ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে দায়ের করা এক মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ আনেন।
মহানগর হাকিম মোস্তাফিজুর রহমান বাদীর বক্তব্য শুনে যথাযথ সরকারি অনুমোদন পাওয়ার পর অভিযোগ তদন্ত করে ১৯ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে শাহবাগ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
আদালতে এবি সিদ্দিকীর পক্ষে শুনানি করেন তার আইনজীবী রওশন আরা শিকদার ডেইজি।
এদিকে বিচারকের আদেশের পর বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আদালতপ্রাঙ্গণে মিছিল বের করেন এবং এ বি সিদ্দিকীর ওপর চড়াও হন বলে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
তার মামলার আর্জিতে বলা হয়, হিন্দু সম্প্রদায়ের শুভ বিজয়া উপলক্ষে গত ১৪ অক্টোবর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগ সম্পর্কে ‘কটূক্তি’ করেন।
আর্জিতে আরো বলা হয়, “তিনি (খালেদা জিয়া) বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সব ধরনের মানুষের ওপর আঘাত করে। আর লোক দেখানো ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দখল করে নেয়। আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশ পরে আছে। এ জবরদখলকারী সরকারের হাতে কোনো ধর্মের মানুষই নিরাপদ নয়।”
ওই বক্তব্য দিয়ে খালেদা জিয়া ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১৫৩ (ক) ও ২৯৫ (ক) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
দণ্ডবিধির ১৫৩ (ক) ধারায় উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে বিভিন্ন শ্রেণির নাগরিকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টার জন্য দুই বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
আর ২৯৫ (ক) ধারায় অন্যের ধর্ম বিশ্বাসের অবমাননা ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিতে বিদ্বেষমূলক কোনো কাজ করলে দুই বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমানার বিধান রয়েছে।
এবি সিদ্দিকী তার মামলায় চারজনকে সাক্ষী করেছেন।
শুনানি শেষে বিচারক আদেশ দেওয়ার পর এর প্রতিবাদে আদালত এলাকায় মিছিল বের করেন বিএনপিসমর্থক আইনজীবীরা। এসময় তারা শ্লোগান দেন- ‘খালেদা জিয়ার কিছু হলে/ জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’।
আদালতের সামনের রাস্তা ঘুরে তারা মিছিল নিয়ে ফেরার পর সাংবাদিকদের সামনেই এ বি সিদ্দিকীর ওপর চড়াও হন। এ সময় তাকে মারধরেরও চেষ্টা হয় বলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত আইনজীবী মাহবুবুল হক জানান।
এ বি সিদ্দিকীর ওপর হামলার সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের সামনের কাতারে দেখ যায় আবদুল খালেক মিলন নামের এক আইনজীবীকে।
আদালত হাজতের ওসি মুরাদ হোসেন বলেন, “আইনজীবীরা চড়াও হলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।”
এরপর জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী দৌড়ে ওই এলাকা থেকে সরে যান বলে ঢাকার আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জানান।