নতুন করে সাজবে মুজিবনগরের ‘স্মৃতি মানচিত্র’

মেহেরপুরের মুজিবনগরে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক দেশের সর্ববৃহৎ প্রকল্প মুক্তিযুদ্ধে স্মৃতি মানচিত্রের ভিতরে ও বাইরে নির্মিত ছোট-বড় বিভিন্ন ভাস্কর্য ভেঙে নতুন করে তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

মেহেরপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 April 2016, 07:39 AM
Updated : 17 April 2016, 06:34 PM

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সাত কোটি টাকা সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় মুজিবনগরে নির্মিত দেশের বৃহত্তম মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক স্মৃতি মানচিত্র প্রকল্পকে নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।”

তিনি বলেন, প্রথম ধাপে সাদা সিমেন্টে তৈরি কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভাস্কর্য ভেঙে ফেলে ফাইবার ও পিতলের ভাস্কর্য তৈরি করা হবে, যাতে খুব সহজেই সেগুলো নষ্ট না হয়।

গত ৩ এপ্রিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদযাপন কমিটির সভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও সচিব এ পরিকল্পনা তুলে ধরেন বলে জানান তিনি।

মেহেরপুরের গণপূর্ত বিভাগের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উল্লাহও পুরানো ভাস্কর্য ভেঙে নতুন করে নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানান। তবে কবে থেকে এই কাজ শুরু হবে তা জানাতে পারেননি তিনি।

১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস সামনে রেখে ভাস্কর সুরেশ পান্ডের নেতৃত্বে ছয়জন শিল্পী মুজিবনগরের ভাস্কর্যগুলো মেরামত ও পরিছন্নতার কাজ করেন।

মেহেরপুর জেলার সীমান্ত ঘেষা মুজিবনগরে (তৎকালীন বৈদ্যনাথতলা) ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকার শপথ নেয়। এখানেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত করা হয়েছিল।

স্বাধীনতা সংগ্রামের নানা স্মৃতি ধরে রাখতে মুক্তিযুদ্ধে স্মৃতিমানচিত্র প্রকল্পের আওতায় এখানে সাদা সিমেন্ট ও ধাতব পদার্থ দিয়ে বিভিন্ন ভাস্কর্য তৈরি করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে পাকবাহিনীর সঙ্গে সন্মুখযুদ্ধ, শরণার্থী হয়ে নারী-পুরুষের দেশত্যাগ, ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন স্থাপনা, প্রথম সরকারের শপথগ্রহণ, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ, পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণের চুক্তি সই, প্রথম সরকারকে গার্ড অব অনার প্রদান, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, পাকিস্তানি সেনাদের নারী নির্যাতন, মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ১১ সেক্টর কমান্ডারদের গোপন বৈঠকসহ মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন ধংসযজ্ঞ তুলে ধরা হয় এসব ভাস্কর্যে।

তবে ১৩ বছরেও প্রকল্পটির কাজ শতভাগ শেষ হয়নি। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও হয়নি এ প্রকল্পের।

মুক্তিযুদ্ধে স্মৃতিমানচিত্রের ভিতরে ও বাইরে উন্মুক্ত স্থানে নির্মিত অনেক ভাস্কর্যে নোংরা জমার পাশাপাশি ফাটল ধরেছে। কোনো কোনোটি ভেঙে পড়ছে।