‘এই তো আমার ছোটবেলার দিম্মা!'

মহানায়িকা সুচিত্রা সেন, অন্তরালে চলে যাওয়ার পর থেকে দীর্ঘ তিন দশক ধরে যাকে নিয়ে আগ্রহের কমতি ছিল না। তারই দুটি ছবি পশ্চিমবঙ্গের দৈনিক আনন্দবাজারের বদৌলতে ভাইরাল হয়ে গেছে অনলাইনে। ছবি দুটি দেখে চমকে গেছেন তার নাতনি, অভিনেত্রী রাইমা সেনও।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 July 2015, 04:35 PM
Updated : 26 July 2015, 04:35 PM

প্রথমে ছবিগুলোকে ভূয়া মনে করলেও পরে রাইমা বুঝতে পারেন, এটি তার দিম্মারই ছবি।

আনন্দবাজারকে তিনি বলেন, “কিছুদিন আগে ফেইসবুকে দেখেছিলাম আমার মায়ের সঙ্গে মহারানী গায়ত্রী দেবীর একটা ছবি ভাইরাল হয়ে গেছে। অনেকে বোকার মতো গায়ত্রী দেবীকে দিম্মা ভেবে বসে। এগুলো দেখি আর ভাবি, এদের কি কোনো কাজ নেই?”

আনন্দবাজারকে তিনি আরও বলেন, “তাই প্রথম যখন হোয়াটসঅ্যাপে ছবিগুলো দেখি, ভাবলাম, এটাও বোধহয় সেরকম ভাইরাল হওয়া ছবি। কিন্তু ভাল করে দেখতেই বুঝলাম, এটায় কোনো ভুল নেই। এটা দিম্মাই। আপনাদের সুচিত্রা সেন। কোথা থেকে আনন্দপ্লাস ছবিটা পেল, অবাক হয়ে যাচ্ছি।”

“এই দিম্মাই তো আমার ছোটবেলার দিম্মা। সত্যি এক ছবিতেই কতো স্মৃতি! দিম্মার এই ছবিটা সেই সময়কার, যখন দিম্মা নিজেকে একেবারে সরিয়ে নিয়েছিল। তাই এই দিম্মাকে সত্যি এত দিন খুব কম মানুষই দেখেছেন।”

স্মৃতি হাতড়ে রাইমা আরও বলেন, “সেই সময় আমরা হ্যারিংটন ম্যানসনসে থাকতাম। আর দিম্মা থাকত বালিগঞ্জে। শুক্রবার বিকেলে স্কুলের ছুটি হলেই আমরা গাড়ি করে সোজা দিম্মার বাড়ি। আমাদের বাকি সব কাজিনও চলে আসত উইকএন্ড কাটাতে। মায়ের ছোট মাসির মেয়েরা, তৃণা, লগ্না— এরাই ছিল আমার আর রিয়ার খেলার সঙ্গী।”

“যে চেয়ারটা দেখছেন ছবিতে, সেই চেয়ারটা ছিল দিম্মার সবচেয়ে প্রিয়। ছোটবেলায় মনে আছে, ওই চেয়ারে চড়ে আমি দিম্মাকে কত খামসেছি, আদর করেছি, চুমু খেয়েছি... এই চেয়ারের মাথার পিছনেও উঠতাম আমরা। আর দিম্মা আমাদের সাবধানে নামিয়ে দিত।

“আজ এত বছর পর এই ছবিটা দেখে তাই বুকের ভিতরটা হুহু করছে।”

১৯৭৮ সালে ‘প্রণয় পাশা’ ছবিতে অভিনয়ের পর সুচিত্রা সেন আকস্মিকভাবেই চলে যান লোকচক্ষুর অন্তরালে।

এরপর প্রথম তিনি আড়াল ছেড়ে বাইরে আসেন মহানায়ক উত্তম কুমারের মৃত্যুর পর। মাঝরাত পর্যন্ত বসে ছিলেন তার মরদেহের পাশে। সুচিত্রা শেষ জনসম্মুখে আসেন ১৯৮৯ সালে, তার গুরু ভরত মহারাজের মৃত্যুর পর।

২০০৫ সালে সুচিত্রাকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হলেও ভারতের রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরষ্কার নিতে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে দিল্লি যেতে রাজি হননি তিনি।