বেনাপোল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, ভারতের পেট্রাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টের ইমিগ্রেশনে জনবল কম থাকায় পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে তাদের ধীরগতির কারণে শ্যন্য রেখায় প্রতিদিন শতশত যাত্রী ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
যাত্রীরা বলছেন, ভারতীয় ইমিগ্রেশনে কাগজপত্র যাচাইয়ে অনেক সময় নেওয়া হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করলে ‘লালসিল’ মেরে ভিসা মিলবে না বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি ওমর শরীফ বলেন, “আগে প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার যাত্রী পারাপার করলেও এখন তা বেড়ে নয় থেকে দশ হাজারে দাঁড়িয়েছে।”
“যাত্রীদের সেবা দিতে ঈদের ছুটির মধ্যেও আমরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করছি।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনে ডেস্ক বাড়ানো হলেও ভারতীয় ইমিগ্রেশন জনবল বাড়ায়নি। তাদের কাজের ‘ধীরগতির’ কারলে শূন্য রেখায় যাত্রীজট বাড়ছে।”
এদিকে বৃহস্পতিবার সরেজমিনে বেনাপোল চেকপোস্টে গিয়ে দেখা যায়, ভারতীয় ইমিগ্রেশন কাস্টমস পার হয়ে নোম্যান্সল্যান্ডে চক্রাকৃতির দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন শত শত যাত্রী।
ওই লাইন বেনাপোল কাস্টম ও ইমিগ্রেশন ভবনের সামনে প্রধান সড়কের প্রায় এক কিলোমিটার দূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।
এ অবস্থায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ক্লান্ত হয়ে উঠছেন যাত্রীরা। বিশেষ করে রোগী, বৃদ্ধ ও শিশুদের ভোগান্তি বেশি। প্রখর রোদে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
ভারতগামী নারায়ণগঞ্জের সুলাইমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে যাত্রী হয়রানি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। সেখানে যাত্রীদের নানাভাবে প্রশ্ন করে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। হয়রানির প্রতিবাদ করা হলেই পাসপোর্টে ‘লালসিল’ মেরে ভিসা মিলবে না বলেও হুমকি দেওয়া হয়।”
ভারতীয় হাইকমিশন ভিসা সহজীকরণ করলেও পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনের কতিপয় কর্মকর্তার আচরণে সে সুবিধা ভেস্তে যেতে বসেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ভারতগামী আরেক যাত্রী ময়মনসিংহের ইশতিয়াক আহমেদ, মাগুরার লিপি রানী জানান, সকাল ১০টায় বেনাপোল ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে লাইনে দাঁড়িয়েছেন; কিন্তু কখন পার হতে পারবেন তা অনিশ্চিত।
লিপি রানী বলেন, “মূল গেটে থাকা ভারতীয় পুলিশ পাসপোর্ট যাত্রীদের ধীরগতিতে ভারতীয় চেকপোস্টে ঢোকানোর কারণে দুই দেশের শূন্য রেখায় বেশিক্ষণ আটকে থাকছে।”
ভারত থেকে ফেরা বেনাপোল চেকপোস্টে হাসান ছিদ্দিকুর ও মঞ্জুরানী বলেন, বৈধ ভিসা নিয়ে গেলেও পেট্টাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ যাত্রীদের ছবি, নাম, ঠিকানা, ভিসা পাসপোর্টের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতেই বেশি সময় নিচ্ছে। তাদের জনবল কম থাকায় যাত্রীদের লাইন দীর্ঘ হচ্ছে; এতে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ছে।