নির্যাতনের শিকার কয়েকজন বিষয়টি মৌখিকভাবে থানায় জানালে গত রোববার সরাইল ওসি রূপক কুমার সাহার আয়োজনে স্থানীয় শ্যাম গোসাই আশ্রম প্রাঙ্গণে এক সম্প্রীতি সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে পুলিশ প্রশাসনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা স্বীকার করলেও অভিযোগের মুখে থাকা ওই প্রভাবশালী পরিবার নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেছেন।
কয়েকজন ভুক্তভোগী সমোবেশে অভিযোগ করেন, শাহজাদাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজ মিয়া, তার ভাই শহীদুল, সিরাজ, মনমিয়া ও ধনমিয়া এবং তাদের পরিবারের লোকজন তাদের পৈত্রিক জমি দখল করেছেন, জমি থেকে পাকা ধান কেটে নিয়েছে। এছাড়া কথায় কথায় তাদের মারধর করেন।
এ ঘটনায় জড়িতদর দ্রুত বিচারের দাবি জানানো হয় সমাবেশ থেকে।
নিয়ামতপুর গ্রামের নিবারণ দাস বলেন, “সিরাজ ও তার ভাই শহীদুল হকের পরিবারের সদস্যরা আমার জমি এবং পুকুরপাড় জোর করে দখল করে রেখেছে।”
একই অভিযোগ করে মুক্তিযোদ্ধা প্রফুল্ল ভৌমিক বলেন, “সিরাজ ও শহীদের লোকজন আমার জমির পাকা ধান গরু দিয়ে নষ্ট করে দিচ্ছেন। শুধু তাই নয় তারা কথায়-কথায় আমাদের মারধর করেন। প্রতিনিয়ত ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেন।”
এ বিষয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি দিলীপ নাগ বলেন, সিরাজ ও শহীদুল হকের পরিবারের অত্যাচারে স্বাধীনতার পর থেকে শাহজাদাপুর এবং নিয়ামত পুরের সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তাদের অত্যাচার নির্যাতন সইতে না পেরে ইতিপূর্বে অনেকেই দেশ ত্যাগে বাধ্য হয়েছেন।
তবে সভায় উপস্থিত শহীদুল হক অভিযোগ অস্বীকার করে তার পরিবার ‘সংখ্যালঘুদের জানমাল রক্ষায়’ কাজ করেন বলে দাবি করেন।
সরাইল থানার ওসি রূপক কুমার সাহা বলেন, “গত তিন দশক ধরে শাহজাদাপুর এবং নিয়ামতপুর গ্রামে নির্যাতন চলছে। সম্প্রতি এ ঘটনা জানাজানির পর এ ব্যপারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। অত্যাচারের প্রতিকার তারা শিগগির পাবেন।”
গত বছরের ৩০ অক্টোবর ফেইসবুকে ‘ইসলাম অবমাননার’ ছবি পোস্ট করার অভিযোগ তুলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় ১৫টি মন্দিরসহ হিন্দুদের শতাধিক ঘরে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
এরপর কয়েকজনের বাড়িতে কয়েক দফা আগুন দেওয়া হয়। এসব ঘটনায় দায়ের মোট আট মামলায় শতাধিক গ্রেপ্তার হন।