জামায়াতের বিচারে যে কোনো সময় বিল: আইনমন্ত্রী

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করা হচ্ছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে বলেছেন, সরকার যখন চাইবে তখনই এটি সংসদে তোলা হবে।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 June 2015, 03:47 PM
Updated : 1 June 2015, 04:08 PM

বিচার করার পরিণতিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত হতে পারে ইতোমধ্যে আদালতের চোখে অপরাধী বলে চিহ্নিত স্বাধীনতাবিরোধী এই সংগঠনটি।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বর্তমান আইনের অধীনে যুদ্ধাপরাধী ব্যক্তিকে দণ্ড দেওয়ার সুযোগ থাকলেও সংগঠনকে শাস্তি দেওয়ার বিধান নেই।

দোষী সাব্যস্ত হলে নিষিদ্ধের মতো দণ্ড জামায়াতের জন্য অপেক্ষা করছে বলে জানিয়েছেন আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

সোমবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, “জামায়াত এবং তার অঙ্গসংগঠন নিষিদ্ধ করার জন্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্টের সংশোধনীর খসড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা আছে।

“সরকার যখনই মনে করবে, বিলটি মন্ত্রিসভার অ্যাপ্রুভাল নিয়ে সংসদে পাসের জন্য আনা হবে।”

তরীকত ফেডারেশনের সংসদ সদস্য নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক এসব কথা বলেন।

বিষয়টি পরিষ্কার করতে যোগাযোগ করা হলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক টেলিফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জামায়াতের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালস আইনে সংশোধনী আনা হচ্ছে। এর খসড়া মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।”

এদিকে প্রশ্ন করার সময় নজিবুল বশর সংসদে মন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, “জামায়াত-শিবিরের নিবন্ধন বাতিল করার জন্য আমরা একটি মামলা করেছি। এই মামলা কবে নিষ্পত্তি হবে?”

আইনের মাধ্যমে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে কিনা তাও জানতে চান তিনি।

ফাইল ছবি

 

জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, “যে মামলার কথা মাননীয় সদস্য বলছেন, সেটি বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে রয়েছে। তারা (তরীকত ফেডারেশন) বাদী। ত্বরিত কিছু করতে হলে তাদেরকে আপিল বিভাগে দরখাস্ত করতে হবে।”

সংবিধানের সঙ্গে গঠনতন্ত্র সাংঘর্ষিক হওয়ায় হাই কোর্টে একটি বৃহত্তর বেঞ্চ ২০১৩ সালের ১ অগাস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে। তরীকত ফেডারেশনের করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি করে আদালত এই রায় দেয়।

এই রায়ে স্থগিতাদেশ চেয়ে জামায়াত চেম্বার বিচারপতি আদালতে আবেদন করলেও তা খারিজ হয়ে যায়।

রায়ের পর একই বছরের ১২ অগাস্ট একাত্তরের ভূমিকার জন্য দলটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে আপিল বিভাগে একটি আবেদন জমা দেয় রাষ্ট্রপক্ষ।

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে জামায়াতগুরু গোলাম আযমকে দেওয়া ট্রাইব্যুনালের দণ্ডের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের সঙ্গে এই আবেদন দেওয়া হয়।

পরে গোলাম আযমের মৃত্যুর পর ওই আপিলটি অকার্যকর হয়ে যায়।

গোলাম আযমের মামলায় ট্রাইব্যুনালের রায়ে একাত্তরে ভূমিকার জন্য জামায়াতে ইসলামীকে ‘ক্রিমিনাল দল’ হিসাবে আখ্যা দেয় আদালত।

একই সঙ্গে দেশের কোনো সংস্থার শীর্ষ পদে স্বাধীনতাবিরোধীদের থাকা উচিত নয় বলে মত দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।