ভারতীয় দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমসের লিডারশিপ সামিটে অংশ নিতে ভারতে এসেছেন ‘টার্মিনেটর’ খ্যাত এই অভিনেতা। সেখানেই এক বক্তব্য প্রদানের সময় তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে রীতিমতো যুদ্ধ চলতো একটা সময়। আমরা একজন আরেকজনকে ঘৃণা করতাম। কার পেশিশক্তি বেশি, কার শরীরে মেদ কম, কে পর্দায় কতজনকে মারলো, কিভাবে মারলো, বক্স-অফিসে কার সিনেমা কত আয় করলো- এসব নিয়ে সারাক্ষণই একে অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় মেতে থাকতাম।”
“এর দশ বছর পরেই, নব্বইয়ের দশকে আমরা বন্ধু বনে গেলাম। এখন আমরা একসঙ্গে সিনেমাও বানাই!”
আশির দশক জুড়ে ‘টার্মিনেটর’ সিরিজ দিয়ে পর্দা মাতিয়েছেন শোয়ার্জনেগার। ওদিকে ‘রকি’ আর ‘র্যাম্বো’ - এই দুই সিরিজ দিয়ে খ্যাতির চূড়ায় পৌঁছান স্ট্যালোন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের একসঙ্গে দেখা গেছে ‘দ্য এক্সপেন্ডেবলস’ সিরিজে।
নিজের ওই বক্তৃতায় ক্যারিয়ারের শুরুতে একের পর এক সংগ্রামের মুখোমুখি হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন শোয়ার্জনেগার। জন্মসূত্রে অস্ট্রিয়ান শোয়ার্জনেগার যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম খ্যাতি পান ১৯৭০ সালের মিস্টার ইউনিভার্সের খেতাব জয় করে। এর আগে এবং পরে অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে তাকে।
শোয়ার্জনেগার বলেন, অস্ট্রিয়ান উচ্চারণের কারণে অনেকেই তাকে সে সময় বলেছিলেন তাকে দিয়ে অভিনয় হবে না। কারণ তিনি, “যন্ত্রের মতো কথা বলেন”।
“ওই সময়ের আবেদনময় তারকারা ছিলেন আল পাচিনো আর উডি অ্যালেন। আর জন ওয়েনের গলা শুনতে লোকে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করতো।”
“যখন ১৯৬৮ সালে আমি যুক্তরাষ্ট্রে এলাম, সেবার মায়ামিতে মিস্টার ইউনিভার্সের আসরে আমি হেরে গিয়েছিলাম। আমার বয়স ছিল মোটে ২১। আমি সেবার সারারাত কেঁদেছিলাম।”
এই ব্যর্থতা অবশ্য দমাতে পারেনি শোয়ার্জনেগারকে। তিনি বলেন, “তবে, আমি ফিরে এসেছিলাম। আমি মনে মনে ঠিক করেছিলাম, আমেরিকার সব বডিবিল্ডারকে আমি হারাবো। আমি এরপর ক্যালিফোর্নিয়ায় চলে গেলাম। আমেরিকানদের সঙ্গেই ওদের কায়দা-কানুন শিখলাম। এক এক করে সবাইকে খেলায় হারিয়েও দিলাম।”
সবশেষে শোয়ার্জনেগার জানান নিজের সাফল্যের মূলমন্ত্রও।
“আমি আমার জীবনে অনেকবার ব্যর্থ হয়েছি। কিন্তু, আপনি তখনই জিতে যাবেন, যখন পড়ে গিয়েও আপনি উঠে দাঁড়াবেন এবং ব্যর্থতাকে ঝাড়া দিয়ে ফেলে দেবেন। আর তাই ব্যর্থতাকে ভয় পাবেন না। সাফল্যের কোনো সহজ রাস্তা খুঁজবেন না। নিন্দুকদের কথায় কান দেবেন না।”