রোববার সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) সুলতান মাহমুদ বাদী হয়ে বন আদালতে মামলাটি করেন বলে পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
পরে আদালতের বিচারক জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জিয়ারুল ইসলাম আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
বন কর্মকর্তা সাইদুল বলেন, গত ১৩ এপ্রিল সুন্দরবনে আগুন লাগার ঘটনা ইচ্ছাকৃত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রমাণ পেয়েছে বন বিভাগ। বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরার সুবিধার্থে শুষ্ক মৌসুমে বনে আগুন দেওয়া হয় এমন তথ্য প্রমাণ পেয়ে বন বিভাগ রোববার বন আদালতে মামলাটি করেছে (বন মামলা নং ১২/২০১৫-১৬)।
আসামিরা সবাই বন সংলগ্ন বাগেরহাটে শরণখোলা উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা বলে জানালেও গ্রেপ্তারের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করেননি তিনি।
ডিএফও মো. সাইদুল বলেন, “এর আগে সুন্দরবনে আগুন লাগলেও আমরা কখনও মামলা করিনি। কয়েকজনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে এবারই প্রথম মামলা করা হল।”
আগুনে বনের নাংলি ক্যাম্পের আব্দুল্লার ছিলা, পঁচাকুড়ালিয়া ও নাপিতখালি এলাকায় ৮ দশমিক ৫৫ একর বনভূমি পুড়ে গেছে বলেও জানান তিনি।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে আগুনে বনের ৭ লাখ টাকার বনজ সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।
এর আগে গত ২৭ মার্চ নাংলি ক্যাম্প এলাকায় লাগা আগুনে প্রায় এক একর বনভূমি পুড়ে যায়। ওই ঘটনার পর বন বিভাগ গঠিত তদন্ত কমিটি আগুন লাগার কারণ হিসাবে বন সংলগ্ন লোকালয়ের মানুষের অসতর্কতা এবং যত্রতত্র সংরক্ষিত বনে ঢোকার প্রবণতাকে দায়ী করেন।
ভোলা নদী ভরাট হয়ে ওই এলাকায় বন ও লোকায়ের প্রাকৃতিক সীমানা সহজগম্য হয়ে পড়ায় তদন্ত কমিটি এ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে সেখানে বেড়া দেওয়ার সুপারিশ করে।
গত ১২ বছরে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন এলাকায়ই অন্তত ১৪ বার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এসব অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ৪০ একর বনভূমি। তবে স্থানীয়দের হিসাবে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বনের পরিমাণ আরও বেশি।