ফুলে ফুলে শহীদ স্মরণ

সারাদেশে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও সংগঠন ফুলেল শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে বায়ান্নর ভাষা শহীদদের, যারা ৬৫ বছর আগে–১৯৫২ সালে–রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে সংগ্রামে নেমে ঔপনিবেশিক পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2017, 03:31 AM
Updated : 21 Feb 2017, 11:09 AM

মহান একুশের প্রথম প্রহর থেকে শহীদ মিনারে গিয়ে বেদিতে ফুল দেওয়ার খবর পাঠিয়েছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিনিধিরা।

কুমিল্লা

ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা আর বিনম্র ভালবাসায় রাষ্ট্রের সর্বস্তরে বাংলাভাষা চালুর দাবি জানানোর মধ্য দিয়ে কুমিল্লায় অমর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে।

প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সদর আসনের সংসদ সদস্য হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, জেলা পরিষদ প্রশাসক নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান রিয়ার এডমিরাল আবু তাহের, জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর আলম।

বিউগলের করুণ সুরের সঙ্গে সঙ্গে শ্রদ্ধা জানায় জেলা পুলিশ সুপার শাহ মো. আবিদ হোসেনের নেতৃত্ব পুলিশের একটি দল।

সমবেত কণ্ঠে গাওয়া হয় ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি। আমি কি ভুলিতে পারি…’।

কুমিল্লা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, কুমিল্লা প্রেসক্লাব, বিএমএ জেলা আইনজীবী সমিতি, মহানগর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, উপজেলা আওয়ামী লীগ, মহানগর বিএনপিসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

ভোর ৬টা থেকে শহীদ বেদিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মী ও জেলা শহরের স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা ফুল হাতে খালি পায়ে হেঁটে সারিবদ্ধভাবে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

দিবসটি উপলক্ষে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, শিশু চিত্রাঙ্কন, রচনা প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভার আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।

ফেনী

একুশের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের জনতার ঢল নামে। প্রথমে ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য শিরিন আখতার, ফেনী-২ আসনের নিজাম উদ্দিন হাজারী, জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান, পুলিশ সুপার রেজাউল হক পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এর পর একে একে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, প্রেসক্লাব, রাজনৈতিক সংগঠন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

ভোরে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সংগঠন শহীদ বেদিতে ফুল নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

সকালে জেলার দাগনভূঁঞা উপজেলার ভাষা শহীদ আবদুস সালামের গ্রামে নির্মিত স্মৃতি জাদুঘরে সামনের শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে সর্বস্তরের মানুষ।

চাঁদপুর

মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে চাঁদপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।

ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ দুই শতাধিক সংগঠন।

সরকারি প্রশাসন ও সংগঠনগুলোর শত শত নেতাকর্মী দাঁড়িয়ে থেকে ভাষাশহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

মাগুরা

একুশের প্রথম প্রহরে মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে।

রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রথমে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক মু. মাহবুবর রহমান। এরপর শহীদ বেদীতে ফুল দেন পুলিশ সুপার মুনিবুর রহমান, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সাহাজ উদ্দিন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পঙ্কজ কুণ্ডু।

পরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মাগুরা পৌরসভা, স্বাস্থ্য বিভাগ, এলজিইডি, সদর উপজেলা পরিষদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, সিপিবিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন, প্রেসক্লাব, আদর্শ কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

পরে সর্বস্তরের মানুষ ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জানায়।

পিরোজপুর

পিরোজপুরে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ আওয়ামী লীগ, বিভিন্ন সংগঠন, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, পিরোজপুর পৌরসভা, জেলা প্রেসক্লাব, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

নেত্রকোনা

নেত্রকোনায় ভাষা শহীদদের ফুলেল শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল নামে শহীদ মিনারে।

শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে একুশের প্রথম প্রহরে নেত্রকোনা পৌরসভা, জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, জেলা প্রেসক্লাব, বিএনপি, জাসদসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।

প্রথমে নেত্রকোনা পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম খান শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে জেলা প্রশাসক মুশফিকুর রহমান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার রায়, পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। মুক্তিযোদ্ধা শামছুজ্জোহার নেতৃত্বে জেলা কমান্ডারস ফোরাম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার নুরুল আমীনের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা, মুখলেছুর রহমান ও ভজন দাসের নেতৃত্বে জেলা প্রেসক্লাব ফুল দেয় শহীদ বেদিতে। এরপর একে একে বিভিন্ন সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান।