'আশিকি': এটা কি দেশি সিনেমা? 

প্রেমের ছবি ‘আশিকি' আলোচনায় ছিল নানা কারণে। জাজ মাল্টিমিডিয়ার নতুন নায়িকা নুসরাত ফারিয়া মাযহার অভিষেক এবং যৌথ প্রযোজনার কারণে দর্শকের আগ্রহ ছিল ষোল আনা। তেলেগু চলচ্চিত্র ‘ইশক’- এর বাংলা সংস্করণটিকে আর যাই হোক বাংলাদেশি সিনেমা বলে মনে হয়নি।

জেনিফার ডি প্যারিসবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Oct 2015, 04:54 AM
Updated : 8 Oct 2015, 07:55 AM

গল্পটি মৌলিক না হওয়ার কারণেই হয়তো, অনেকদিন পর জাজ মাল্টিমিডিয়ার ব্যানারে একটি এমন সিনেমা দেখা গেল যার ভেতর গোঁজামিল নেই। বরং গল্পের বয়ানের বেলায় খুঁটিনাটি বিষয়ে যত্নের ছাপ লক্ষ্য করা গেছে, যা অনেকটাই বাস্তবসম্মত করেছে গল্পকে।

‘আশিকি’ সিনেমায় দেখার মতো বিষয় হল ফারিয়ার সঙ্গে টালিগঞ্জের নায়ক অংকুশের রসায়ন। আধুনিক প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্কের সমীকরণকে অনেকটাই তুলে ধরতে পেরেছেন তারা, যা দর্শককে সিনেমার প্রথম ভাগে ধরে রাখবে।

অংকুশের অভিনয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বলে দিয়েছে বাণিজ্যিক ধারার সিনেমায় তার নিয়মিত উপস্থিতির কথা। কিন্তু প্রশংসা করার মতো পারফরম্যান্স দিয়েছেন ফারিয়া। ক্যারিয়ারের প্রথম সিনেমায় এতটা স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয় খুব কমই দেখা যায়। পুরো সিনেমায় নায়িকা হিসেবে তার মধ্যে কোনো জড়তা দেখা যায়নি।

পুরো সিনেমাটি চিত্রায়িত হয়েছে যুক্তরাজ্যে। সিনেমার লোকেশন ছিল মুগ্ধ করার মতোই। কিন্তু ক্লোজআপ শটের আধিক্য কিছুটা বিরক্তির উদ্রেক করে। আবেগপ্রবণ দৃশ্যগুলোতে ক্লোজআপ শটের ব্যবহার মানা যায়। কিন্তু এক পযর্ায়ে তা বাড়াবাড়ি বলে মনে হয়েছে।

‘আশিকি’তে প্রতিটি চরিত্রকে ভারতীয় হিসেবে দেখানো হয়েছে। আর এ কারণেই হয়তো সিনেমায় হিন্দি ভাষার ব্যাপক ব্যবহার ছিল। বাংলাদেশি মেয়ে ফারিয়ার মুখে পশ্চিমবঙ্গের বাংলা উচ্চারণের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ঘন ঘন হিন্দি শব্দের ব্যবহার। কাজেই একে বলিউডি সিনেমা বলে ভ্রম হতেই পারে দর্শকের।

প্রায় তিন ঘণ্টার সিনেমা ‘আশিকি’তে গান রয়েছে পাঁচটি। প্রতিটি গান অত্যন্ত সুন্দরভাবে চিত্রায়িত হয়েছে। ঢাকাই সিনেমা তো বটেই, টালিগঞ্জের চলচ্চিত্রের গানের ইতিহাসেও নতুন মাইলফলক হিসেবে ধরা যেতে পারে ‘আশিকি’র গানগুলোকে। তবে এর মধ্যে শুধু একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন বাংলাদেশের গায়িকা কনা, বাকি চারটিতেই শোনা গেছে ভারতীয় শিল্পীদের কণ্ঠ।

সব মিলিয়ে বলা যায়, পরিচালনা, সঙ্গীত কিংবা বাজেট, সব দিক থেকেই নিজেদের বাজার ধরে রাখার ক্ষমতা প্রমাণ করেছে জাজ মাল্টিমিডিয়া। এবার শুধু অপেক্ষা ভাল গল্পের, যা হবে মৌলিক ও বাস্তবসম্মত।