ময়মনসিংহে সিমেন্টের ট্রাক উল্টে নিহত ১০

ময়মনসিংহের ভালুকায় সিমেন্ট বোঝাই একটি ট্রাক উল্টে ১০ জনের প্রাণ গেছে, যাদের পাঁচজনই এক পরিবারের সদস্য।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2017, 02:23 AM
Updated : 24 March 2017, 09:56 AM

শুক্রবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে ভালুকা উপজেলার মেহেরবাড়ি এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে ত্রিশাল ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান।

ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা স্ক্যান সিমেন্টবাহী ট্রাকটি জামালপুরের দিকে যাচ্ছিল। দরিদ্র কটি পরিবার ওই ট্রাকে সিমেন্টের বস্তার ওপর চড়ে বাড়ি যাচ্ছিল।

ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক চার লেইন করার কাজ চলায় মেহেরবাড়ি এলাকায় রাস্তার কাটা একটি অংশে পড়ে ট্রাকটি উল্টে যায়।

এ সময় ট্রাকের ওপরে থাকা আরোহীরা সিমেন্টের বস্তার নিচে চাপা পড়েন বলে ভালুকা থানার ওসি মামুন-অর-রশিদ জানান।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে।

ত্রিশাল ফায়ার সার্ভিসের জয়নাল আবেদীন জানান, দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নয়জনের মৃত্যু হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তিনজনকে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখানে আরেকজনের মৃত্যু হয়।

দুর্ঘটনায় আরও দুইজন আহত হলে তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

নিহতদের মধ্যে তিনজন নারী ও চারজন শিশু, বাকিরা পুরুষ।

তাদের মধ্যে পাঁচজনই এক পরিবারের সদস্য - ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার দাদরা গ্রামের আজিজুল হক (৩৫), তার স্ত্রী রেজিয়া খাতুন (২৮), ছেলে মেহেদি হাসান (১১), নিজাম উদ্দিন (৮) ও সিজার হোসেন (৪)।

অন্যরা হলেন - ময়মনসিংহ সদর উপজেলার সিরতা ইউনিয়নের চরসিরতা গ্রামের জোসনা বেগম (৫৫), তার ছেলে সিরাজুল ইসলাম (১৮), নাকসী গ্রামের শাহজাহান হোসেন (৪০) ও অজ্ঞাতপরিচয় দুইজন।

নিহত আজিজুলের ছোট ভাই শামসুল হক ও নজরুল ইসলাম জানান, আজিজুল, তার স্ত্রী ও তিন ছেলে ঢাকার বাসাবো এলাকায় থাকতেন। আজিজ ও বড় ছেলে মেহেদি ভ্যান চালাতেন। রেজিয়া খাতুন বাসায় কাজ করতেন।

রেজিয়ার বাবা আব্দুল জলিল অসুস্থ। তাকে দেখার জন্যই হতদরিদ্র পরিবারটি অল্প খরচে বাড়ি যাওয়ার জন্য ঢাকা থেকে সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকের ওপর উঠেছিল।

দুই ভাই তাদের পাঁচ স্বজনের লাশ বুঝে নিয়েছেন পুলিশের কাছ থেকে।

দুপুরে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মো. খলিলুর রহমান, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম।

পুলিশ সুপার বলেন, অপরিকল্পিতভাবে রাস্তা সংস্কার করার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখানে কারও গাফিলতি আছে কিনা তা খুঁজে দেখছে পুলিশ।

দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আরিফ আহম্মেদ খানকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

নিহতদের দাফনের জন্য প্রশাসন সহযোগিতা করবে বলেও তিনি জানান।