বৈশাখ ও পদ্মের গল্প

মুক্তি পেয়েছে গাজী রাকায়েত পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘মৃত্তিকা মায়া’। এই সিনেমার মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়েছে তিতাস জিয়া ও শর্মী মালা জুটির। তাদের চলচ্চিত্র ভাবনা ও প্রত্যাশা নিয়ে লিখেছেন জয়ন্ত সাহা। তাদের ছবি তুলেছেন নয়ন কুমার।

জয়ন্ত সাহাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2013, 06:29 AM
Updated : 30 Sept 2013, 09:52 AM

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তিতাস জিয়া। ছাত্রজীবনের শুরুতেই নাম লিখিয়েছিলেন অভিনয়ে। অভিনয়ের সাফল্যে উৎসাহী তিতাস একদিন হয়ে উঠলেন নাট্যনির্দেশক। চিত্রনাট্য রচনাতেও তিনি সমান পারদর্শী। দীর্ঘ এক যুগ ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটমন্ডল দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তিতাস।

‘ভালো ছাত্র’ হিসেবে পরিচিত তিতাস বন্ধু ও শিক্ষকদের উৎসাহে একদিন লিখতে বসলেন। তার চিত্রনাট্য ও নির্দেশনায় গ্রিক নাট্যকার সোফোক্লিসের বিখ্যাত নাটক ‘কিং ইডিপাস’-এর বাংলা রূপান্তর প্রদর্শিত হয় ঢাবির নাটমন্ডলে। এ নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। প্রথম নাটকেই দর্শক ও সমালোচকের মন জয় করেন। ঘটনা ২০০১ সালের।

মঞ্চে তিতাস অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটক হল ‘টর্টাফ’, ‘এ ডলস হাউজ’, ‘দ্য লাইফ অব গ্যালিলিও’, ‘দ্য ফার্স অব দ্য ডেভিলস ব্রিজ’, ‘ম্যাকবেথ’, ‘ঈর্ষা’। তিতাসের নির্দেশনায় মঞ্চস্থ হয়েছে বেশ কয়েকটি নাটক। উল্লেখযোগ্য হল ‘ঘণ্টা’, ‘নাইট’, ‘দ্য  বার্থডে পার্টি’, ‘অ্যান্ড দ্যান দেয়ার ওয়্যার নান’, ‘দ্য হোমকামিং’, ‘কিং ইডিপাস’, ‘ডেথ অব এ সেলসম্যান’।

নাটকের বিভিন্ন আঙ্গিক ও প্রায়োগিক কলাকৌশল নিয়ে লেখালেখি করেন তিতাস। বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে তার লেখা। এশিয়াটিক সোসাইটির ‘পারফর্মিং আর্টস ইন বাংলাদেশ’ জার্নালে প্রকাশিত আর্টিকেলটির শিরোনাম ‘বাংলাদেশের মূকাভিনয় পারফরমেন্স’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের জার্নালে প্রকাশিত আর্টিকেল দুটির শিরোনাম ‘দ্য প্রাগমেটিক ফর্ম অব ডায়ালগ’ এবং ‘দ্য থিয়েটার ফর ডেভেলপমেন্ট ইন দ্য অ্যাপ্লায়েড থিয়েটার ইউজড ফর ডেভেলপমেন্ট ’ এবং ‘এন ইন্সপেকশন অব ফেনোমেনন গডো’স আইডেন্টিটি অ্যান্ড রিলেটিভ থটস ইন স্যামুয়েল ব্রেখটস ওয়েটিং ফর গডো’।

মঞ্চের মানুষ তিতাসের টেলিভিশন যাত্রা ২০০৫ সালে। সে সময় মাস্টার্সপড়ুয়া তিতাস অভিনয় করেন ‘ঘরছাড়া’ টেলিফিল্মে। মাঝে পিপলু আর খানের নির্দেশনায় গ্রামীণফোনের একটি বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছেন তিনি। তারপর ২০১৩ সালে অভিনয় করেন ‘কে তুমি’ শিরোনামের একটি নাটকে।

তিতাসের ‘বৈশাখ’ হয়ে ওঠার গল্পটি বলছি। মাটি ও মানুষের গল্প নিয়ে ‘মৃত্তিকা মায়া’র কেন্দ্রীয় চরিত্র বৈশাখ। এ বিষয়ে  তিতাস বলেন, “নির্মাতা গাজী রাকায়েতের সঙ্গে পরিচয় ক্যাম্পাস লাইফ থেকে। গ্রামীণফোনের একটি বিজ্ঞাপনে আমার কাজ তার ভালো লাগে। একদিন ডেকে পাঠালেন আমাকে। ‘মৃত্তিকা মায়া’-র চিত্রনাট্য পড়তে দিলেন। আমি চিত্রনাট্য পড়ে মুগ্ধ হলাম। গাজী রাকায়েতকে আর না বলতে পারিনি।”

‘বৈশাখ’ চরিত্রের গল্প শোনালেন তিতাস। ‘মৃত্তিকা মায়া’ গল্পে বৈশাখ একজন পিতৃমাতৃহীন যুবক। নিরাশ্রয় যুবক একদিন আশ্রয় পায় কুমারপাড়ায়। কুমারের পেশাকেই ভালোবেসে ফেলে সে। সে শত প্রতিকূলতা আর প্রলোভনেও কুমার পেশা ছাড়তে নারাজ। তার কাছে এটা একটা শিল্প। শিল্পের প্রতি ভালোবাসা তার এতই তীব্র যে নির্দ্বিধায় ভালোবাসার মানুষকেও অবজ্ঞা করে। এ গল্পে দেখানো হয়েছে একজন কুমারের জীবনের প্রেম, প্রতারণা, স্বপ্ন, মায়া, দ্রোহ-বিদ্রোহ।

বৈশাখ-চরিত্রে ঢুকে পড়ার গল্পটিও বেশ মজার। তিতাস জানালেন, গল্পের প্রয়োজনে দাঁড়ি গোফ রাখতে হবে। মাথাভর্তি চুল আরও লম¦া করতে হবে। পরিচালকের নির্দেশনায় তিতাস ঠিক সে কাজটাই করলেন। ক্যাম্পাসের সহকর্মী ও ছাত্রছাত্রীরা চোখ ছানাবড়া করে দেখতে লাগল তিতাসের হঠাৎ বদলে যাওয়া।

অভিনেতা, নির্দেশক তিতাসের কাছে প্রশ্ন-- এতগুলো বছরে একটি নাটক ও একটি টেলিফিল্মে অভিনয় করলেন। তবে টিভি নাটক কি এড়িয়ে চলছেন?

এ প্রশ্নের জবাবে তিতাস বলেন, “অধ্যাপনায় আসার পর নিজের কাজ নিয়ে আরও সতর্ক হয়েছি। আমি যা করি, আমার ছাত্রছাত্রীরা সেটা অনুসরণ বা অনুকরণ করবে। আমার প্রতিটা কাজ ওরা খুঁটিয়ে দেখে। ওরা শিখতে চায়, জানতে চায়। ওদের কথা ভেবেই গড়পড়তা নাটকে কাজ করিনি। এর মধ্যে ভালো চিত্রনাট্যও এসেছে। কিন্তু ব্যাটে বলে ঠিক মিলিয়ে নিতে পারিনি।”

তিতাসের গল্প শেষে চা বিরতি নিলাম। এরই মধ্যে হাজির ‘মৃত্তিকা মায়া’র আরেক প্রধান চরিত্র ‘পদ্ম’। শর্মী মালা এই চরিত্রটি রূপদান করেছেন। মঞ্চদল ‘পালাকারে’র ব্যস্ত কর্মী শর্মীর অনুযোগ, প্রিয় মানুষ ‘তিতাস ভাই’-এর দেখা মেলাই নাকি দুষ্কর। দুজনের এমন খুনসুটিতে জেনে নিলাম বন্ধুত্বটা বহুদিনের। তিতাসের গল্পটা তখনও চলছে।

শর্মী কথা কেড়ে নিতে ভালোবাসেন না। তিতাসের লেকচারের দারুণ ভক্ত এখানে হয়ে গেলেন মুগ্ধ শ্রোতা। আবার শুরু হল তিতাসের গল্প। অনুমতির প্রয়োজন হল না।

অভিনয়, নাটক ও চলচ্চিত্র নিয়ে তার নিজস্ব ভাবনার কথা বলেন তিতাস। “টেলিভিশন নাটক ও সিনেমা দুটোই সমকালীন জীবনের প্রতিচ্ছবি। এই ছবিটা কে ভালো আঁকতে পারেন তাতেই সফলতা। বাংলা নাটক ও সিনেমার দর্শক হারিয়ে যাচ্ছে।  সেই দর্শককে ফিরিয়ে আনতে পারি আমরা। চিত্রনাট্যকার, নির্মাতা ও অভিনেতারা একটু মনযোগী হলে পরিবর্তন সম্ভব। অর্থের মোহ থেকে কাজের প্রতি ভালোবাসা বড় হলেই দর্শক আবার হলে ফিরবেন। বিনোদন মানেই কিছু হাততালি, মারপিট ও কৌতুকের মিশেল নয়। মানুষ এখন জীবনবোধের গল্প খোঁজে। সিনেমায় তারা চলমান জীবনের প্রতিচ্ছবি দেখতে চায়।”

তিনি মনে করেন, চলচ্চিত্র বা নাটক দুটোই শিল্পকর্ম। এই শিল্পকর্মকে বাঁচিয়ে রাখতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে। তার ভাষ্যে, “প্রতিটা শিল্পকর্ম একেকটা সময়কে ধরে রাখে। একজন শিল্পী তার চলমান সময়কে কতটা চিত্রিত করতে পেরেছেন তাতেই কিন্তু তার সার্থকতা। তাতেই বোঝা যায় একজন শিল্পীর চিন্তা, ভাবনা ও শিল্পবোধের পরিচয় বহন করে।

বেলা পড়ে আসছে। ফটোসাংবাদিক নয়ন কুমারের তাড়া-- ‘আলো পড়ে গেলে ছবি পাবেন না। কলা ভবন থেকে কার্জন হল। ফটোসেশন পর্ব শেষ করে বিদায় নিলেন তিতাস।

‘মৃত্তিকা মায়া’-র পদ্ম, শর্মীমালার গল্প শুরু হল। শর্মী অবলীলায় বসে পড়েন মৃত্তিকাবিজ্ঞান ভবনের ধুলোমাখা সিঁড়িতে।

শর্মীমালার পুরো নাম নাহিদা শারমিন।  ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ব্যবসা প্রশাসনের স্নাতক শর্মী শুরুতেই বলেন, “আমি একদমই সাদাসিধে। ভালো লাগে খেতে ভাত-মাছ।”

শর্মী বেড়ে উঠেছেন সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে। সাহিত্যিক হায়াৎ মামুদ তার চাচা। মূলত তার আগ্রহেই গান, নাচ শিখেছেন। স্কুল জীবনে শর্মী নাম কুড়িয়েছেন অ্যাথলেটে। জেলা পর্যায়ের গন্ডি পেরিয়ে জুনিয়র অ্যাথলেটের শিরোপা ঘরে তুলেছেন।

অ্যাথলেট শর্মীর অভিনেত্রী হয়ে উঠার গল্পটি অন্যরকম। শর্মী জানালেন, ইস্ট ওয়েস্টে তো আর খেলার মাঠ নেই। নিজেকে ব্যস্ত রাখতে কালচারাল ক্লাবে যোগ দিলেন। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ অ্যানুয়েল কালচারাল ফাংশন’-এ গান, নাচ ও অভিনয় বিভাগে নিয়মিত পুরস্কার জিতে নেন।

একদিন ক্যাম্পাসের নোটিশ বোর্ডে দেখলেন প্রাচ্যনাটের এক কর্মশালার বিজ্ঞপ্তি। শর্মী প্রাচ্যনাটের ছয় মাসের একটি কোর্সে ভর্তি হয়ে গেলেন। এখানে মঞ্চ নাটকের এ টু জেড শিখলেন হাতেকলমে। এ কর্মশালার অভিজ্ঞতা নিয়ে শর্মী পালাকারে যোগ দেন।

মঞ্চের নিয়মিত কর্মীটির নাটক দেখতে আসেন প্রাচ্যনাটের শাহেদ আলী সুজন। তিনি  আবার ‘মনের মানুষ’ চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক। একটি বিশেষ দৃশ্যের জন্য শর্মীকে নির্বাচন করেন তিনি। তিনিই তাকে নিয়ে গেলেন গৌতম ঘোষের কাছে। প্রথম দর্শনে মুগ্ধ গৌতম ঘোষ তাকে ময়ূর চরিত্রের জন্য নির্বাচন করলেন।

গৌতম ঘোষের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে শর্মী বলেন, “গৌতম ঘোষ যে কোনো চরিত্র এত সুন্দর করে বোঝান! এত সহজ করে বোঝান। আমি তাতেই মুগ্ধ হয়ে ছিলাম অনেকক্ষণ। কলাকুশলী সবার প্রতি ভীষণ যত্নবান তিনি।”

ময়ূর চরিত্রের বিপরীতে অভিনয় করেছেন টালিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তার  সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ পাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। প্রসেনজিৎয়ের দর্শন লাভের ঘটনাটি বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি তখন একেবারেই নতুন। অভিজ্ঞতার ঝুলি একদম শূন্যই বলা যায়। দাদা কিন্তু ব্যাপারটি মনেই করলেন না। পুরো ইউনিট যখন বলাবলি করছে, একে দিয়ে হবে না। তখন দাদা বলেন, এ (শর্মী) পারবে। দাদার সেই কথাটি উৎসাহ আর সাহস দুই বাড়িয়ে দিল। তিনি আমাকে বাবু বলে ডাকতেন। ময়ূর চরিত্রটি ছোট। কটা দিনের শুটিংয়ে ভীষণ আপন করে নিয়েছিলেন দাদা।”

শর্মী জানালেন, এ কয় বছরে তিনি অভিনয় করেছেন সামিয়া জামানের ‘আকাশ কত দূরে’, প্রবাসী নির্মাতা আনোয়ার শাহাদাতের ‘কারিগর’ চলচ্চিত্রে। এই দুই চলচ্চিত্রেই সংগ্রামী নারীর ভূমিকায় দেখা যাবে তাকে। গোলাম সারওয়ার দুদুলের ‘সাতকাহন’, আহমেদ পিয়ালের ‘যোগাযোগ’, নুরুল আলম আতিকের ‘কমলা’, অরণ্য আনোয়ারের ‘বুকে তার চন্দনের ঘ্রাণ’, মাহফুজ আহমেদের ‘ভালো আছি মা’, জাহিদুর রেজা বিপ্লবের ‘ঊনসত্তর পাতলা খান লেন’, মাসুদ মহিউদ্দিনের ‘আগুন পোকা’  ও আশুতোষ সুজনের ‘জিরো পয়েন্ট’ নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি।।  নাট্যদল পালাকারে অভিনয় করেছেন ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ নাটকে আতাউর রহমানের নির্দেশনায়। শিল্পকলা একাডেমিতে ওয়াহিদা মল্লিক জলির নির্দেশনায় ‘গুড নাইট মাদার’ নাটকেও অভিনয় করেছেন শর্মী।

শর্মী জানালেন, ‘পদ্ম’ চরিত্রের প্রস্তুতি মোটেই সহজ ছিল না। বাস্তবে বহির্মুখী শর্মীকে অভিনয় করতে হবে অন্তর্মুখী পদ্ম চরিত্রে। জানালেন সেই কথা, “আপন সত্ত্বা ভুলে ডুবে গিয়েছিলাম পদ্মের মাঝে। বিভিন্ন কুমারপাড়া ঘুরে জানলাম নারীদের কষ্টকাব্য। ঘরে ফিরে সারাদিন ভাবতাম, তাদের জায়গায় থাকলে আমি কী করতাম। মাটির মানুষ মাটি নিয়ে কি সুন্দর খেলছে। ইচ্ছামতন গড়নে ফুটিয়ে তুলছে নানা শিল্পকর্ম। ব্যাপারটা আমাকে খুব ভাবাত। এই ভাবনা থেকেই একদিন পদ্ম হয়ে উঠলাম।”

এ সিনেমায় দেখা যাবে, পিতৃমাতৃহীন পদ্ম থাকে দাদাবাড়িতে। পুরো সংসারটি তার উপর নির্ভরশীল। গায়ের রং কালো বলে তাকে কেউ বিয়ে করতে চায় না। মেয়ে আইবুড়ো হচ্ছে, এমন কানাঘুষা তাকে প্রতিনিয়ত বিদ্ধ করে। পদ্ম ভালোবাসে এমন এক মানুষকে যে নিজেই পরিচয় সঙ্কটে ভুগছে। জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে সংগ্রাম করছে। সামাজিকতার ঘেরাটোপে সে ভালোবাসার মানুষটিকে আপন করে পায় না। শেষ দৃশ্যে বৈশাখ পদ্মকে প্রত্যাখান করে।

সামাজিক প্রেক্ষাপটে পদ্ম চরিত্রটাকে কীভাবে বিশ্লেষণ করেন-- এ প্রশ্নের জবাবে শর্মী বলেন, “আমাদের সমাজে এখনও গুণের চেয়ে রূপের পূজাই বেশি হয়। গায়ের রং কত ভালো তা দিয়েই কনের ভালোমন্দ বিচার হয়। ঘরকন্নার সব কাজ করলেও নানা লাঞ্ছনা-গঞ্জনা সইতে হয়। শহুরে মেয়েদের চেয়ে গ্রামের মেয়েদের জ্বালাটা বেশি। তাদের চাওয়া পাওয়ার গল্পগুলো ঘরের চার দেয়ালে বন্দি। কখনও কেউ তাদের গল্প শুনতে চায় না। শোষণের যাঁতাকলে পিষ্ট হতে থাকে পদ্মরা।”

তখন সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নামছে। গল্পের ইতি টেনে উঠে পড়েন শর্মী। ছয় বছর ধরে দ্বিতীয় বাড়ি হয়ে ওঠা শিল্পকলা টানছে তাকে। রিহার্সাল, নাটক দেখা আর আড্ডা শেষে শর্মী ফিরবেন আপন নীড়ে।

ছবি : নয়ন কুমার