ভ্যানিটি ফেয়ারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেনিফার বলেন, “এটা কোনো কেলেঙ্কারি নয়। এটা যৌন অপরাধ। জঘন্য একটা ব্যাপার। এটা যৌন হয়রানি।”
“আমাদের নিজেদের মধ্যে পরিবর্তন আসা উচিৎ। আইনে পরিবর্তন আসা উচিৎ। আর এ সবকিছুর জন্য দায়ী এই ওয়েবসাইটগুলো।”
কেবল জেনিফার লরেন্স নন, রিহানা, কেইট আপটন, সেলেনা গোমেজের মতো তারকাদের ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি তাদের আইক্লাউড অ্যাকাউন্ট থেকে হ্যাক করে প্রকাশ করে দেওয়া হয় ফোরচ্যান এবং রেডিট-এর মতো ওয়েবসাইটগুলোতে। আর পরে এই ছবিগুলো ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে গুগলের তরফ থেকে জানানো হয়, তারকাদের এরকম দশ হাজারেরও বেশি ছবি তারা তাদের সার্চ অপশন থেকে সরিয়ে ফেলেছে। গুগলের এই ঘোষণা আসে হলিউডভিত্তিক আইনজীবি মার্টি সিঙ্গারের প্রতিষ্ঠানটির বিরূদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দেওয়ার পরপর।
নগ্ন ছবি ফাঁসের ঘটনায় প্রথমবারের মতো আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা এসেছিল জেনিফারের কাছ থেকেই। ওইসময় তিনি নিজে সরাসরি কোনো কথা না বললেও তার মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, শিগগিরই এ ব্যাপারে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
এবার বিষয়টি নিয়ে প্রথমবারের মতো মুখ খুললেন জেনিফার। ভ্যানিটি ফেয়ারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুরো বিষয়টি নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা এবং দৃষ্টিভঙ্গী তুলে ধরেন ‘হাঙ্গার গেইমস’ খ্যাত এই তারকা। তিনি বলেন, তার দেহের দিকে অশালীনভাবে তাকানোর অনুমতি তিনি কাউকে দেননি।
“কাউকে এভাবে যৌন হয়রানি করে তার শরীরের ছবি প্রকাশ করে সেখান থেকে কেউ লাভবান হতে পারে- এই পুরো ধারণাটাই আমি মেনে নিতে পারিনা।”
“আমি ভাবতেও পারিনা, কারো ভেতরে মনুষ্যত্ববোধের এতোটা অভাব থাকতে পারে। এরকম চিন্তা-ভাবনাহীন অন্তসারশূণ্য কোনো মানুষ থাকতে পারে, এটা আমার ধারণাতেও ছিল না।”
তিনি আরও বলেন, “আপনারা যারা ওইসব ছবি দেখেছেন, আপনারা নিজেরাও এক ধরণের যৌন সহিংসতা ঘটিয়েছেন। আপনাদের লজ্জায় কুঁকড়ে যাওয়া উচিৎ।”
ছবি ফাঁসের ঘটনা নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে গিয়ে জেনিফার বলেন, “এমনকী আমার পরিচিত এবং কাছের মানুষেরাও ছবিগুলো দেখেছে এবং বলেছে, ‘ও হ্যাঁ! আমি তো দেখেছি ওগুলো।’ আমি তখন মাথা গরম করতে চাইনি; কিন্তু একই সঙ্গে আমার মনে হয়েছে, আমার নগ্ন শরীরের দিকে তাকানোর অনুমতি তো আমি তোমাকে দিইনি!”
জেনিফার এও বলেন, প্রথমবারের মতো ছবিগুলো দেখে তিনি শিউরে উঠেছিলেন। নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
“আমি খুবই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমার ক্যারিয়ারের ওপর এ ঘটনার কি প্রভাব পড়বে- সেটা নিয়েও চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম আমি।”
“কেবল একজন অভিনেত্রী হওয়ার কারণে আমার সঙ্গে এরকমটি ঘটতে পারে- এটা কখনোই চাইনি আমি।”
“অভিনেত্রী হওয়ার কারণেই যে কেউ আমার নগ্ন শরীর দেখতে পারবে বিষয়টি এমন হওয়া মোটেই উচিৎ না। এখানে আমার নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাপার রয়েছে। এবং যেহেতু এখানে আমার কোনো সম্মতি ছিল না, সেহেতু এটা খুবই জঘন্য একটা ব্যাপার হয়েছে।”
তবে জেনিফারের জন্য পুরো বিষয়টির সবচেয়ে হতাশাজনক দিকটি ছিল এ ব্যাপারে তার বাবাকে জানানো।
“আমি শপথ করে বলছি, 'হাঙ্গার গেইমস' থেকে আমি যত আয় করেছি, ওই পরিমান অর্থ দিয়েও যদি আমাকে তখন বলতো, তোমার বাবাকে কল করে এটা বলো, আমি সেটা করতে পারতাম না।”
“তবে আমার কপাল ভাল ছিল, বাবা তখন গল্ফ খেলছিলেন। তাই তার মেজাজ ছিল বেশ ফুরফুরে।”