স্থান: ঢাকার মহাখালী রেলক্রসিং, সময়: শনিবার সন্ধ্যা।
রেলক্রসিংয়ের পশ্চিম পাশে ৬-৭টি হিউম্যান হলার দাঁড় করিয়ে যাত্রী তোলার জন্য তারস্বরে চেচাচ্ছেন হেলপাররা। এরই মধ্যে চারটি হিউম্যান হলারের (লেগুনা) ইউ টার্ন নেওয়ার চেষ্টায় ক্রসিংয়ের দুই পাশেই লেগে গেল গাড়ির জটলা।
ঠিক এমন সময় রেললাইন ধরে ট্রেন ধেয়ে আসায় পথচারী আর যানবাহনের আরোহীদের মধ্যে তৈরি হল উৎকণ্ঠা। তবে শেষ পর্যন্ত ট্রাফিক পুলিশ ও রেলকর্মীদের চেষ্টায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেল।
ব্যস্ত এই সড়কে এমন শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে যাত্রীদের প্রায়ই পড়তে হয়। এর কারণ হিসেবে লেগুনা চালকদের বিশৃঙ্খল চালনাকেই দায়ী করেছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যসহ স্থানীয়রা।
রেলক্রসিংয়ের পাশে ফুটপাতের সেদ্ধ ডিম বিক্রেতা রবিউল ইসলাম বলেন, লেগুনার কারণে ক্রসিংয়ের ওপর প্রায়ই যানজটের সৃষ্টি হয়। ট্রাফিক পুলিশ ও রেলক্রসিংয়ের কর্মীরা জটলা সরাতে গলদঘর্ম হতে হয়।
দুই বছর আগে ক্রসিংয়ের ওপর বিকল হয়ে যাওয়া একটি বাসের সঙ্গে ঢাকামুখী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছিল। সে সময় ব্যাপক প্রাণহানি না ঘটলেও বাস, রেলের স্থাপনা ও টং দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ক্রসিংয়ে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশ সদস্য সিদ্দিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মিরপুর-১ থেকে আসা লেগুনাগুলো রেলক্রসিংয়েই ইউ টার্ন নেয়। মাঝেমধ্যে যাত্রীর চাপ বেশি থাকলে গাবতলী থেকে আসা লেগুনাগুলোও রেলক্রসিং হয়ে ফিরে যায়।
তিনি বলেন, “কর্তৃপক্ষের অসতর্কতার কারণেই রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। বড় দুর্ঘটনার পর তাদের তৎপর হতে দেখা গেলেও ধীরে ধীরে অনিয়ম আগের অবস্থায় ফিরে আসে।”
মহাখালী রেলক্রসিংয়ের সমস্যা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এ এলাকার ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার মাহবুবুর রহমান বলেন, রোববারই নতুন কর্মস্থলে যোগ দেওয়ায় পরিস্থিতি সম্পর্কে এখনো তার ধারণা নেওয়া হয়নি।
তবে রেলক্রসিংয়ে লেগুনা জটিলতার বিষয়টি ‘দেখবেন’ বলে আশ্বস্ত করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, “পাবলিক পরিবহনের বিষয়গুলো একটু স্পর্শকাতর। তবে যেভাবে করলে জনগণের দুর্ভোগ কমে, আমরা সেভাবেই সিদ্ধান্ত নেব। প্রয়োজনে রেলক্রসিংয় ঘিরে থাকা লেগুনার অবস্থান সরিয়ে দেব এবং ইউ টার্ন বন্ধ করব।”