খালেদার দুই মামলায় বাদীর সাক্ষ্য ৯ নভেম্বর

নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে এবং উচ্চ আদালতে লিভ টু আপিল শুনানির অপেক্ষায় থাকার কথা বলে খালেদা জিয়া সময়ের আবেদন করায় তার বিরুদ্ধে দুই দুর্নীতি মামলায় বাদী সাক্ষ্যগ্রহণ আবার পিছিয়ে গেছে।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Oct 2014, 08:52 AM
Updated : 9 Nov 2014, 04:18 AM

ফাইল ছবি

তার সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায় জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট ও জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদের সাক্ষ্য শোনার জন্য ৯ নভেম্বর নতুন তারিখ রেখেছেন।

শুনানির আগের তারিখেও খালেদার আইনজীবীরা সময়ের আবেদন করেছিলেন। সেদিন সাক্ষ্য পিছিয়ে দিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদাকে ২৬ অক্টোবর অবশ্যই আদালতে হাজির থাকতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক।

তবে রোববারও খালেদা নিজে না এসে আইনজীবীর মাধ্যমে হরতালে নিরাপত্তার অভাবের কথা বলে সময়ের আবেদন করেন। কয়েকটি ইসলামী দলের ডাকে সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা এই হরতাল চলছে।

তার আইনজীবীরা আদালতকে জানান, জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় খালেদার লিভ টু আপিলের শুনানির জন্য ৬ নভেম্বর তারিখ রাখা হয়েছে। তার আগ পর্যন্ত সাক্ষ্য মুলতবি রাখারও আবেদন করেন তারা।

শুনানি শেষে বিচারক খালেদার আবেদন মঞ্জুর করে ৯ নভেম্বর মামলা দুটিতে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন।

মামলার বাদী  হারুন অর রশীদ এ দিন সাক্ষ্য দিতে আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন।

এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার সময়ের আবেদন নাকচ করে তার অনুপস্থিতিতেই একটি মামলায় বাদীর আংশিক সাক্ষ্যগ্রহণ হয়।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা এ দুটি মামলায় গত ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠন করে আদালত।

এর মধ্যে এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় খালেদা ও তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জন এবং জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে আরো তিনজন আসামি হিসাবে রয়েছেন।

এ দুই মামলায় অভিযোগ গঠনকারী বিচারকের নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়া আপিল বিভাগে গেলেও তা খারিজ হয়ে যায়।

মামলা বৃত্তান্ত

২০১১ সালের ৮ অগাস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ চার জনের বিরুদ্ধে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ।

তেজগাঁও থানার এ মামলায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে।

২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত  কর্মকর্তা। এ মামলার অপর আসামিরা হলেন- খালেদার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক

জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

এদের মধ্যে হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু হতেই পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে। খালেদাসহ বাকি দুই আসামি জামিনে রয়েছেন।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অন্য মামলাটি দায়ের করে।

এতিমদের সহায়তার জন্য একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় এ মামলায়।

দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ ২০১০ সালের ৫ অগাস্ট বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

তারেক রহমান উচ্চ আদালতের জামিনে গত ছয় বছর ধরে বিদেশে অবস্থান করছেন। সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আছেন জামিনে। বাকি দুজন পলাতক।