সাম্প্রতিক এই ঘটনা নিয়ে সোমবার এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যে প্রবীণ এই রাজনীতিক-আইনজীবী অনেকটা উত্তেজিত হয়েই বলেন, “অবাঞ্ছিত! কে কাকে অবাঞ্ছিত করছে? এ ক্ষমতা কে দিয়েছে তাদেরকে? সরকার যদি না দিয়ে থাকে; সরকার ঘোষণা করুক, এদেরকে আমরা এভাবে বেয়াদব বানাইনি। এদেরকে এ রকম বেয়াদব…বেয়াদব বলেই ছাড়লাম এদেরকে।”
টেলিভিশন আলোচক পিয়াস করিম সম্প্রতি মারা গেলে তার মরদেহ শহীদ মিনারে নেওয়া নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। যুদ্ধাপরাধের বিচার ও গণজাগরণ আন্দোলন নিয়ে তার বিতর্কিত বক্তব্যে ক্ষুব্ধ ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো মরদেহ শহীদ মিনারে নেওয়া প্রতিরোধের ঘোষণা দেয়।
তাদের ওই ভূমিকার সমালোচনা করায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড ও মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম নামের দুটি সংগঠন ফরহাদ মজহার, মাহফুজউল্লাহ, নূরুল কবির, আসিফ নজরুলসহ নয় ব্যক্তিকে শহীদ মিনারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে।
সংগঠন দুটির এই ঘোষণার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ‘ঐক্যবদ্ধ ছাত্রসমাজ’ আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে উত্তেজিত হয়ে পড়েন বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা কামাল হোসেন।
ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানানোর পরক্ষণেই তিনি কিছুটা সামলে নিয়ে বলেন, “এরা ছেলেমানুষ। এদের বিরুদ্ধে বলা আমার শোভা পায় না। অন্য বক্তারা ইতোমধ্যে এ নিয়ে বলে ফেলেছেন।”
“তোমরা ছেলেমানুষ, তোমরা মানুষ হও,” অবাঞ্ছিত ঘোষণাকারী তরুণদের উদ্দেশে বলেন কামাল হোসেন।
“যেসব ছেলেরা শহীদ মিনারে বিশিষ্ট নাগরিকদের অবাঞ্ছিত করছে, ভাষা আন্দোলনের সময় তাদের বাবারও জন্ম হয়েছে কি না সন্দেহ।”
ডাকসুর সাবেক ভিপি রব বলেন, “মরদেহ শহীদ মিনারে নিয়ে যেতে দেবে না। উপাচার্য তা এড়িয়ে গেছেন। আসিফ নজরুল, মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজউল্লাহ, সাংবাদিক নূরুল কবির…তাদের অবাঞ্ছিত করছে।”
গণতন্ত্রের পক্ষে ও সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে ‘অবাঞ্ছিত’ হওয়ার মতো পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে বলে তার দাবি।
রব বলেন, “দেশ ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে। ১৫ অগাস্টের ঘটনার আগের দিনও কিছু জানতাম না আমরা, চট্টগ্রামে সার্কিট হাউজের ঘটনার আগের দিনও কিছু ধারণা করা যায়নি।”
পিয়াসকে ‘অপি করিম’ সম্বোধন
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে দাঁড়িয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রয়াত পিয়াস করিমকে অন্তত দুই বার ‘অপি করিম’ বলে সম্বোধন করেন আ স ম রব।
শুরুতেই একবার তিনি একজন বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষক ‘অপি করিম’ বলে ওঠেন; পরে আরেকবারও তিনি ‘অপি করিম’ বলে সম্বোধন করেন।
পিয়াসকে ‘অপি করিম’ বলায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত শ্রোতাদের মধ্যে বিব্রতভাব দেখা যায়। তবে সেদিকে দৃষ্টি পড়েনি রবের।
অপি করিম বাংলাদেশের একজন মঞ্চ ও টিভি অভিনেত্রী। তিনি এক সময় লাক্স ফটোসুন্দরী নির্বাচিত হয়েছিলেন।