জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ‘মৃত্তিকা মায়া’র জয়জয়কার

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৩র আসর মাতাতে যাচ্ছে ‘মৃত্তিকা মায়া’ চলচ্চিত্রটি। গাজী রাকায়েত পরিচালিত চলচ্চিত্রটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রসহ প্রায় সব শাখাতেই সেরার স্বীকৃতি পেয়ে রেকর্ড গড়েছে। আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন বাংলা চলচ্চিত্রের ‘মিষ্টি মেয়ে’ কবরী। সংগীতে যৌথভাবে পুরস্কার নেবেন রুনা লায়লা ও সাবিনা ইয়াসমীন।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2015, 01:17 PM
Updated : 11 March 2015, 07:03 AM

মঙ্গলবার বিকালে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মরতুজা আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনটি গ্লিটজের হাতে এসে পৌঁছায়। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে ‘গৌরবোজ্জ্বল’ এবং ‘অসাধারণ অবদানে’র স্বীকৃতিস্বরূপ ২৫টি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করা হবে।

‘মৃত্তিকা মায়া’ চলচ্চিত্রটির জন্য শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পাশাপাশি শ্রেষ্ঠ পরিচালক, কাহিনিকার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপ রচয়িতার পুরস্কার পাচ্ছেন গাজী রাকায়েত।

সিনেমাতে ‘বৈশাখ’ ও ‘পদ্ম’- চরিত্রে রূপদানকারী তিতাস জিয়া ও শর্মিমালা পাচ্ছেন শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও অভিনেত্রীর পুরস্কার। সিনেমাতে পার্শ্ব-চরিত্রে অভিনয়ের জন্য রাইসুল ইসলাম আসাদ ও অপর্ণা ঘোষ এবং খলচরিত্রে অভিনয় করে মামুনুর রশীদ পাচ্ছেন পুরস্কার।

‘মৃত্তিকা মায়া’র পরিচালক গাজী রাকায়েত গ্লিটজকে বলেন, “আমার সত্যি ভালো লাগছে যে সিনেমাটি প্রায় সব শাখাতেই পুরস্কৃত হচ্ছে। এতগুলো শাখায় পুরস্কার পাওয়ায় ‘মৃত্তিকা মায়া’র পুনর্জন্ম হলো। এখন সর্বস্তরের মানুষ সিনেমাটি দেখতে আগ্রহী হবে। সত্যি বলতে, মানুষ যদি সিনেমাটি দেখার সুযোগ নাই পায়, কী হবে এতগুলো শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র ‍পুরস্কার পেয়ে। এবার সিনেমাটি আমি সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে চাই।”

তিতাস জিয়া ও শর্মিমালা

অপর্ণা ঘোষ

‘মৃত্তিকা মায়া’র ‘পদ্ম’ চরিত্রের পুরস্কারটি শর্মিমালাকে ভাগাভাগি করতে নিতে হচ্ছে ‘দেবদাস’ সিনেমার ‘চন্দ্রমুখী’ আরিফা পারভিন মৌসুমীর সঙ্গে। অবশ্য এ নিয়ে মোটেই আক্ষেপ নেই তার।

এ পুরস্কারটি নিয়ে অবশ্য আপত্তি জানিয়েছিলেন ‘দেবদাস’ সিনেমার ‘পার্বতী’ অপু বিশ্বাস। তার মতে, ‘দেবদাস’ সিনেমার প্রধান নায়িকা ‘পার্বতী’। কাজেই সেরা অভিনেত্রী হিসেবে মৌসুমীর নাম ঘোষণায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তিনি।

এদিকে শর্মি জানালেন পুরস্কার পাওয়ায় অভিভূত তিনি। 

“নতুন বছরের শুরুতে এমন ভালো খবর আমি সত্যি প্রত্যাশা করিনি। আমি ভীষণ আনন্দিত, অভিভূত। পরিচালক রাকায়েত ভাই ও তার পুরো টিম ভীষণ যত্ন নিয়ে ‘পদ্ম’ চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলেছেন। এ পুরস্কার অভিনয়ের প্রতি দায়বদ্ধতা আরও বাড়িয়ে দিলো আমার।”

রুনা লায়লা

সাবিনা ইয়াসমিন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক তিতাস জিয়া তার ক্যারিয়ারের প্রথম সিনেমাতেই বাজিমাত করলেন। এ কৃতিত্বের পুরোটাই তিনি দিতে চান টিম, ছাত্রছাত্রী আর পরিবারকে, যারা তাকে নিরলস উৎসাহ দিয়ে গেছে।

‘একই বৃত্তে’ চলচ্চিত্রের জন্য স্বচ্ছ শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী নির্বাচিত হয়েছেন। তবে শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার পাচ্ছেন ‘অন্তর্ধান’ চলচ্চিত্রের সৈয়দা অহিদা সাবরিনা।

এ বছর শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র হিসেবে পুরস্কার পাচ্ছে কামার আহমেদ পরিচালিত ‘শুনতে কি পাও!’ 

তিতাস জিয়া

গাজী রাকায়েত

সংগীতে যৌথভাবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাচ্ছেন দুই কিংবদন্তী সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা ও সাবিনা ইয়াসমীন। দেবদাস চলচ্চিত্রের ‘এ জীবন ধুপের মতো গন্ধ বিলায়’-এর জন্য রুনা লায়লা এবং একই চলচ্চিত্রের ‘ভালোবেসে একবার কাঁদালে না আমাকে’ গানটির জন্য সাবিনা ইয়াসমীন যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

শ্রেষ্ঠ গায়কের স্বীকৃতি পাবেন চন্দন সিনহা। শ্রেষ্ঠ গীতিকার  হয়েছেন কবীর বকুল। শ্রেষ্ঠ সুরকারের পুরস্কার পাচ্ছেন কৌশিক হোসেন তাপস। শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক হিসেবে যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন এ কে আজাদ এবং শওকত আলী ইমন।

এছাড়াও ‘মৃত্তিকা মায়া’ চলচ্চিত্রের জন্য সম্পাদনায় মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম রাসেল, শিল্প নির্দেশনায় উত্তম গুহ, চিত্রগ্রহনে সাইফুল ইসলাম বাদল, শব্দগ্রহনে কাজী সেলিম, পোশাক ও সাজসজ্জ্বায় ওয়াহিদা মল্লিক জলি, মেকআপে মোহাম্মদ আলী বাবুল পাচ্ছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

শর্মিমালা

মৌসুমী

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরি বোর্ড সদস্য ও বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন গ্লিটজকে বলেন, “পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নিরীক্ষা করেই এবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হল। যোগ্য ব্যক্তিরাই এবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাচ্ছেন। প্রামাণ্য চলচ্চিত্র হিসেবে পুরস্কার প্রদান বেশ কঠিন ছিল। এমন সব প্রামাণ্যচিত্র এসেছিল যেগুলো কোনোভাবেই পুরস্কার পাওয়ার দাবি রাখে না। সবশেষে ‘শুনতে কি পাও’ চলচ্চিত্রটিকে আমরা নির্বাচন করি।”

জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদযাপন উৎসবের দ্বিতীয় দিন ৪ এপ্রিল প্রদান করা হবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।