প্রবাসীদের এনআইডি কার্ড দিতে ‘বিশেষ আদেশ’

প্রবাসী যারা দেশে আসবেন তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে বিশেষ আদেশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2017, 11:59 AM
Updated : 22 August 2017, 11:59 AM

মঙ্গলবার গাজীপুরের কাপাসিয়ায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, যারা বিদেশে থাকেন তারা যদি দেশে আসেন, ভোটার হতে চান, তাদের প্রাধান্য দিয়ে দেশে থাকতে থাকতে তাদের হাতে যাতে এনআইডি কার্ড তুলে দেওয়া যায় তার জন্য বিশেষ আদেশ দেওয়া হবে। 

নির্বাচনের সময় প্রয়োজন হলে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

“নির্বাচনের সময় যদি রাজনৈতিক দলগুলোর বিশ্লেষণ থাকে যে সেনা মোতায়েন জরুরি, আমরা যদি দেখি যে সেনা মোতায়েন করা ছাড়া নির্বাচন করা সম্ভব নয়, তখন সেনা মোতায়েনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব। এখনও সময় আসেনি।”

আমাদের দেশে ৬০ ভাগ লোক যুবক, যাদের বয়স ৪০ বছরের নীচে। এটা একটা সম্পদ, যা পৃথিবীর বহু দেশে নেই বলে মন্তব্য করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

তিনি বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমাদের দেশে এসে বলেছিলেন, তার দেশে আছে ৫০ ভাগের কাছাকাছি। বাংলাদেশে আছে ৬৫ ভাগের উপরে। তারা হলেন দেশের শক্তি।”

তিনি বলেন, ২০০০ সালে যাদের জন্ম আজকে তারা ভোটার হয়ে যাবে। যখন তাদের বয়স ১৮বছর পেরিয়ে যাবে, তখন তারা এ কর্মযজ্ঞে প্রবেশ করবে।  

আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি সমৃদ্ধ স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে শুধু ভোট দেবেন তা নয়, এর মধ্যে ২৮টি সেবা রয়েছে। এ থেকে যাতে কেউ বঞ্চিত না হন সে ব্যপারে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করেন তিনি।

তার স্মার্ট কার্ডটিও পাঁচবার পরিবর্তন করতে হয়েছে জানিয়ে হুদা বলেন, “এটা হতে পারে, তা আপনারা শোধরিয়ে নেবেন। কারণ প্রথমবার এটি তৈরিতে যারা ছিলেন তারা মাত্র সাত দিনের ট্রেনিং নিয়ে ওই কাজে যুক্ত হন।”

বর্ষার জন্য আগামীতে ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রম প্রতিবছরের জুলাইয়ের পরিবর্তে সেপেপ্টম্বর কিংবা সম্ভব হলে মার্চ থেকে শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “নির্বাচন কমিশনের সদস্যবৃন্দ যারা শপথ গ্রহণ করেছেন সেই শপথের প্রতি পূর্ণাঙ্গ আস্থা, পূর্ণাঙ্গ মর্যাদা এবং শ্রদ্ধা রেখে আমরা নির্বাচন করব, যাতে কোনো রকমে সুষ্ঠু নির্বাচনে বত্যয় না ঘটে।”

এজন্য তিনি দেশের মানুষের সহযোগিতা চেয়েছেন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়ে তিনি বলেন, সংবিধানে বলা আছে, যারা যুদ্ধ অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন, আদালতের মাধমে প্রমাণিত হয়েছেন, তাদের ভোটার করবেন না, তারা ভোটার হতে পারবেন না, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

সকল দলের সঙ্গে নির্বাচন বিষয়ে সংলাপ শুরু ককঅ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকলের ব্যক্তিবর্গ ও সংগঠনের সঙ্গে সংলাপ হবে। যদি সব দল  নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়ে যাবে। আমি আশাবাদী সব দল নির্বাচনে অংশগহণ করবে।”

নির্বাচনে না ভোটের বিষয়ে তিনি বলেন, “না ভোটের বিষয়ে বলেছে অনেকে। এটা আমাদের বিষয় নয়। এটা আইনের বিষয়, সংসদের বিষয়, সরকারের বিষয়। এটা আমরা সিদ্ধান্ত দিতে পারব না।”

কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ভোটার তালিকা হালনাগাদ এবং রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

মতবিনিময় সভা শেষে স্থানীয় হাইলজোর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন তিনি।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মন্ডল, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তারেকুজ্জামান, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আমানত হোসেন খান, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউর রহমান লস্কর মিঠু প্রমুখ।