‘মিথ্যাচারে’ কূটনৈতিক সঙ্কটের আশঙ্কা: বিএনপি

৫ জানুয়ারির নির্বাচন সম্পর্কে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে নিয়ে সরকার ‘মিথ্যাচার’ করেছে দাবি করে বিএনপি আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, এতে ইউরোপের দেশটির সঙ্গে কূটনীতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সঙ্কট সৃষ্টি হতে পারে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 July 2014, 05:31 PM
Updated : 26 July 2014, 05:31 PM

প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সংবাদ সম্মেলনের প্রতিক্রিয়ায় শনিবার বিএনপির পক্ষ থেকে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে দলটির সহসভাপতি শমসের মবিন চৌধুরী এই আশঙ্কার কথা জানান।

বাংলাদেশের দশম সংসদ নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ না দেখে হতাশা প্রকাশকারী দেশ যুক্তরাজ্যে গত সপ্তাহে তিন দিনের সফরে যান প্রধানমন্ত্রী। তিনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকও করেন।

ওই সফর নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, “ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন এখন অতীত। ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে হবে। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক নিবিড় করতে চায়। বৃটিশ সরকার বাংলাদেশ সরকারের সাথে একযোগে কাজ করে যাবে।”

তবে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক নিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্রের বক্তব্য ভিন্ন কথা বলে বলে দাবি করেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন।

তিনি বলেন, “ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র থেকে যে বিবৃতি দিয়েছে, তা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ ভিন্ন। ওই বিবৃতিতে কোথাও অতীত হয়ে গেছে তা উল্লেখ নেই।

“আমরা মনে করি, এরকম মিথ্যাচার করাটা কূটনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থি। এতে দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের মধ্যকার সম্পর্কে সঙ্কট সৃষ্টি হতে পারে।”

শমসের মবিন বলেন, ৫ জানুয়ারির ‘ভোটারবিহীন’ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি।

“তার মনে করে, ওই নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি, তাদের কাছেও গ্রহণযোগ্য নয়। তারা দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে আসছে।”

এর আগে জাতিসংঘ মহাসচিব বান-কি মুনের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের আলোচনা নিয়েও ‘বিভ্রান্তিকর’ তথ্য দেয়া হয়েছিল বলে শমসের মবিন অভিযোগ করেন।  

“পরের দিন জাতিসংঘ থেকে পৃথক বিবৃতি দিয়ে বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়,” বলেন তিনি।

শমসের মবিন বলেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সৌদি আরবে বাদশা আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাতের পর তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি বলেছিলেন, বাদশাহর সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সরকার প্রধানের এটি প্রথম সাক্ষাৎ।

“পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই বক্তব্যটিও ছিল মিথ্যাচার। কারণ বিএনপি সরকারের আমলে বাদশাহর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর চার বার সাক্ষাৎ হয়েছিল।”

সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, “একান্ত বৈঠকে বিদেশি সরকার প্রধানের বক্তব্য মিথ্যাভাবে উপস্থাপন প্রমাণ হয়, সরকারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। তা না হলে কেন বৈঠকে যে কথা হয়, বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে মিথ্যা কথা বলবেন?

“এভাবে বিদেশি সরকার প্রধান ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে খবর ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হতে থাকলে তা দেশের ভাবমূর্তির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।”

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে শমসের মবিনের সঙ্গে ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইনাম আহমেদ চৌধুরী, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, শফিক রেহমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গিয়াস কাদের চৌধুরী, আসাদুজ্জামান রিপন, রুমিন ফারহানা প্রমুখ।