‘অস্ট্রেলিয়া আমাদের হালকাভাবে নেবে না’

চোট কাটিয়ে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের দলে ফিরেছেন বাংলাদেশের জাহিদ হোসেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে তিনি যেমন কৌশলী, তেমনি রোমাঞ্চিত। অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী দল হলেও বাংলাদেশকে তারা হালকাভাবে নেবে না বলেই মনে করেন শেখ রাসেলের এই ফরোয়ার্ড।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 August 2015, 01:12 PM
Updated : 25 August 2015, 01:12 PM

ভালো খেলার প্রত্যাশায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জাহিদ জানালেন, তার মতো সিনিয়রদের আরও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে।

গত ফেব্রুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ফাইনালে মিনিট দশেক পরই চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যান জাহিদ। গত জুনে বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তানের বিপক্ষেও খেলা হয়নি তার। চোট আর পেটের পীড়ায় শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের হয়ে লিগেও অনিয়মিত ছিলেন তিনি।

লিগে খেলা ম্যাচগুলোয় অবশ্য আলো ছড়িয়েছেন জাহিদ। শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র ও আবাহনীর রক্ষণ ভেঙে গোল করা ২৭ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় এখন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে নতুন শুরুর স্বপ্ন দেখছেন।

রোমাঞ্চ এবং প্রতিশ্রুতি

পার্থে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপের এশিয়া অঞ্চলের বাছাইয়ে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই প্রথম এশিয়ান ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। জাহিদও তাই অন্যরকম এক রোমাঞ্চ অনুভব করছেন।

ফাইল ছবি

“এই প্রথম ওদের বিপক্ষে খেলব আমরা। আমিও প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়া যাব; অবশ্যই রোমাঞ্চিত। ওরা অনেক ভালো দল। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে খেলে এবং এটা অবশ্যই অনেক বড় ব্যাপার। তবে অস্ট্রেলিয়া শক্তিশালী হলেও ওরা আমাদেরকে হালকাভাবে নেবে না; ভালোভাবেই নেবে।”

ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে অস্ট্রেলিয়া ৬১তম আর বাংলাদেশ ১৭০তম। বিশ্বকাপের চারটি আসরে খেলা অস্ট্রেলিয়া এশিয়া কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নও। তবে টিম ক্যাহিলদের বিপক্ষে ভালো লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতিই দিলেন শেখ রাসেলের এই ফরোয়ার্ড।

“সবাইকে বলব দেশের জন্য লড়াই করতে হবে। ওদের যা থাকে থাকুক, আমাদেরও আশা আছে। ওদের অনেক খেলোয়াড় দেশের বাইরের লিগে খেলে; ওরা অভিজ্ঞ কিন্তু আমরা এগারোজনও লড়াই করব।”

অস্ট্রেলিয়াকে আটকাতে বড় ভরসা সিনিয়ররা

বাছাই পর্বে এখন পর্যন্ত খেলা একমাত্র ম্যাচে কিরগিজস্তানকে ২-১ গোলে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে, কিরগিজস্তানের কাছে ৩-১ ব্যবধানে হারের পর বাংলাদেশ ১-১ গোলে ড্র করে তাজিকিস্তানের বিপক্ষে। গ্রুপ টেবিলে তলানিতে থাকলেও বাংলাদেশের এই ফরোয়ার্ড আশা হারাচ্ছেন না; বরং তার মনে হচ্ছে অভিজ্ঞরা কাঁধে কাঁধ মেলালে ভালো কিছু মিলতেও পারে।

ফাইল ছবি

“আমরা যারা সিনিয়র মামুন, এমিলি, আমি-আমাদের একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা আসলে ভালো ফল চাই। খারাপও হতে পারে কিন্তু আমাদের চেষ্টা থাকবে ভালো করার।”

“অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আসলে ব্যক্তিগত কোনো লক্ষ্য নেই। এসব ম্যাচে একা কিছু করা যাবে না। একটা দল হয়ে লড়াই করতে হবে। আমাদের হারানোর কিছু নেই। ভালো ফুটবল খেলব; এটাই প্রত্যাশা”, অস্ট্রেলিয়ার দ্রুত গতির মাঠে পাসিং ফুটবল খেলার কথা জানিয়ে আরও যোগ করেন তিনি।

জুয়েল থাকায় প্রতি-আক্রমণে সাফল্য পাওয়ার আশাবাদ

ক’দিন আগে শেষ হওয়া ২০১৪-১৫ লিগ মৌসুমে বিদেশি ফরোয়ার্ডদের ভিড়ে আলো ছড়িয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার এনামুল হক ও মোহামেডানের জুয়েল রানা। লিগে ১৩ গোল করা এনামুল ও ৭ গোল করা জুয়েল থাকায় বাছাই পর্বের বাংলাদেশ দলের আক্রমণভাগের শক্তি বেড়েছে।

ফাইল ছবি

অনেকের মতে দুই উইংয়ে জুয়েল ও জাহিদ থাকলে বাংলাদেশের আক্রমণের পথটা আরও সহজ হয়ে যায়। জাহিদেরও বিশ্বাস, গতিময় জুয়েল থাকায় প্রতি-আক্রমণে যাওয়ার পথটা প্রশস্ত হবে।

আমাদের বিপক্ষে ওরা (অস্ট্রেলিয়া) আক্রমণ করতে গিয়ে অনেক ওপরে উঠে খেলবে। ফলে সুযোগ আমাদের সামনেও আসবে এবং সুযোগটা কাজে লাগানোর চেষ্টা থাকবে। জুয়েলের গতি আছে এবং ও থাকায় দলের জন্য ভালো হয়েছে।”

চোট কাটিয়ে প্রত্যয়ী হয়ে ওঠা

চোটের কারণে মাঠে নিয়মিত থাকতে না পারার হতাশা জাহিদকে বেশ পোড়ায়। তবে সুস্থ হয়ে দেশের জার্সি গায়ে তোলার আনন্দে প্রত্যয়ী কণ্ঠে দিলেন অস্ট্রেলিয়ার মাঠে সব ভুলে সেরাটা নিংড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি।

“অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। কিন্তু যখন মাঠে নামি, তখন মনে হয় ওরাও জাতীয় দল; আমরাও জাতীয় দল। ওদেরকে আমরা ছাড়ব কেন? তখন আসলে আমরা অন্য সব কিছু ভুলে যাই।”