প্রবাসী এনামুল হকের অভিযোগ, দেশে আসার দিনেই তাকে ত্রিশাল থানায় দুই দিন আটকে রেখে নির্যাতন চালিয়ে টাকা আদায় করে এবং পাসপোর্ট আটকে রাখে। এরপর থেকে তাকে ও তার পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে এবং হয়রানি করছে পুলিশ।
সিঙ্গাপুরের ভিসাযুক্ত পাসপোর্টটি পুলিশ আটকে রাখায় এনামুলের বিদেশ যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় তিনি ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি এবং জেলার পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করেছেন বলে জানান।
এনামুল ত্রিশালের নওপাড়ার বাসিন্দা নূর মোহাম্মদের ছেলে।
নূর মোহাম্মদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাত বছর সিঙ্গাপুর থাকার পর গত ১ এপ্রিল সকালে তার ছোট ছেলে এনামুল হক দেশে ফেরেন। ওইদিন রাতেই বাড়ি থেকে ত্রিশাল থানা পুলিশের একটি দল ওসি মনিরুজ্জামানের নাম বলে এনামুলকে ‘জোরপূর্বক’ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। থানায় এনামুলকে দুই দিন আটকে রাখে। সেখানে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সত্তর লাখ টাকা দাবি করে।
“এরপর পঁয়ত্রিশ লাখ টাকা পরিশোধ করবে মর্মে তিনশ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করায় এবং একলাখ টাকা নগদ আদায় করে।”
নূর মোহাম্মদ বলেন, এনামুল লক আপে থাকা অবস্থায় ওসি মনিরুজ্জামানের নির্দেশে বাড়ি থেকে এনামুলের পাসপোর্ট নিয়ে আসে পুলিশ। পরে এনামুলকে ছেড়ে দিলেও তার পাসপোর্ট আটকে রাখে তারা।
“পুলিশী হয়রানির বিষয়ে এনামুল রেঞ্জ ডিআইজি এবং পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছে।”
এনামুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত ১৬ এপ্রিল এসপি এবং ডিআইজি বরাবর এ বিষয়ে অভিযোগ দাখিলের পর ২০ এপ্রিল স্থানীয় রাঘামারা এলাকার মতিন চেয়ারম্যানের ছেলে রোকনের মাধ্যমে পাসপোর্টটি ফেরত দিতে চায় ওসি।
“এ সময় রোকন আমাকে এ নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার পরামর্শ দেন এবং থানায় এসে বিষয়টি মীমাংসা করে ফেলতে বলেন।
“ওসি আমাকে দফায় দফায় ফোন করে মীমাংসা করার জন্য হুমকি দিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার ওসি আমাকে ফোন করে বলেন- আপনি যদি এসব বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করেন তাহলে আমি হাতে চুরি দিয়ে বসে থাকব না।”
ওসির অব্যাহত হুমকির কারণে তিনি ‘চরম নিরাপত্তাহীনতায়’ ভূগছেন বলে জানান।
এনামুলের ভগ্নিপতি আইয়ুব আলী বলেন, “ওসি আমাকে ২০ এপ্রিল থানায় ডেকে নিয়ে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে মিটমাট করে ফেলতে বলেন। অন্যথায় অন্য মামলায় এনামুলকে ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়। এই ঘটনার পর থেকে এনামুল নিরাপত্তাহীনতায় ত্রিশাল নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় অবস্থান নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, পাওনা টাকার বিষয়ে এনামুল সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে থানার বাইরে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করেছেন। তাকে থানায় আটকে রাখার অভিযোগ সত্য নয়।
এছাড়া নগদ টাকা আদায় কিংবা পাসপোর্ট আটক রাখার বিষয়টিও অস্বীকার করেন ওসি।
ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের রিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।