খালেদার বৈঠকে আলোচনা বিক্ষোভ-মানববন্ধন নিয়ে

গ্যাসের দাম বাড়ালেই লাগাতার আন্দোলনের হুমকি ছিল বিএনপির, এখন তার সঙ্গে বিদ্যুতেরও দাম বাড়ানোর পর খালেদা জিয়ার সঙ্গে জোট নেতাদের বৈঠকে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও প্রচারপত্র বিলির মতো কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 August 2015, 04:10 PM
Updated : 30 August 2015, 04:10 PM

গ্যাসের দাম ২৬ শতাংশ এবং বিদ্যুতের দাম ৩ শতাংশ বাড়ানোর সরকারি ঘোষণা আসার তিন দিন পর রোববার এর প্রতিবাদে কর্মসূচি ঠিক করতে ২০ দলের নেতাদের বৈঠকে ডাকেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

গত বছরের শেষ দিকে গ্যাসের দাম বাড়ানোর আলোচনা চলার সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হুমকি দিয়েছিলেন, দাম বৃদ্ধি হলে সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন শুরু হবে।

বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়ানোর পর তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি বিএনপি। একদিন বাদে সংবাদ সম্মেলনে এসে দলের মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, দলীয় নীতি-নির্ধারকরা আলোচনা করে কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

তারও একদিন বাদে রোববার রাতে জোট নেতাদের সঙ্গে খালেদার ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা আলোচনা করেছি। এ ব্যাপারে দুই-একদিন পর বিএনপির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে কর্মসূচি জানানো হবে।”

গুলশানে খালেদার কার্যালয়ে এই বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক নেতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আপাতত জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধনের মতো ‘নরম’ কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। কর্মসূচির দিনক্ষণ চূড়ান্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসনকে।

২০ দলীয় জোট শরিক লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান সাংবাদিকদের বলেন, “শরিক দলগুলোর পক্ষ থেকে বিভিন্নজন নানা রকম কর্মসূচির প্রস্তাব দিয়েছেন। কেউ মানববন্ধন, কেউ বিক্ষোভ সমাবেশ, কেউ লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে জনমত গঠন ইত্যাদি কর্মসূচি দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর প্রস্তাব করেছেন। কর্মসূচি ঠিক করবেন জোট নেত্রী।”

খালেদা জিয়া (ফাইল ছবি)

প্রতিবাদ জানাতে কয়েকদিনের ‘প্যাকেজ’ কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

৫ জানুয়ারি লাগাতার অবরোধ ডেকে তিন মাসের মাথায় পিছু হটার পর বিএনপি অভিযোগ করে আসছে, পুলিশ ও সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের বাধায় তারা রাজপথে নামতে পারছে না। আন্দোলন দমাতে দলের অধিকাংশ নেতাকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে।

খালেদার সভাপতিত্বে ২০ দলের এই বৈঠকে বিএনপির  বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নজরুল ইসলাম খানও উপস্থিত ছিলেন।

অলি আহমদ ও ইরান ছাড়াও ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল লতিফ নেজামী, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপার শফিউল আলম প্রধান, খেলাফত মজলিশের মুহাম্মদ ইসহাক, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) টিআইএম ফজলে রাব্বী, মোস্তফা জামাল হায়দার, এনডিপির খন্দকার গোলাম মূতর্জা, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, পিপলস লীগের গরীবে নেওয়াজ, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ইসলামিক পার্টির ছায়েদুল হাসান ইকবাল, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহম্মেদ, মুসলিম লীগের জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ডিএলের সাইফুদ্দিন মনি।

বৈঠকে শুরুতে জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।