দুঃসময়ে একটু স্বস্তি জাহিদের

বড্ড দুঃসময়ের মধ্যে খুশির খবরটি পেলেন জাহিদ হোসেন; উঠে গেছে নিষেধাজ্ঞা। এখন জাতীয় দলের জার্সিতে ফেরার পালা। এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে উঠতে প্লে-অফ ম্যাচের জন্য প্রস্তুতিতে নেমে পড়ার অপেক্ষা। কিন্তু জাহিদ দোটানায়। এক দিকে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ে যাওয়া পিতার পাশে থাকার দায়িত্ব, অন্যদিকে জাতীয় দলের প্রয়োজনে সাড়া দেওয়া। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ২৭ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড জানালেন, এই মুহূর্তে কোন দিকে যাবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি নিজেও।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2016, 12:42 PM
Updated : 23 May 2016, 12:42 PM

নিষেধাজ্ঞা তো উঠে গেল আপনার…

জাহিদ: খুব কষ্টের মধ্যে আছি। এর মধ্যে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার খবরটা পেলাম; ভালো লাগছে। নিষিদ্ধ হওয়ার পর চারপাশের অনেকে অনেক কথা বলেছে। কেউ সান্ত্বনাও দিয়েছে। এখন পরিবারের সবাই খুশি। কিন্তু আপনারা তো জানেন, অসুস্থ আব্বাকে নিয়ে এ মুহূর্তে কী ‍দুঃসময়ের মধ্যে আছি আমি।

আপনার বাবার কি অবস্থা এখন?

জাহিদ: আগামী বুধবার ভারতে আব্বাকে নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। মুম্বাইয়ে আব্বার চিকিৎসা করাবো ভেবে রেখেছি। আমিও সঙ্গে যাব। সবাই আমার আব্বার জন্য একটু দোয়া করবেন।

ভারতে গেলে তো তাজিকিস্তানের বিপক্ষে প্লে-অফ ম্যাচে খেলা কঠিন হয়ে যাবে। ২ জুন প্রথম লেগের ম্যাচ; ৭ জুন ফিরতি লেগের ম্যাচ।

জাহিদ: আব্বাকে নিয়ে ভারতে গেলে ওখানে হয়ত ১৫-২০ দিনও থাকতে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে খেলার সম্ভাবনা খুবই কম থাকবে। কোন দিকে যাব, এটা আমি আসলে নিজেও বুঝতে পারছি না। এদিকে আব্বার পাশে থাকার দরকার; আবার দেশের প্রয়োজনটাও আছে। আব্বাকে নিয়ে যদি তাড়াতাড়ি ফিরতে পারি, তাহলে হয়ত খেলার সুযোগটা থাকবে।

এসব নিয়ে কি বাফুফে বা টিম ম্যানেজারের সঙ্গে কথা হয়েছে?

জাহিদ: পরিস্থিতি তো আপনিও বুঝতে পারছেন। এ রিপোর্ট, সে রিপোর্ট নিয়ে এদিক-ওদিক দৌড়াচ্ছি। সবার সঙ্গে ঠিকঠাক যোগাযোগ করতে পারছিও না। তবে আব্বার অসুস্থতা নিয়ে অনেকের সঙ্গে কথা হয়েছে। বাফুফের কর্মকর্তা, টিম ম্যানেজার খোঁজ নিয়েছেন। আমার দল চট্টগ্রাম আবাহনীর কর্মকর্তা, বিশেষ করে সভাপতি (তরফদার রুহুল আমিন) নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন। আব্বাকে দেখতে অনেকবার হাসপাতালেও এসেছেন তিনি। এই দুঃসময়ে অনেককেই পাশে পেয়েছি।

প্রশ্ন: কোচের (লোডভিক ডি ক্রুইফ) সঙ্গে দলে ফেরা নিয়ে কথা হয়েছে কি?

জাহিদ: না; তার সঙ্গে কথা হয়নি। তবে শুনেছি, দলের দায়িত্ব নিয়ে ক্রুইফ আমাকে ফেরানোর চাওয়ার কথাটা বলেছেন। আমিও ফিরতে চাই। খেলতে চাই। কিন্তু আব্বার যে পরিস্থিতি, আমরা তার পাশে থাকলে তিনি একটু ভালো থাকেন, হাসিখুশি থাকেন। আমি এখন কি করব বুঝে উঠতে পারছি না।

জাতীয় দলে ফেরার জন্য দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে চিঠি দিলেন। কিন্তু অতীতে তো একাধিকবার নিজেকে নির্দোষ বলেছেন।

জাহিদ: এখন আর ওসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই না। আমার আব্বা একজন মুক্তিযোদ্ধা। তার রক্ত আমি পেয়েছি। আমি কি করতে পারি, কি পারি না, সেটা সবাই জানে। আমিও জানি। তবে ওই সময়ে কিছু ভুল হয়ে গিয়েছিল এবং তা স্বীকারও করেছি। এখন আর ওসব নিয়ে ভাবতে চাই না। সামনের দিকে তাকাতে চাই। মাঠে ফিরতে চাই। গোল করতে চাই। আব্বা যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। আমিও যেন মাঠে ফিরতে পারি তাড়াতাড়ি।