এ প্রসঙ্গে গ্লিটজকে তিনি বলেন,“ শাহ্ আবদুল করিম বাউলের গানগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য এবং তার কর্ম আরো বেশি সাধারন মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য মূলত প্রতি বছর এমন উৎসবের আয়োজন করা হয়। এবারের দুই দিন ব্যাপী উৎসবে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত শিল্পী ও অতিথিরা শাহ্ আবদুল করিমের জীবনী ও কর্ম নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সঙ্গীত পরিবেশন করবেন তার অনুসারী বাউলেরা। এছাড়া ঢাকার শিল্পীরাও সেখানে গান পরিবেশন করবেন।”
তিনি বলেন, “আমরা যেসব বাউল শিল্পীদের উৎসবে আমন্ত্রণ করি তারা ছাড়াও অনেক বাউল শিল্পী স্বেচ্ছায় আমন্ত্রণ ছাড়াও এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন। তাই আগে থেকে শিল্পীদের সংখ্যা কখনোই নির্ধারণ করা সম্ভব হয়ে উঠে না। আমাদের উৎসব যেহেতু ভোররাত পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় সেহেতু অনেক শিল্পী গান গাওয়ার সুযোগ যেমনি পায় আবার অনেক ক্ষেত্রে অনেক শিল্পীর ইচ্ছে থাকা সত্বেও গান গাওয়ার সুযোগ পায় না।”
গ্লিটজকে তিনি জানান, “শাহ্ আবদুল করিম বাউলের গানগুলো সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করার পাশাপাশি তাকে নিয়ে অনেক ধরনের পান্ডুলিপি তৈরি হয়েছে। যেগুলো নিয়েও এমন উৎসবে তার ভক্তরা কাজ করে থাকেন।আমার প্রত্যাশা এইবারও তারা সবাই মিলিত হবেন।”
কিন্তু শাহ্ আবদুল করিম কি আদৌ সঠিক সম্মান পাচ্ছেন?
তিনি বলেন, “সঠিক সম্মান তো তিনি (শাহ্ আবদুল করিম) রাষ্ট্রের কাছে চান নি। তিনি সব সময় সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ভালোবাসা চেয়েছেন। তিনি সাধারণ মানুষের ভালোবাসাতে সন্তুষ্ট ছিলেন।”
বাউলসম্রাট শাহ্ আবদুল করিম একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা সহ বেশ কিছু সম্মাননা অর্জন করেছেন। তবে আগামীতে রাষ্ট্র এই বাউল সাধককে আরো বেশি মূল্যায়ণ করবেন বলে প্রত্যাশা করে এই বাউল পুত্র।
গ্লিটজকে জালাল বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যাশা করি আগামী দিনে তিনি আরো অনেক ধরনের পদক অর্জন করবেন। কারন তার সৃষ্টিকর্ম যখন সকল শ্রেণির মানুষের কাছে পৌঁছবে ও সরকারের নজরে আরো ভালো মত আসবে তখন তার আরো অনেক বেশি মূল্যায়ণ হবে। আমরা চাই তার সকল সৃষ্টি খুব ভালোমত সংরক্ষণ করা হোক।”
তবে বাউল সম্রাটের নাকি একটি স্বপ্ন ছিলো। কিন্তু খানিকটা হতাশার সুরে সেই স্বপ্নের কথা গ্লিটজকে শোনালেন জালাল।
তিনি বলেন, “আমাদের বাড়িতে একটি শাহ্ আবদুল করিম সঙ্গীতালয় রয়েছে। তাই তার (শাহ আবদুল করিম) একটাই আশা, শখ কিংবা স্বপ্ন যাই বলি, তিনি এই সঙ্গীতালয়কে সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন তার ভক্তরা ও শিষ্যরা যেন তার গানগুলো সঠিক কথায় ও সুরে গাইতে পারেন। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার শাহ্ আবদুল করিম সঙ্গীতালয়ের স্বপ্ন আজ অবধি বাস্তবায়ন হচ্ছে না।”
ছবি: তানজিল আহমেদ জনি