ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চার উপজেলায় ১৪৪ ধারা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হকের অনুষ্ঠান নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে চার উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 April 2017, 05:33 AM
Updated : 23 April 2017, 05:53 AM

রোববার সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বিজয়নগর, সদর, আশুগঞ্জ ও সরাইল উপজেলায় সব ধরনের সভা, সমাবেশ ও জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ওসি মো. নবীর হোসেন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “মন্ত্রী ছায়েদুল হকের অনুষ্ঠান নিয়ে উত্তেজনা চলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে গতকাল মধ্যরাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা নিজ নিজ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারির ঘোষণা দেন।”

রোববার দুপুরে বিজয়নগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল উদ্বোধন ও সুধী সমাবেশে যোগ দেওয়ার কথা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হকের।

ওই অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য  র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে আমন্ত্রণ না জানানোয় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে মন্ত্রীর অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দেন বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তানভীর ভূঁইয়া ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া।

এরপর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো মন্ত্রীর আগমন ঠেকাতে রোববার বিজয়নগরে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয়।

এর পাল্টায় মন্ত্রীর সমর্থকরা যে কোনো মূল্যে ওই অনুষ্ঠান করার ঘোষণা দিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

এরপর শুক্রবার দুপুরে বিজয়নগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে মারধর ও কার্যালয় ভাঙচুর করা হয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর নামফলকও ভেঙে ফেলা হয়।

সাংসদ উবায়দুল মোকতাদিরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জহিরুল ইসলাম মন্ত্রীর আগমন ঠেকাতে ২০ হাজার লোক জড়ো করারও ঘোষণা দেন বলে সংবাদ মাধ্যমে খবর আসে।

এই পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় শনিবার সন্ধ্যায় বিজয়নগরে বিজিবি মোতায়েন করা হয় এবং পরে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক রেজওয়ানুর রহমান বলেন, “আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ফেইসবুকে ‘ইসলাম অবমাননার’ অভিযোগ তুলে গতবছর অক্টোবরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ১৫টি মন্দির ও হিন্দুদের শতাধিক বাড়িঘরে ভাংচুর-লুটপাট চালানো হয়।

পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক অনুসন্ধানে  জানা যায়, ওই হামলার নেপথ্যে ছিল নাসিরনগরের এমপি ছায়েদুল হকের সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর দ্বন্দ্ব।