পাপিয়ার বক্তব্যে সংসদে উত্তাপ

বিরোধী দলের সৈয়দা আশিফা আশরাফী পাপিয়ার এক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে রোববার কিছু সময়ের জন্য উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল সংসদ।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 June 2013, 04:44 AM
Updated : 9 June 2013, 10:30 AM

অনির্ধারিত আলোচনায় দাঁড়িয়ে পাপিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কথা বললে সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন।

৮৩ দিন পর বাজেট অধিবেশনে ফেরা বিএনপির সংসদ সদস্যরা এদিন এম কে আনোয়ারের নেতৃত্বে সংসদে যোগ দেন। তাদের সঙ্গে অধিবেশন কক্ষে ঢোকেন এলডিপি সভাপতি অলি আহমদ ও জামায়াতের সংসদ সদস্য আ ন ম শামসুল ইসলাম।

শুরুতে বিএনপির শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে গত ৫ জুন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর ‘অসংসদীয়’ বক্তব্য এক্সপাঞ্জের দাবি জানান।

পরে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, মন্ত্রীর বক্তব্যে অসংসদীয় কিছু থাকলে পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ্যানি অভিযোগ করেন, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বিরোধী দলের সদস্যদের প্রতি বৈষম্য করছে। টিআর, কাবিখার বরাদ্দ বিরোধী দলের সদস্যদের এলাকায় দেয়া হচ্ছে না।

এ্যানি তার দলের সংসদ সদস্য আশরাফী পাপিয়াকে পয়েন্ট অব অর্ডারে কথা বলতে দিতেও স্পিকারকে অনুরোধ করেন।

সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য পাপিয়া তিন দিন আগে পয়েন্ট অফ অর্ডারে কথা বলতে দাঁড়ালেও তা বিধিসম্মত হয়নি উল্লেখ করে তাকে সুযোগ দেননি স্পিকার। এরপর বিএনপি ওয়াক আউট করে।

পাপিয়া রোববার পয়েন্ট অফ অর্ডারে দাঁড়িয়ে বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, তার ওই বক্তব্যের ‘ধিক্কার’ জানাই।

তিনি বলেন, “বিএনপি কারো কাছে মুচলেকা দিয়ে রাজনীতি করে না। সকলে জানে কারা মুচলেকা দিয়ে ‘৮৬ সালে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। তারেক রহমান চিকিৎসার জন্যে বিদেশে রয়েছেন। তিনি কারো কাছে মুচলেকা দিয়ে রাজনীতি করেন না।”

বিরোধী দল সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা ‘বিভ্রান্তিমূলক’ বক্তব্য দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন পাপিয়া।

তিনি বলেন, “তারেক রহমানকে গ্রেপ্তারের কথা বলে নির্দলীয় সরকারের আলোচনার জন্যে বিরোধী দলীয় নেতার সন্তানকে এজেন্ডা হিসেবে দাঁড় করাতে চান প্রধানমন্ত্রী।”

বক্তব্যে এক পর্যায়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনিকেও আক্রমণ করেন বিরোধী সদস্য পাপিয়া। তাকে ‘হাইব্রিড’ নেতা হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।    

দলের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যানের প্রশংসা করে পাপিয়া বলেন, “তারেক রহমান পথে ঘাটে বৃষ্টিতে ভিজে রাজনীতি করেছেন।”

পাপিয়া বক্তব্যের সময়ই সরকারদলীয় হুইপ আ স ম ফিরোজ, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক, ফজলে রাব্বি মিয়া কথা বলতে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এক পর্যায়ে সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীও স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। তবে স্পিকার শিরীন শারমিনকে এক্ষেত্রে মাইক বন্ধ না করে বিরোধী দলের প্রতি নমনীয় থাকতেই দেখা যায়।

পাপিয়ার বক্তব্যের পরে ফজলে রাব্বী মিয়া বক্তব্য রাখার সুযোগ পান। তিনি বিরোধী দলের সংসদ সদস্যের বক্তব্য এক্সপাঞ্জের দাবি জানিয়ে বলেন, এই বক্তব্য কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী হয়নি।

এরপর আব্দুল মান্নান বলেন, পয়েন্ট অব অর্ডারের নামে সংসদ নেতা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে ‘অশালীন’ বক্তব্য রেখেছেন বিরোধী দলের সংসদ সদস্য।

“আমি তার সমস্ত বক্তব্যের ধিক্কার জানাই,” পাপিয়াকে পাল্টা উত্তর দেন সরকারদলীয় এই সংসদ সদস্য।