্তু তাদের কথায় আমি যতটুকু বুঝেছি, তারা চায় সেখানে ফুটবল (বাফুফে) তাদের কার্যক্রম চালাক; বিকেএসপির কার্যক্রমও চলুক।”

কিন্তু সালাউদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, একই সঙ্গে দুটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালানো সম্ভব নয়।

“বিকেএসপি ও ফুটবল একাডেমি এক সঙ্গে চালানো যায় না। এটা নিয়ে আমি আর বিস্তারিত বলতে যাচ্ছি না। উনাদের ধারণা নাই যে, ফুটবলটা যেকোনো খেলার সঙ্গে মেলানো যায় না। ”

“বিকেএসপির বিষয়টা ঘোলাটে (অবস্থায়) আছে। এখানে আমার কথা হচ্ছে, আমাকে দিতে হলে ১৫ বছরের জন্য দিতে হবে। ১৫ বছরের জন্য না দিলে আমার কাজে লাগবে না। কিন্তু ওনাদের যে ধারণা, তা আমিও বুঝতে পারছি না এটা কোথায় যাবে। তো বিকেএসপি নিয়ে আর দু-চারটা মিটিং লাগবে। এটা যে কিছু একটা হবে, এ নিয়ে আমি আসলে আশাবাদী না।”

মঙ্গলবারের বৈঠকের আলোচনায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ও বিএসএলের জন্য ভেন্যু পাওয়া ও ভেন্যুর প্রয়োজনীয় সংস্কার। ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম ও চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামসহ সিলেট, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, বরিশাল, খুলনা, গোপালগঞ্জ ও কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে খেলা আয়োজনের আশ্বাস পাওয়ার কথা জানান সালাউদ্দিন।

“ছয় বছর ধরে আমরা ভেন্যু নিয়ে চেষ্টা করছি। আজকে আমি খুব আশাবাদী। আমাদের চাওয়ার বেশি কিছু ছিল না। কয়েকটা স্টেডিয়ামে কিছু কিছু সংস্কারের দরকার ছিল, তারাও সম্মত হয়েছেন এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কাজগুলো দ্রুত করে দেওয়ার।”

জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের (ডিএফএ) সঙ্গে জেলা ক্রীড়া সংস্থার (ডিএসএ) বিরোধ নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান সালাউদ্দিন। লিগ ও বিএসএলের জন্য ভেন্যু পেতে প্রয়োজনে এনএসসির সঙ্গে মুনাফা বন্টনের শর্তেও রাজি থাকার কথা জানান তিনি।

“স্টেডিয়াম এনএসসির। অবকাঠামো তাদের করতে হবে। তারা বলেছে, কোনো রেভিনিউ এলে তা শেয়ার করতে। আমিও বলেছি, রেভিনিউ এলে তা ভাগাভাগি করতে আমার সমস্যা নাই। ওনারা যদি মেইন্টেনেন্স রেখে আমাকে দিতে চায়, সমস্যা নাই। আমার হাতে যদি মেইন্টেনেন্স দিয়ে দেয়, তবু সমস্যা নাই। এটা নিয়ে মিটিংয়ে বসতে হবে।”